বল হাতে মোহাম্মদ হাসনাইন, শাহীন শাহ আফ্রিদির দৃঢ়তার পর ব্যাট হাতে বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজের অর্ধশতকে বাংলাদেশকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের দেওয়া ১৩৭ রানের জয়ের লক্ষ্য ২০ বল হাতে রেখেই টপকে যায় স্বাগতিকরা। এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করল র্যাংকিংয়ের শীর্ষধারীরা।
প্রথমটিতে কিছুটা লড়াই করলেও এদিন যেন কোনে রকম প্রতিরোধের সুযোগই পাকিস্তান দেয়নি বাংলাদেশকে। গতকাল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে প্রথমে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তামিম ইকবালের ৬৫ রানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ২০ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান।
সিরিজ বাঁচাতে এদিন একাদশে এক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ মিঠুনের পরিবর্তে মেহেদি হাসানকে দলে অন্তর্ভ‚ক্ত করা হয়েছে এই ম্যাচে। অন্যদিকে আগের ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন ধরে রেখেই মাঠে নামে স্বাগতিক পাকিস্তান। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ফিরে যান কোনো রান করার আগেই। দলীয় ৫ রানেই দ্বিতীয় ওভারের ২য় বলে শাহীন শাহ্ আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছেন ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেন এই ওপেনার। এরপর উইকেটে আসেন মেহেদি হাসান। সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে দারুণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে জাতীয় দলে ডাক পান এই ক্রিকেটার। একটি ছক্কা হাঁকিয়ে আভাস দিয়েছিলেন ভালো কিছুর। তবে হাসনাইনের এক বাউন্সারে সেই রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৯ রানে।
দলীয় ৪১ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে পথ দেখান অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল, তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন আফিফ হোসেন। তামিমের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ২১ রানে সেই হাসনাইনের বাউন্সারে বড় শট খেলতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন হারিস রউফের হাতে। অন্যরা উইকেটে আসা যাওয়ার মিছিলে থাকলেও ৪৪ বলে নিজের অর্ধশতক তুলে নিয়ে দলকে সম্মানজনক সংগ্রহের পথে রাখেন। ব্যক্তিগত ৫৩ বলে ৬৫ করে রান ফেরেন তামিম। সিরিজের প্রথম ম্যাচেও রান আউটে কাটা পড়েছিলেন তামিম। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তোলে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন মোহাম্মদ হাসনাইন। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন শাদাব খান, শাহিন শাহ্ আফ্রিদি এবং হ্যারিস রউফ।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই শফিউল ইসলামের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়েন ফেরেন আহসান আলী। দলীয় ৬ রানে আউট হওয়ার আগে রানের খাতা শ‚ন্য রয়ে যায় এই ওপেনারের। তবে এরপরেই অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজকে সঙ্গী করে ঘুরে দাঁড়ায় পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম এবং মোহাম্মদ হাফিজ উভয়ই তুলে নেন অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত এই দুই সেনানীর কাঁধে ভর করেই সহজ জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে পাকিস্তান। দুজনেই খেলেছেন মারমুখী ভঙ্গিমায়। বাবর অপরাজিত থাকেন ৪৪ বলে ৭টি চার ও একমাত্র ছক্কায় ৬৬ রানে। আর ৪৯ বল খেলা হাফিজের ৬৭ রানের ইনিংসটি ৯টি চার ও একটি ছক্কায় রাঙানো। ব্যাট হাতে দলকে নেতৃত্ব দেয়া বাবরের হাতে ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি ৫ উইকেটে জিতে আগেই এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। একই ভেন্যুতে আগামীকাল আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচে মুখোমুখি হবে দু’দল। এদিন রাতেই দেশের বিমানে চাপার কথা রয়েছে মাহমুদউল্লাহ-তামিমদের। বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইট (চার্টার্ড) ‘মেঘদূত’ এখান থেকে বিনা যাত্রিতে গিয়ে নিয়ে আসবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন