বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে গত দুইদিনে অন্তত পাঁচজন বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে। নির্বিচারে বাংলাদেশি হত্যা করায় প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। এ ঘটনায় তারা বাংলাদেশ সরকারের নীরবতার কঠোর সমালোচনা করে নানা মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে উত্তরাঞ্চলীয় নওগাঁর পোরশা উপজেলার দুয়ারপাল সীমান্তে গোলাগুলিতে ওই তিনজন নিহত হয়। এর আগের দিন বুধবার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে বিএসএফ'এর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয় বলে জানায় বাংলাদেশে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘খুব গর্ব করেই বলতে চাই, আর মাত্র এক বছর পর স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো। কিন্তু সেই সুবর্ণ জয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতাটা যে কোথায়- এই দুটো নিউজ বিচার করলে খুব সহজে বোঝা যায়। একজন নাগরিক নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দুর্বল নেপালের কাছে যখন দুঃখ প্রকাশ করা হয়, আর শত শত নাগরিক নিহত হওয়ার পরও আমরা ‘বিরল বন্ধুত্বের’ বালিয়াড়িতে মুখ গুঁজে স্বাধীনতার সুখ খুঁজে পাই! অবশ্য পাবো নাই বা কেন, খোদ আমাদের শাসকদের দৃষ্টিতে- এরা অপরাধী, চোরাকারবারী। এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে সাড়ম্বরে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেটুকু পড়াশোনা করেছি তাতে এমন বাংলাদেশ তিনি চেয়েছিলেন, মনে হয়নি কখনো।’’
জিদো খান লিখেছেন, ‘‘যেভাবে হত্যা শুরু করছে, বিজিবি নীরবতা পালন করছে, তাতে মনে হয় এই দেশের জনগনের পয়সায় এদের বেতন দেওয়ার দরকার নাই। দেশ প্রেমের কথা যারা বলে তারা নিরবতা পালন করছে।’’
‘‘ভারত কখনোই বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়। ভারত সবসময়ই বাংলাদেশের শত্রু। সেই ১৯৪৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে। মুখে বন্ধুত্ব কিন্তু অন্তরে বিষ। বন্ধুত্বের মুখোশের আড়ালে এক ভয়ংকর বিষাক্ত সাপ। সুযোগ পেলেই ছোবল দেয়’’ মন্তব্য চেনসিলা খান।
মোহাম্মেদ রাসেল লিখেছেন, ‘‘সরকারের নীরবতা তো এটাই প্রমাণ করে যে, ৫ জন কেনো যদি ৫ লক্ষও গুলি করে মেরে ফেলে আমাদের সরকারের কিছুই আসে যায় না।’’
নাজমুল হাসান লিখেছেন, ‘‘শক্তের ভক্ত নরমের যম! তার নাম হচ্ছে বিএসএফ। পাকিস্তান সীমান্তে একটা পাখি মারতে পারে না, বাংলাদেশের নিরীহ মানুষকে মারে পাখির মতো, লজ্জা হওয়া উচিত এদের।’’
‘‘আজ পর্যন্ত চীন সীমান্ত এবং পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে নিরীহ মানুষ গুলি করে মারার মতো সাহস পায়নি ভারত কিন্তু প্রতিদিনই মরছে বাঙালি অথচ এই নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই’’ আক্ষেপের সাথে লিখেছেন মো. মানিক।
শেখ মো. নাসের লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এনআরসি নিয়ে মন্তব্য করার কারণেই ভারত সীমান্ত হত্যা শুরু করেছে বলে মনে হয় যাতে বাংলাদেশে চাপে থাকে।’’
মো. খলিল জানতে চেয়েছেন, ‘‘কত জন হত্যা হলে সরকারের টনক নড়বে আমরা জানতে চাই। বর্তমান সরকার কি বাংলাদেশ না অন্য কোন দেশের ইশারায় চলে??’’
সুজনের মন্তব্য, ‘‘এর প্রতিবাদ করার মতো বাংলাদেশ একটা রাজনৈতিক দলও কি নাই। আমার মনে হয় প্রতিটি মানুষ কে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করার দরকার।’’
‘‘ভারত ইচ্ছেমতো ভারতীয় মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে, আর বাংলাদেশের কেউ ভারতে ঢুকতে গেলে গুলি করে মারছে। কি আজিব বন্ধুত্ব’’ লিখেছেন মনিরুজ্জামান মনির।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন