অভাবের সংসারের হাল ধরতে প্রায় এক যুগ আগে সউদী আরবের জেদ্দায় পাড়ি জমিয়েছিলেন কালিহাতীর আল আমিন। গত বুধবার দুপুরে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে জেদ্দার হাইআল সামির এলাকায় তাদের বহনকারী গাড়িটিকে একটি বড় লরি ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা ফরহাদ আলী ও মা খাতু বেগম। দুই ভাই- বোনের মধ্যে আল আমিন ছিলেন ছোট। পাঁচ বছর আগে স্থানীয় আউলিয়াবাদ গ্রামের বাবুলের মেয়ে বিলকিসকে বিয়ে করেন। সউদী আরবে যেয়ে প্রথমে আল ওয়ান কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন আল আমিন। পরবর্তীতে তিন বছর আগে সেখান থেকে জেদ্দার ইয়ামামা নামের একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে যোগ দেন। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি দেশে যাওয়ার কথা ছিল তার।
আল আমিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন অসুস্থ বাবা ফরহাদ আলী ও মা খাতু বেগম। ছেলেকে দেখার আকাঙ্খায় তাদের আহাজারি যেন কিছুতেই থামছে না। এলাকার শত শত নারী পুরুষ ছুটে এসেছেন তাদের সান্ত¡না দেয়ার জন্য। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তারা বলেন, কে আমাদের ওষুধ কিনে দিবে, কে আমাদের খাবার দিবে। আমাদের যে আর কিছুই রইলো না।
আমাদের ছেলের লাশটা যেন আমরা তাড়াতাড়ি ফেরত পাই। এ জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানাই।
আল আমিনের স্ত্রী বিলকিস বেগম বলেন, গত বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে তার (আল আমিনের) সাথে আমার শেষ কথা হয়। পরে বিকালেই তার মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। আমাদের কোন সন্তান নেই এখন আমি কি নিয়ে বাঁচবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, আল আমিন অনেক ভালো ছেলে ছিলো। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলো সে। তাকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা। সরকার যেন এ পরিবারটির দিকে নজর দেন। আর তার লাশটি যেন দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন