শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল পেতে আরও প্রস্তুতি প্রয়োজন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৫৬ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল পেতে আরও প্রস্তুতি দরকার। বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে আরও নজর দেওয়া প্রয়োজন। সাধারণ শিক্ষার পরিবর্তে ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষার দিকে তরুণকে আকৃষ্ট করা, যুগের চাহিদার সঙ্গে মিলিয়ে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা ইত্যাদি বেশ জরুরি।

বৃহষ্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এই বক্তৃতার আয়োজন করে। রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল। এতে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইআরএফের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া কাজল, সাবেক সভাপতি সুলতান মাহমুদ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বক্তব্য রাখেন। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

উল্লেখ, মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন দেশের প্রথম বিজনেস নিউজপেপার ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক। তিনি ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রথম সভাপতি। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

অনুষ্ঠানে ড. মসিউর রহমান বলেন, বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড শব্দযুগল বেশ আলোচিত বিষয়। যে কোনো প্রসঙ্গে এটি তুলে আনেন অনেকে। কিন্তু ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতির কিছু ঘাটতি আছে বলেই মনে হয়। এখানে চাহিদার আলোকে শিক্ষা দেওয়া হয় না। আমাদের মূলত মিড লেভেল ও জুনিয়র লেভেলে কাজের উপযোগী লোক বেশি প্রয়োজন। আর এই জনবল তৈরি হতে পারে ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষায়। কিন্তু এখানে সবাই সন্তানকে গ্রাজুয়েট করতে চান। সবাই বিবিএ পড়তে চায়। কিন্তু কোনো বিষয়ের গভীরে যেতে চায় না কেউ।

তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু বিবিএ পড়–য়া ছাত্রের ছড়াছড়ি। কিন্তু সেই তুলনায় এমবিএ পড়–য়ার সংখ্যা নগন্য। আবার যারা পড়েন, তাদের মধ্যে ইভিনিং এমবিএ, এক্সিকিউটিভ এমবিএ পড়ার দিকেই ঝোঁক বেশি। রেগুলার এমবিএ’র শিক্ষার্থী সে তুলনায় অনেক কম। ড. মসিউর রহমান দেশের অর্থনীতির কিছু প্রবণতা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীরা শিল্পের জন্য সবসময় প্রোটেকশন চান। তারা নানা ধরণের প্রণোদনা দাবি করেন। এর কিছু যৌক্তিকতা হয়তো আছে, কিন্তু বেশিরভাগই সেভাবে যৌক্তিক নয়। নতুন কোনো শিল্প খাত হলে তার জন্য কিছুটা প্রটেকশন দরকার। কারণ শুরুতেই বিদেশী পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পারবে না। কিন্তু প্রটেকশন দেওয়ার পরও যদি দক্ষতা অর্জিত না হয়, তাদের উৎপাদিত পণ্য যদি বছরের পর বছর বিদেশী পণ্যের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হয় তাহলে ভোক্তা ও দেশের মানুষের জন্য তা কষ্টকর।

ড. মসিউর রহমান বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির নানা পরিবর্তন ও সমস্যা এলেই আমাদের উদ্যোক্তারা প্রণোদনা দাবি করেন। কিন্তু ৪০ বছর পরও যদি তারা সামান্য শক সামলাতে না পারে তাহলে কোনদিনই তারা ব্যবসা ধরে রাখার মত সক্ষম হবে না।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, আমাদেরকে বিনিয়োগের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ বিনিয়োগ বাড়লে উৎপাদন বাড়ে, সেই সঙ্গে সরকারের রাজস্বও বাড়ে। এছাড়া রফতানি বৃদ্ধির কারণে বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসে। তাতে রেমিট্যান্সের উপর নির্ভরতা একটু কমে।

তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সেটি আমাদের এখতিয়ারে থাকে না, অন্য দেশের নিয়ন্ত্রণে থাকে। তেলের দামের উঠা-নামা, ইরান ও অন্যান্য ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা রেমিট্যান্সের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন