ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনকে (ইভিএম) ভোট চুরির নীরব অস্ত্র আখ্যা দিয়ে ইভিএমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এটাকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে হবে। তা না হলে দেশে আর কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ভোটাধিকার বঞ্চিতদের মতবিনিময় সভায়’ তিনি এসব কথা বলেন। অন্যান্য বক্তারা অবিলম্বে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণ এবং ভোট চুরির দায়ে দ্রুত নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির এমপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাঃ শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গণি চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতা এমএ আজিজ, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, সাইফুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এসময় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীও তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
সভায় বিএনপির হয়ে ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ছিলেন আনসার আলী। তিনি অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে সেদিন ডিজিটাল ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। কন্ট্রেল রুমে স্বাক্ষর নেয়ার সময়ই আওয়ামী লীগের লোকেরা ওই ভোট দিয়ে দেয়। তাহলে ইভিএমের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভোট আর কিভাবে হবে? আগামী নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু হবে কি না তা চট্টগ্রামের নির্বাচন থেকেই প্রমাণিত হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ইভিএম হচ্ছে ভোট চুরির উৎকৃষ্ট নীরব অস্ত্র। ক্ষমতাসীনরা নির্বাচনী কোনো নীতিমালা মানছে না। যেখানে ভোটের দিন সাংবাদিকেরা মটর সাইকেল চালানোর অনুমতি পায়না। সেখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হেলমেট ছাড়াই ২ থেকে তিন জন একসাথে ঘুরে বেরিয়েছে। কোথাও হতে বাসভর্তি করে লোকজন নিয়ে আসা হয় সেদিন। ভোটকেন্দ্রে মিছিল করে ও কেন্দ্র ও বুথ দখল করেছে তারা। যেই বুথে ভোট হয়েছে সেখানে ভোটারদেরকে বের করে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, আসলে ইভিএমের মতো ভোটচুরির মতো যন্ত্র আওয়ামী লীগের কাছে আর নাই। প্রকৃতপক্ষে ভোট চুরি ও চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য একটি প্রক্রিয়া সরকার বের করেছে। সেটা হলো ইভিএম। যেখানে বুথ দখল করে ভোট চুরি হয়। সেখানে ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা কোথায়? চট্টগ্রামে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেয়া হয়নি। কোনো কোনো ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেও ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। মৃত ও প্রবাসী ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ আওয়ামী লীগের লোকেরা কোথায় পাইলো? সেখানে সরকারের কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা আছে।
আমীর খসরু বলেন, এবারের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কিছুটা ভিন্নতা ছিল। তবে ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনের দিন। এবার ঢাকাতেও দেখছি বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী রাস্তায় নেমেছে। আওয়ামী লীগের কোথাও দৃশ্যমান কোনো প্রচারণা নাই। নির্বাচনের সকল কার্যক্রম ভোটের আগেরদিন পর্যন্ত সুন্দর ছিলো। কিন্তু তাদের কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়েছে ভোটের দিন তাদের কেন্দ্র দখল, বুথ ও ইভিএম দখলের মাধ্যমে। ইভিএমের মাধ্যমে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা পাচ্ছেন না। জনগণকে চিরতরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করতে ইভিএমের ব্যবহার করছে সরকার। এই ইভিএমের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সেটাকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে হবে। এটা ছাড়া দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন আগামীতে হবে না। কারণ চট্টগ্রাম-৮ আসনে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন