জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপনে নিজের সিদ্ধান্তের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়ে চীন বলেছে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়াস ও ‘কল্যাণকামিতা’ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চীন শুক্রবার আরো দাবি করে যে, পরিষদের ‘বেশির ভাগ সদস্যই’ উপত্যকার পরিস্থিতিতে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এই মন্তব্যের এক দিন আগে ভারত দৃঢ়তার সাথে জানায় যে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপনের বেইজিংয়ের সর্বশেষ প্রয়াসটি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ ১৫ সদস্যবিশিষ্ট সংস্থাটির বেশির ভাগ সদস্যই এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় ইস্যুটি আলোচনার জন্য এটি যথাযথ ফোরাম নয়। পাকিস্তানের সব মওসুমের বন্ধু চীন বুধবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কনসাল্টেশন রুমে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের সময় ‘অন্যান্য বিষয়ের’ আওতায় কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপনের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপনে পাকিস্তানের উদ্যোগ কেন চীন সমর্থন করছে, মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াঙ বলেন, চীনের অবস্থান ধারাবাহিক ও পরিষ্কার। এই ইস্যুটি ইতিহাসের রেখে যাওয়া একটি বিরোধ। এটি জাতিসংঘ সনদ, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে হবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের অনুরোধে নিরাপত্তা পরিষদ ১৫ জানুয়ারি কাশ্মীর ইস্যুটি পর্যালোচনা করে। নিরাপত্তা পরিষদ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং তারা রাজনৈতিক সংলাপ, সংযম প্রদর্শন ও প্রশমনমূলক কাজের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিরসন করার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নয়া দিল্লিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাবিশ কুমার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ঘটনাটি সম্পর্কে বলেন, পরিষদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যই বলেছে যে, এটি এ ধরনের ইস্যুর জন্য যথাযথ ফোরাম নয়। পাকিস্তান ভিত্তিহীন অভিযোগে এই উদ্যোগ নিয়েছে।
ভারতের বিবৃতিতের জবাবে গেং বলেন, ভারতের মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি আমরা জানি। আর আমি যা বলেছি তা চীনের মনোভাব ও অবস্থান। আমি বিশ্বাস করি যে, ভারত তা জানে এবং আমাদের মধ্যে এ নিয়ে যোগাযোগ রয়েছে।
চীন ও ভারতের শীর্ষ নেতারা যখন অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকের মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রয়াস চালাচ্ছে তখন ভারতীয়দের মনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা থাকা সত্তে¡ও চীন কেন জাতিসংঘ নিরপত্তা পরিষদে কাশ্মীর ইস্যুটি উত্থাপন করল, এমন প্রশ্নের জবাবে গেং বলেন, আমরা যেহেতু উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করছি, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করছি। এটা করা হয়েছে কল্যাণকামিতা থেকে। অবশ্য ভারতীয় পক্ষ বিষয়টি অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে তা গ্রহণ করেছে, যা ভুল ব্যাখ্যার সৃষ্টি করবে।
ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা ও একে দ্বিখন্ডিত করার সিদ্ধান্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর চীন এর তীব্র সমালোচনা করেছে। বিশেষ করে লাদাখকে ভারতের কেন্দ্র-নিয়ন্ত্রিত ভূখন্ড করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। চীন লাদাখের বেশ কিছু অংশ দাবি করে আসছে। সূত্র : পিটিআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন