বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

এবার ইউরোপে করোনাভাইরাসের হামলা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:৩৮ পিএম

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাস আক্রান্ত তিনজনকে শনাক্ত করেছে ফ্রান্স। রোগীর সন্ধান মিলেছে অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও নেপালে।

যত দিন যাচ্ছে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার ফ্রান্স তিনজনকে শনাক্ত করেছে যাদের শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনিয়েস বুজাঁ। তাদেরকে আলাদা করে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তি তাদের একজনের আত্মীয়।

ভাইরাস সংক্রমিত হওয়া আরো রোগীর সন্ধান মিলতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন বুজাঁ। ‘যেহেতু রোগীরা ফ্রান্সে আসার পর অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন, আমরা তাদেরও খোঁজ নিচ্ছি,’ জানিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি চীনের উহান প্রদেশে প্রথম রহস্যময় এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলে। সেখানকার বন্যপ্রাণী কেনাবেচার একটি বাজার থেকে রোগটি ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর জীবাণু মানুষের একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।

এ পর্যন্ত এক ডজনের বেশি দেশ তাদের নাগরিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুক্রবার নেপালে প্রথম একজন রোগীর সন্ধান মিলেছে। শনিবার অস্ট্রেলিয়া এই জীবাণু আক্রান্ত চারজনের খবর নিশ্চিত করেছে। ভিক্টোরিয়া রাজ্যে সেসব রোগীকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে আরো রোগীর সন্ধান মিলতে পারে বলে শংকা তাদের। মালয়েশিয়া জানিয়েছে, উহান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা চীনের তিন আক্রান্ত রোগীকে তারা চিহ্নিত করেছে। তাদেরকে দেশটির সরকারি হাসপাতালের একটি আলাদা কক্ষে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১৩০০ এর বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে নববর্ষ উপলক্ষ্যে শুক্রবার থেকে সপ্তাহব্যাপী ছুটি শুরু হয়েছে চীনে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এই উৎসবই এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাইরাসের কারণে চীনের উহান শহরে জনজীবন প্রায় থমকে গেছে। সেখানে ৪৫০ জন সামরিক চিকিৎসক পাঠানোর সংবাদ দিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া। তবে এরিমধ্যে উহান থেকে এই জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে অন্য শহরগুলোতে। সব মিলিয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত অন্তত ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ১৮ টি শহরের সাড়ে পাঁচকোটি বাসিন্দাকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। সারাদেশে বিমানবন্দর, রেল ও বাস স্টেশনগুলোতে বসানো হচ্ছে স্ক্যানিং যন্ত্র। এদিকে হংকং চীনের সাথে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাশ টেনেছে। সেখানে এখন পর্যন্ত পাঁচজন রোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও বৈশ্বিক পরিস্থিতি এখনও মহামারির আকার ধারণ করেনি বলে জানিয়েছে। করোনাভাইরাসের তথ্য প্রদানে স্বচ্ছতা অবলম্বন করায় দেশটিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক টেডরস আঢানম। এই বিষয়ে চীনের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সার্চ ভাইরাসের সময়কার তুলনায় চীন করোনার ক্ষেত্রে অনেক বেশি স্বচ্ছতা দেখাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস স্পানও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের আক্রান্তরা প্রাথমিকভাবে হাঁপানি সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারেন। গুরুতর পরিস্থিতিতে নিউমোনিয়া, ভয়াবহ শ্বাসজনিত সমস্যা, কিডনি অকার্যকর এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।

এই ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে নিয়মিত হাত ধোয়া, কাশি ও হাঁচি দেয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখা এবং মাংস ও ডিম ভাল করে রান্নার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। পাশাপাশি সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন শ্বাসজনিত সমস্যায় কেউ ভুগলে তার সংস্পর্শ থেকেও দূরে থাকতে হবে। সূত্র: এএফপি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন