ধামরাই (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা
ঢাকার ধামরাইয়ে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও বেকারিতে অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বাংলাদেশ ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের চারজন কর্মকর্তা ও তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোসহ একজন চালককে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশ। পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানায়, গত বুধবার সন্ধ্যার আগে ধামরাই বাজারের লাকী হোটেল এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, তিতাস বেকারি ও ঢুলিভিটার মক্কা-মদিনা হোটেলে গিয়ে ‘বাংলাদেশ ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’ এর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হোটেলের খাবার মানসম্মত নয় ও মূল্য তালিকা টানানো হয়নি, নোংরা পরিবেশে রান্নার করার অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করার পায়তারা করে এবং তাদের ফরমে স্বাক্ষর নেয়। এ সময় তারা হোটেলের মালিকদের ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। এক পর্যায়ে টাকা দাবি করে। এ সময় লাকী হোটেল এন্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক তারক ঘোষের নিকট ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ১১ হাজার টাকা দিয়ে কোনমতে তাদের হাত থেকে রেহাই পান। একই অভিযোগে মক্কা-মদিনা হোটেল থেকে ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এ সময় সাথে থাকা পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের কৌশলে থানায় নিয়ে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলোÑ গোপালগঞ্জের মোকছেদপুর উপজেলার পূর্ব নওখন্ডা গ্রামের মৃত আবদুল বারেকের ছেলে আবদুর রশিদ তিনি নিজেকে পরিদর্শক পরিচয় দেন), তার ছেলে সহকারী পরিদর্শক মনির হোসেন (৩৫), একই উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মোঃ হারুনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (২৬) (তিনিও সহকারী পরিদর্শক পরিচয় দেন)। গোপালগঞ্জ সদর থানার নীলক্ষিè গ্রামের হেমায়েত উদ্দিনের ছেলে সহকারী পরিদর্শক পরিচয়দানকারী মাহমুদুল হাসান (৩৬) ও গাড়ি চালক মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার নাগরদী গ্রামের অছির শেখের ছেলে ঠান্ডু শেখ (২৭)। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে ঝর্ণা কনফেকশনারী, ভাই ভাই হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ও আমিন বাজারের আশা হোটেলে অভিযান পরিচালনার কাগজপত্র। এছাড়াও ২৫ জুন বগুড়া শেরপুরের ঘোষপাড়ার রূপালী চিড়ার মিল, ২৬ জুন গাইবান্দার পলাশবাড়ীর প্রফেসর পাড়ার নিপা বেকারি ও ২৭ জুন নীলফামারীর সৈয়দপুরের আদিখানায় শবনম বেকারিতে অভিযান পরিচালনার কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। আটক আবদুর রশিদ জানায়, তারা প্রতারক নন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়েই তারা বিভিন্ন হোটেল বা বেকারিতে অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। তবে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়ে অন্যায় হয়েছে বলে স্বীকার করেন। পুলিশ জানায়, আজ বুধবার একটি দামি মাইক্রোবাসে নিয়ে থানায় আসে কয়েকজন ব্যক্তি। তারা বাংলাদেশ ক্রেতা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ফাইন্ডেশনের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ‘ভোক্তা অধিকার আইনের সঠিক বাস্তবায়নকল্পে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক অনুষ্ঠান ‘ভোক্তা অধিকার’ তৈরির লক্ষ্যে প্রাপ্ত তথ্যের চিত্র সংগ্রহে পরিদর্শক ও কলাকুশলীদের নিরাপত্তায় পুলিশ ফোর্স প্রদানের’ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাগজপত্র দেখায়। তাদের কথা ও কাগজপত্রানুসারে সাথে পুলিশ পাঠানো হয়। প্রতারক চক্রের সঙ্গে থাকা এস আই দিপঙ্কর রায় বলেন, টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর তারা ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতির সময় আমাকে ৭ হাজার টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতেই সন্দেহের দানা বাধে। এ বিষয়ে ধামরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দীকপ চন্দ্র সাহা বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন