মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ঢাকা-চট্টগ্রামের কাঁচাবাজার নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

বেড়ে চলছে নিত্যপণ্যের দাম। সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক মাস আগের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে বর্তমানে এক কেজি সরু চালের দাম দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকা। মোটা চালের দামও মাসের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। বর্তমানে প্রতিকেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৩-৩৫ টাকায়।

চালের পাশাপাশি আটা, তেল, ডাল, চিনিসহ সব ধরনের নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে। মাসের ব্যবধানে আটার দাম কেজিতে ১৩ শতাংশ বেড়ে ২৬-৪৫ টাকায় উঠেছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা। পাম অয়েলের দাম ১৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে ৮৫-৯০ টাকা। মসুর ডালের দাম প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-১৩০ টাকায়। এক কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৬ টাকা।

এদিকে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম এখনো ভোগাচ্ছে দেশবাসীকে। রাজধানীর বাজারগুলোতে ১০০ টাকার নিচে মিলছে না দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি। আমদানি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। টিসিবির হিসাবে, বছরের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ৩১১ শতাংশ এবং আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২১১ শতাংশ বেড়েছে। রসুনের দাম বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৮৭ শতাংশ। বর্তমানে আমদানি করা রসুন কেজি ১৩০-১৫০ টাকা এবং দেশি রসুন ১৪০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এক মাস ধরেই রসুনের এমন চড়া দাম।

শুকনো মরিচের দাম মাসের ব্যবধানে ১৪ শতাংশ এবং বছরের ব্যবধানে সাড়ে ৪২ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০-৩৫০ টাকা কেজি। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৫০ টাকা। বছরের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ। জিরার দাম বছরের ব্যবধানে ৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৩৫-৪৫০ টাকা কেজি। দারুচিনির দাম ৩৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪২০-৪৫০ টাকা কেজি। আর এলাচের দাম বছরের ব্যবধানে দ্বিগুণ বেড়ে ৫ হাজার টাকা কেজি হয়েছে।

কাঁচাবাজারে স্বস্তি নেই সবজির দামেও। শিম, টমেটো, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগমসহ শীতের সবজি বাজারে ভরপুর থাকলেও বেশিরভাগ সবজির দাম এখনো বেশ চড়া। শসা ৪০-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৬০ টাকা, করলা ৫০-৭০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৪০-৬০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, মুলা ২০-২৫ টাকা, নতুন গোল আলু ২৫-৩০ টাকা, শালগম ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি ও বাধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা প্রতি পিস।

দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। দুই সন্তানের জনক রিকশাচালক মিরাজ। পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রিকশা চালিয়ে দিনে তার আয় হয় ৬০০-৭০০ টাকা। এ টাকা দিয়েই মেটাতে হয় পরিবারের চার সদস্যের ভরণ-পোষণসহ অন্যান্য খরচ
তিনি বলেন, গোশতের কথা বাদ দিন। ঠিকমত সবজিও কিনে খাওয়ার উপায় নেই। এই শীতের মধ্যেও সব সবজির দাম চড়া। একটি ফুলকপি কিনতে ৩০ টাকার ওপরে লাগে। টমেটোর কেজি ৫০ টাকার ওপরে। পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা। এতো দামে পছন্দ মতো সবজি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

এক গার্মেন্টসকর্মী বলেন, মাসে যে বেতন পাই, তা দিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। বেশিরভাগ দিন দুপুরে কিছু খাই না। মাঝে মধ্যে বেশি ক্ষিধে লাগলে সিঙ্গারা অথব বিস্কুট খেয়ে কাটিয়ে দেই। আমরা যে কী কষ্টে আছি তা বলে বোঝাতে পারবো না ভাই। আলু, ভর্তা-ডিম ভাজি দিয়ে পেট ভরে ভাত খাব তারও উপায় নেই। এক কেজি চাল কিনতে লাগে ৪০ টাকা। একটি ডিমের দাম ৯ টাকা। আলুর কেজি ৩০ টাকা। এবার কী অবস্থা, তা একটু চিন্তা করেই বুঝে নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন