শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রোনালদো না লেভান্দোভস্কি- আলো ছড়াবেন কে? -পর্তুগিজদের সামনে পোলিশ বাধা

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : প্রতিপক্ষের গোলমুখে যারা ত্রাস ছড়ান তাদের মধ্যে বর্তমান সময়ের অন্যতম দুই স্ট্রাইকার হলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও রবার্ট লেভান্দোভস্কি। গেল মৌসুমে একজন আলো ছড়িয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, আরেকজনকে বলা হয় বায়ার্নের গোল মেশিন। দুজনের মধ্যে মিল আছে আরো এক জায়গায়। দুজনেই এবারের আসরে বন্দী নিজেদের ছায়ায়। রোনালদো তবুও এক ম্যাচে জোড়া গোল করে একটি মূল্যবান পয়েন্ট এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু আসরে লেভা গোলমুখই খুঁজে পাচ্ছেন না ৬৪৩ মিনিট ধরে। আজ মুখোমুখি এই দুই মহারথী। শেষ হাসি হাসবে কে? রোনালদোর পর্তুগাল নাকি লেভার পোল্যান্ড?

হিসাবমতে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে আসার কথা ছিল তাদের। কিন্তু তা না হওয়াই সুবিধেই হয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের। গ্রæপ পর্ব থেকে তিন ড্র নিয়ে সেরা তৃতীয় স্থানধারী একটি দল হিসেবে শেষ ষোলোয় সুযোগ পায় তারা। এটাই তাদের ফাইনালের পথ অনেকটা সুগম করেছে। গ্রæপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স-আপ হলে ফাইনালের পথে রোনালোদের সম্ভব্য প্রতিপক্ষ ছিল আসরের অন্যতম ফেভারিট ইতালি, জার্মানি বা ফ্রান্সের মত দল। এক্ষেত্রে তা এড়ানো গেছে! এই পথে তাদের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছিল ক্রোয়েশিয়াকেই। সেই বাধা তারা উতরেছে বেশ কষ্টে। কোয়ার্টার ফাইনালে আজ তাদের প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড।
আজ পোলিশদের হারাতে পারলে সেমিফাইনালে তারা পাবে ওয়েলস বা বেলজিয়ামের মতো দল। এখানে বেলজিয়ামকেই সবচেয়ে বড় বাধা মনে হতে পারে। ফিফা র‌্যাংকিংয়ের দুই নম্বরধারী দলকে হাঙ্গেরির বিপক্ষে বেশ ভয়ঙ্কর রুপেই দেখা গেছে। তবে কোনভাবে এই বাধা পেরুতে পারলেই ফাইনালে পা রাখবে রোনালদোর দল। আর ওয়েলকে নিয়ে আলাদাভাবে বলার কিছুই নেই। আসরের মূল পর্বে প্রথম সুযোগ পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত আসাই তাদের জন্য বিশেষ কিছু। শিরোপা স্বপ্ন তো তাদের জন্যে আরো দূরের বাতিঘর।
ইউক্রেন ও নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় এবং জার্মানির বিপক্ষে ড্র’র মধ্য দিয়ে গ্রæপ পর্ব শেষ করেছিল রবার্ট লেভান্দোভস্কির পোল্যান্ড। শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে পোলিশদের দেখা যায়নি সেই চেনা রুপে। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা জিতেছিল পেনাল্টি ভাগ্যে। ওদিকে পর্তুগালও নিজেদের শেষ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জিতলেও সেদিন তাদেরকে দেখা যায়নি চেনা ভ‚মিকায়। অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচে কোয়ারেজমার শেষ সময়ের গোলে ম্যাচটি তারা জিতেছিল। দুই দলেরই সাম্প্রতিক পারফর্মেন্স ধসের কারণ দলের প্রধান দুই তারকার বোতল-বন্দি দশা। রোনালদো তবুও এক ম্যাচে গা ঝাড়া দিয়েছিলেন, কিন্তু লেভান্দোভস্কিকে এখনো দেখা যায়নি চেনা ভ‚মিকায়। ফ্রান্সের মার্সেইতে আজ যে বোতল ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে পারবে, জয়ের পাল্লা তাদের দিকেই যে ভারি হবে তা জোর দিয়েই বলা যায়।
পর্তুগিজ স্ট্রাইকার ন্যানি অবশ্য মনে করেন দর্শকদের জন্য আজ উপভোগ্য একটা ম্যাচই অপেক্ষা করছে। ম্যাচটি জিতে তারা শেষ চারে জায়গা করে নেবেন বলেও তার বিশ্বাস। সাবেক ম্যানচেস্টার উইনাইটেড স্ট্রাইকার মনে করেন, “আমি মনে করি আমরা ভালোই খেলছি। হাঙ্গেরির বিপক্ষে আমরা অনেক গোল করেছি, কিন্তু সব দিন এমনটি হয় না। আজকের ম্যাচে তাই কেউই ফেভারিট না। আমরা জানি পোল্যান্ড খুব শক্ত প্রতিপক্ষ, তাদের অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। এই কারণে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে।” হাঙ্গেরি ম্যাচে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল পর্তুগাল। সেদিন দলের হয়ে প্রথম গোলটি করেন ২৯ বছর বয়সী ন্যানি।
ওদিকে পোলিশরাও প্রস্তুত পর্তুগিজ বাধা পেরুতে। গোলরক্ষক ভোসসিজের কন্ঠে তাই মিলল স্বতর্কতার সুর, “তাদের রয়েছে রোনালদোর মত খেলোয়াড়, যদিও সে সেরা ফর্মে নেই, তবুও পর্তুগাল শুধুমাত্র রোনালদো নির্ভর নয়। এরপরও যদি আমরা একজনের দিকে নজর দিই, সে হল রেনাতো সানচেস। যদিও সে বদলি হিসেবে খেলে, তবুও সে তার প্রতিভা দিয়ে প্রতিপক্ষকে সমস্যায় ফেলে দেয়।”
২০০৪ সালে ঘরের মাঠে ফাইনালে উঠেছিল পর্তুগাল। কিন্তু শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি। ওটাই আসরে তাদের সর্বোচ্চ অর্জন। এবার তাদের সামনে সুযোগ ফুটবলে দেশের শিরোপা বন্ধাত্ব ঘোঁচানোর। রোনালদোর মত খেলোয়াড় যে দলে তারা তো এমন স্বপ্ন দেখতেই পারে। রোনালদোরও আগেই জানিয়েছেন, খোলোয়াড় হিসেবে দেশের হয়ে শিরোপা জিততে চান তিনি।

মুখোমুখি
ম্যাচ পর্তুগাল পোল্যান্ড ড্র
১০ ৪ ৩ ৩

 বড় কোন আসরে পোল্যান্ড-পর্তুগালের এটি তৃতীয় সাক্ষাত এবং আসরে প্রথম। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ১-০ গোলে জিতেছিল পোল্যান্ড। কিন্তু ২০০২ সালের বিশ্বকাপে পর্তুগিজরা তাদের উড়িয়ে দিয়েছিল ৪-০ গোলে।
 ফার্নান্ডো সান্তোসের অধীনে টানা ১১ ম্যাচ পর্তুগাল অপরাজিত (জয় ৮, ড্র ৩)। শেষ ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ের ১-০ গোলের জয় সহ তাদের আটটি জয়ই একমাত্র গোলের ব্যবধানে।
 ২০১২ সালের ইউরোর নিজেদের প্রথম ম্যাচের ১৭তম মিনিটে গোল করেছিলেন রবার্ট লেভান্দোভস্কি, এরপর ৬৪৩ মিনিট ধরে গোলের দেখা পাননি বায়ার্ন স্ট্রাইকার।
 আসরের মূল পর্বে সর্বোচ্চ ম্যাচ (১৮) খেলার রেকর্ড গড়েছেন রোনালদো।
 শেষ ৫ ম্যাচে পোল্যান্ডের জয় ৩টি, ড্র ২টি। পর্তুগালের জয় ২টি, ৩টি ড্র।
 ২০০৮ সালে প্রতিযোগিতার বাছাইয়ে শেষ বারের মত মুখোমুখী হয়েছিল দুই দল। ঘরের মাঠে ২-২ ড্র করার পর পোলিশদের মাঠে ২-১ গোলে হেরেছিল পর্তুগাল।
 আসরের শেষ আটে সর্বোচ্চ ৬বার খেলার রেকর্ড পর্তুগালের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন