বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পদ্মা সেতুর অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ

ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প মনিটরিং কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের যেকোনো নদীতে সেতু নির্মাণের আগে সেই নদীর চরিত্র সম্পর্কে জানার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নদীতে ব্রিজ বা কোনো কিছু করতে গেলে আমাদের নদীর চরিত্রটা কেমন বর্ষাকালে কী রূপ ধারণ করে, শীতকালে কী রূপ ধারণ করে, এগুলো জেনে নিয়ে করা উচিত।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর মূল নির্মাণকাজ ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং সেতু প্রকল্পের পুরো কাজের ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং কমিটি।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কমিটির পঞ্চম সভায় এ তথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় উপস্থিত ছিলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।

সভায় জানানো হয়, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জাজিরা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ ৯১ শতাংশ, মাওয়া প্রান্তে অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শতভাগ, সার্ভিস এরিয়া ২ শতভাগ, মূল সেতু নির্মাণকাজ ৮৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, নদীশাসনের কাজ ৬৬ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭৬ দশমিক৫০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতির জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক ঝামেলা গেছে আপনারা জানেন। আমরা আনন্দিত অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটারের মতো বোধ হয় হয়ে গেছে।

প্রকল্পগুলোর অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। দেশের যেকোনো নদীতে সেতু নির্মাণের আগে সেই নদীর চরিত্র সম্পর্কে জানার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীতে ব্রিজ বা কোনো কিছু করতে গেলে আমাদের নদীর চরিত্রটা কেমন বর্ষাকালে কী রূপ ধারণ করে, শীতকালে কী রূপ ধারণ করে এগুলো জেনে নিয়ে করা উচিত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই সেতুটা করার সময় নদীশাসন করে আমি কিন্তু নদী ছোট করতে দেইনি। পদ্মা নদীর চরিত্র সম্পর্কে কারও জানা নেই। এই নদীটা অসম্ভব ভাঙন প্রবণ। এখানে বাঁধ দিয়ে ছোট করতে গেলে এই নদী মানবে না। আমাদের ব্রিজটাই বড় করতে হবে। এখানে জায়গাও রাখতে হবে বাফার জোনও থাকবে। যাতে বন্যার পানিটা ধারণ করতে পারে। ফাস্ট ট্র্যাক ভুক্ত ১০টি প্রকল্প ছাড়াও অন্যান্য বড় প্রকল্প মনিটর করতে ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং কমিটি’কে নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কতগুলো বড় বড় প্রজেক্ট আছে। সেগুলোর কয়েকটা আমরা ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমাদের আরও অনেক প্রজেক্ট গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং মনিটরিং করে যাচ্ছি। আমরা সেগুলোতো মনিটর করবই ভবিষ্যতে আমার মনে হয় এই কমিটি থেকে শুধু এই কয়েকটা দেখলে হবে না আরও অনেকগুলো প্রজেক্ট আছে যেগুলো দেখতে হবে।

সভায় ফাস্ট ট্র্যাক ভুক্ত ১০টি প্রকল্পেরই অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হয়। সভায় জানানো হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের প্রি-ইনসপেকশন শেষ হয়েছে। প্রকল্পের ভৌত কাজকে ৩৪৪টি অঙ্গে বিভক্ত করে কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৪৬ দশমিক ৯ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ৪১ দশমিক ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৪০.০২ শতাংশ। ফাস্ট ট্র্যাক ভুক্ত গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্পের প্রারম্ভিক কার্যাবলি ও মালামাল সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে ১০০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া ভ‚মি অধিগ্রহণ ও ভ‚মি হুকুম দখলের কার্যক্রম গড়ে ৯০.৩৩ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং আনোয়ারা ফৌজদারহাট গ্যাসসঞ্চালন প্রকল্পের পাইপলাইন নির্মাণ কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট দুটি প্রকল্পের পাইপলাইন নির্মাণকাজ গড়ে ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৫৮.৮৪ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬২.৫৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ২১.৯৩ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩০.২২ শতাংশ। দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমারের ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৩৩ শতাংশ, আর্থিক অগ্রগতি ২৩.৯৩ শতাংশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন