বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাত পোহালেই কুবিতে সমার্বতন

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:২৬ পিএম

সকালের সিন্ধ আলো প্রখর হওয়ার আগ মুহুর্তে ঘড়ির কাটায় তখন ১০ টায় এসে থেমে যাবে জীবনের পুরনো দিনে পাতায় নানান স্মৃতি পাখা মেলবে মনের দোয়ারে। এক পলকে হারিয়ে যাবে বিশ^বিদ্যালয় জীবনের কাটানো হাজারো স্মৃতিময় সময় গুলোতে চোখে পরবে নিজেদের রেখে যাওয়া পুরোনো সেই ক্যাম্পস। মুহূর্তের মধ্যে কালো গাউন, ক্যাপ, টাই পরা গ্র্যাজুয়েট আর ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক শব্দে ভরে উঠবে গোটা ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকবে সবাই। একক, দ্বৈত,গ্রুপসহ বিভিন্ন ধরনের ও ভঙ্গিতে ছবি তোলা শুরু করবেন তারা। যেন দেখে মনে হবে ছবি তোলার প্রতিযোগিতা চলছে। এ দৃশ্য দেখে আর উপভোগ করার অপেক্ষায় লালমাই পাহাড়ের সবুজের বুকে গড়ে উঠা দেশের মধ্য-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ লালমাটির ক্যাম্পাস নামে খ্যাত কুমিল্ল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের। ১৪ বছর পর লালিত স¦প্ন পূরণ হতে যাচ্ছে আগামী ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমার্বতন । সমাবর্তনে উপলক্ষে অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদের পদভারে মুখর হয়ে উঠবে গোটা ক্যাম্পাস। যেখানে অংশ নিতে যাচ্ছে ২ হাজার ৮৮৭ জন গ্র্যাজুয়েট।
সমাবর্তন নিয়ে অনূভূতির প্রকাশ করে একাধিক গ্র্যাজুয়েট বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোর কথা খুবই মনে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে যা শিখেছি তা অন্য কোথাও থেকে শেখা যাবে না। সার্টিফিকেট নিতে আবারও ক্যাম্পাসে ফিরব সে অনুভূতি ব্যক্ত করার মত নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির হাত থেকে মেধার স্বাক্ষর রাখার জন্য সনদপত্র গ্রহণ করা জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় সময়। এমন সময় সারাজীবনে একবারই আসে। আর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিকট সেই মাহেন্দ্রক্ষণটি ২৭ জানুয়ারি। কারণ ওই দিনটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম সমাবর্তনের দিন। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সমাবর্তনের সব প্রস্তুতির কাজ চলছে দিনভর। সমাবর্তন এলাকা, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, হলসমূহ, রাস্তাসহ প্রবেশদ্বারে আগে থেকেই আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে। বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাস সাজবে নতুন সাজে পরিনত হবে নবীন-প্রবীণের মিলনমেলায় ।
বন্ধ হবেনা বিশ^বিদ্যালয় ও আবাসিক হল: প্রথম সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধ থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. আবু তাহের।
অতিথিবৃন্দ: কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সমাবর্তন বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত থাকবেন বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কজী শহীদুল্লাহ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চেীধুরী এমপি সহ প্রমুখ।
নিয়মাবলী: গ্র্যাজুয়েটেরা সমাবর্তনরে গাউন (ফেরতযোগ্য) ও কস্টিউম গ্রহন করতে পারবেন ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি। এছাড়া বিভাগ থেকে ২৬ তারিখও গাউন গ্রহন করা যাবে। গাউন ফেরত ও মূল সনদপত্র গ্রহন করা যাবে ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি। গ্র্যাজুয়েটদেরকে নিমন্ত্রণপত্র ও জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসর্পোট সঙ্গে আনতে হবে। মোবাইলফোন, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, হাত-ব্যাগ, ক্যামরা, পানির বোতল সঙ্গে করে আনতে পারবে না।
সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের জন্য যা যা থাকছে: গাউন (ফেরতযোগ্য), একটি সমাবর্তন ব্যাগ, নিমন্ত্রন পত্র, কোর্ট পিন, ক্রেস্ট, টাই/পার্স, স্যুভিনিয়র, ক্যাপ, সার্টিফিকেট ফোল্ডার ও দুপুরের খাবার ইত্যাদি
অনুষ্ঠানসূচি: সমাবর্তনে নিমন্ত্রিত গ্র্যাজুয়েটদের ১২:৩০-২:০০ ঘটিকার মধ্যে আসন গ্রহন করতে হবে। পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দের আসন গ্রহন, সমাবর্তন শোভাযাত্রা, মহামান্য রাষ্ট্রপতির আগমন ও জাতীয় সংগীত, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ সমূহ থেকে পাঠ, সমাবর্তনের অনুষ্ঠান উদ্ভোধন, বিশ^বিদ্যালয় ভিসির স্বাগত বক্তব্য, মাননীয় চ্যান্সেলর কর্তৃক ডিগ্রি প্রদান, স্বর্নপদক প্রদান, অতিথির বক্তব্য, সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য, ক্রেস্ট বিনিময়, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় চ্যান্সেলরের ভাষণ, সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা, জাতীয় সংগীত এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় চ্যান্সেলরের সমাবর্তন স্থল ত্যাগের মধ্যে দিয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষ হবে। এছাড়া সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জয়প্রিয় বাউল শিল্পী জেমস, সংগীত ব্র্যান্ডদল এনকোরসহ প্রমুখ।
সমাবর্তনে সবার সহযোগিতা কামনা করে গ্র্যাজুয়েটদের আহ্বায়ন জানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়েরর অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ’ ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি ফ্যাক্টরির মতো। সে প্রোডাক্ট সপ্লাই করবে। এখানে প্রোডাক্ট হলো শিক্ষার্থীরা। তাদের শিক্ষার গুণগত মান যত ভালো হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ডিং ঠিক ততটাই উজ্জ্বল হবে। তাই গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা যেন তাদের কর্মক্ষেত্রে তাদের এই ফ্যাক্টরিকে ব্র্যান্ডিং করতে পারে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন