বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লালপুরে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি! লাভের আশায় তামাক চাষ

মো. আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

নাটোরের লালপুরে অধিক লাভের আশায় কৃষকরা তামাক চাষ করেছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে ও তামাকের বিষক্রিয়ায় পরিবেশে বিরূপ প্রভাবসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে লালপুরবাসী। অধিক টাকা খরচ করে ধানসহ সমকালীন ফসল চাষে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এবং শ্রমিকের অধিক মূল্য হওয়ায় কৃষকরা প্রতি বছরই ক্ষতিগস্ত হচ্ছে, ফলে অধিক লাভের আশায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও কৃষকরা তামাক চাষ করছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির মাধ্যমে তামাক চাষিদের এক বিঘা জমিতে তামাক চাষের জন্য (বীজ, সার ক্রয়ের জন্য) নগদ ৪ হাজার দুইশ’ টাকা ও উৎপাদিত তামাক সঠিক মূল্যে কৃষকের বাড়ি থেকে ক্রয় করার নিশ্চিয়তা দেয়।
লালপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, লালপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২০২০ সালে ৪৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ৪৫ হেক্টর, ২০১৮ সালে ৪৫ হেক্টর, ২০১৭ সালে ৩৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল। তবে এই বছর কিছু বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে উপজেলার আব্দুলপুর, বড়ময়না, কদিমচিলান, দুয়ারিয়া, দুড়দুরিয়া ও গন্ডবিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা অন্য ফসলের পাশে চাষকৃত তামাকের জমিগুলো পরিচর্যা করছেন। আর কিছু দিন পর থেকে তামাক পাতা কাটা ও পোড়ানোর কাজ শুরু হবে, তাই জমির পার্শে¦ লোকালয় ও কৃষকের বাড়িতে তামাক পোড়ানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে চুল্লি। বীজ, সার ও অগ্রিম ঋণসহ নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় ধান ও রবিশস্যের পরিবর্তে তামাক চাষকেই অধিক লাভজনক মনে করছেন কৃষকরা।
আব্দুলপুর এলাকার তামাক চাষি আবু লাহাব ইনকিলাবকে জানান, তামাক চাষ করতে আমাদের কোনো টাকা লাগেনা বরং কোম্পানির লোক টাকা, সার, বীজ দেয় আবার তামাক লাগানোর সময় দামও বলে দেয়। এমনকি কোম্পানি নির্দিষ্ট স্থান থেকে নগদ টাকা দিয়ে তামাক কিনেও নেয়। সেই জন্যে এবার আমি তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছি। চাষি মুজাফফর রহমান ও বজলু বলেন, বর্তমানে শ্রমিকের অধিক দাম, যে টাকা খরচ করে অন্য ফসল চাষ করি বাজারে সঠিক দাম না থাকায় বিক্রয় করে সে টাকা উঠে না। অল্প খরচে কোম্পানির টাকায় তামাক চাষ করে অধিক লাভ হয় তাই তামাক চাষ করেছি। স্বাস্থ্যের ক্ষতির কথা জানতে চাইলে বলেন, যখন তামাকের কাঁচা পাতাগুলো গাঁথি তখন গন্ধে খারাপ লাগে। কিন্তু কি করব এখন তো খেয়ে বাঁচি পরে যা হওয়ার হবে।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম তামাক চাষের কথা স্বীকার করে বলেন, পরিবেশ, কৃষি জমি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য তামাক চাষ ক্ষতিকর। তবে তামাক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কৃষকদের বিনামূল্যে তামাকের বীজ, সারসহ অনেক সময় ঋণও দেন। বিনা পুঁজিতে লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এই জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে সচেতন করেও তামাকের চাষ কমছে না বলে জানালেন এই কর্মকর্তা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন