শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর শেয়ারবাজার চাঙ্গা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে একগুচ্ছ ইতিবাচক সিদ্ধান্তেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে সূচকে বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে গতকাল ৭ বছরের মধ্যে মূল্য সূচকের সবচেয়ে বড় উত্থান হয়েছে। এতে একদিনেই ১৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে বাজার মূলধন ফিরে পেয়েছে ডিএসই। আর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে সাড়ে ৫ শতাংশের ওপরে।

দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৩৮২ পয়েন্ট। ৭ বছর আগে ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে নতুন এই সূচক চালু হওয়ার পর এত বড় উত্থান দেখা যায়নি। এর আগে ২০১৫ সালের ১০ মে সূচকটি ১৫৫ পয়েন্ট বেড়েছিল।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ২৩২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯৯৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৮০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৮৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে গতকাল ৪১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত কার্যদিবস থেকে ১৪৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বেশি। গত বৃহস্পতিবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৬৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
গতকাল ডিএসইতে ৩৫৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪৬টির, কমেছে ৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টির।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৭৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ২৭৭ পয়েন্টে। সিএসইতে টাকার অংকে ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল স্কয়ার ফার্মা, সিঙ্গার বাংলাদেশ, লাফার্জ হোলসিম, কেপিসিএল ও এসএসস্টিল। দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো ফার্মা, আইসিবি, স্টাইলক্র্যাফট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ও দেশ গার্মেন্ট। দর হারানোর শীর্ষে ছিল এসএসস্টিল, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, স্টান্ডার্ড সিরামিক, জুট স্পিনার্স ও এল আর গেøাবাল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান।

গত এক বছরে পুঁজিবাজারে বড় ধস ঠেকানোর জন্য নীতি-নির্ধারক মহল, অর্থমন্ত্রণালয় থেকে নানা পদক্ষেপ নিলেও বাজার চাঙ্গা হয়নি। তবে গত ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিএসইসির বৈঠকে পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থাসহ ৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়।
এছাড়া বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে সরকারী ৪ ব্যাংকের বিনিয়োগ এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে প্রথম বাংলাদেশি হিসাবে ইয়াসির আজমানকে নিয়োগ বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আর এসব কারণেই মূল্য সূচক রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ হাফিজ বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপই বাজারে দরের ঊর্ধ্বগতির কারণ। গত কয়েকদিন ধরে পুঁজিবাজার নিয়ে ইতিবাচক খবর আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক পুঁজিবাজার নিয়ে ভালো কথা বলেছে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে পুঁজিবাজার নিয়ে আলোচনার খবর এসেছে। মানুষের আস্থা বেড়েছে। মানুষ মনে করছে, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি দেখছেন, এবার হয়তো বাজার ঠিক হবে। যে কথাগুলো বলা হয়েছে, সেগুলো সত্যি সত্যি করা গেলে বাজার আসলেই ভালো হবে।
একই মত দিয়েছেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী। তিনি বলেন, মূলত দুটি সুখবরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। একটি হচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এবং আরেকটি হচ্ছে সরকারি ব্যাংকগুলো শেয়ার কিনবে। ফলে আস্থাটা ফিরে এসেছে। আর মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যে বিক্রি করে দিচ্ছিল, সেটাও বন্ধ হয়েছে। এজন্য সূচক বেড়েছে।

এ অবস্থায় সতকর্তার সাথে লেনদেনের পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু শেয়ারবাজার পতন কাটিয়ে উঠছে তাই বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে। হুজুগে-গুজবে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। কোনোভাবেই বিনিয়োগকারীদের প্যানিক সেল (হুজুগে বিক্রি) করা যাবে না। আবার গুজবে পড়ে অতিরিক্ত লাভের আশায় দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। বিনিয়োগকারীদের ভালো কোম্পানি বাছাই করে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন