ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের ৪ সদস্যকে গুলিভর্তি পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত বুধবার রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার গৌরিপুর বাজারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছে।
গ্রেফতাররা হল- জালিয়াত চক্রের মূল হোতা ইদ্রিস মিয়া, ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম, আবু বক্কর সালাফি ও রুবেল। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি কুমিল্লার বিভিন্ন থানায়। গ্রেফতারদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলিসহ বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ ভ‚য়া সিল, লেনদেনের রশিদ এবং জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আলেপ উদ্দিন জানান, জাতিয়াতি চক্রের মূল হোতা ইদ্রিস মিয়া একটি হোটেলে চাকরি করার সময় তার সঙ্গে পশু ভাই নামে এক ভারতীয় নাগরিকের পরিচয় হয়। যিনি সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও আন্তর্জাতিক জাতিয়াতি চক্রের সদস্য। পশু ভাই দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ হ্যাক করে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন ও রেমিট্যান্স জালিয়াতি করে আসছিলেন। তার কাছ থেকে ইদ্রিস মিয়া জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার নানা কৌশল রপ্ত করে।
পরে এলাকার ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম ও অপর দুইজনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাংক জালিয়াতির একটি সংঘবদ্ধ দল গড়ে তোলেন। এরপর থেকেই এই চক্রটি ব্যাংক জালিয়াতির কাজ শুরু করে। তারা চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের ভুয়া ভাউচার, কর্মকর্তাদের ভুয়া সিল, স্বাক্ষর, পিন নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি তৈরি করে ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। এই চক্রটি গত চার বছরে বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথ থেকে কোটি টাকারও বেশি অর্থ অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছে বলে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের স্বীকার করেছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া র্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন আরো জানান, জালিয়াতি চক্রের এই সদস্যদের কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, বেশ কয়েকটি দেশিয় অস্ত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ২৪টি ভুয়া সিল, ১৬টি ভুয়া লেনদেনের রশিদ, অর্থ গ্রহণের ২৮টি ভুয়া রশিদ, ১১ জনের ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ১৬টি ভুয়া ছবি এবং জাতিয়াতির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার প্রিন্টার জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, জালিয়াতি ও ডাকাতির অভিযোগে নতুন করে আরো তিনটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন