আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমি প্রতিবছর আমার নিজ এলাকায় আলীশ্বর শান্তি নিকেতনে এসে খুবই আনন্দিত। বৌদ্ধ ধর্মের মূল মন্ত্র হচ্ছে অহিংসা পরম ধর্ম, হানাহানি কাটাকাটি নেই, জীব হত্যা নেই, জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক। আর বাংলাদেশ হচ্ছে অসম্প্রাদিক দেশ, শান্তির দেশ। প্রতিটি ধর্ম-বর্ণের মানুষ এক হয়ে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছে। সকলের রক্ত, লাখো শহীদের রক্ত একাকার হয়ে মিশে গেছে। মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ সকল ধর্মের মানুষ মিলে যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনকের স্বপ্ন ছিল সকল ধর্মের মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। সকলে মিলেমিশে এ দেশে বাস করবে। বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ ও দারিদ্র্যমুক্ত। এ লক্ষ্য নিয়েই বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। জঙ্গিবাদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। ধর্মের নাম নিয়ে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বরদাশত করা হবে না, সে যে ধর্মেরই হোকনা কেন। আর ইসলাম শান্তির ধর্ম, সৌহার্দ্যরে ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলামে জঙ্গিবাদের জায়গা নেই। যারা এসব করে তারা ধর্মবিরোধী কাজ করে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে যার যার ধর্ম সে সে স্বাধীনভাবে পালন করবে। এই পরিবেশটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। আসুন সবাই মিলে একসঙ্গে দেশকে গড়ে তুলি। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই, সম্প্রীতি চাই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার উন্নতি চাই। সে লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পথচলা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বৌদ্ধ সার্ধিকের কাহিনী বিষয়ে আলোচনা করে বলেন,
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) বিকালে কুমিল্লা জেলার লালমাই উপজেলার আলীশ্বরে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী আলীশ্বর শান্তিনিকেতন বৌদ্ধ বিহার ও সর্বস্তরের বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে স্মরণকালের ইতিহাসে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচে বড় অনুষ্ঠান ভিক্ষু পরিবাসব্রত (ওয়াইক) ও ব্যূহ চক্র মেলার সমাপনীতে অর্থমন্ত্রী বৌদ্ধ সার্ধিকের কাহিনী বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পাহাড়তলী মহানন্দ সংঘ রাজ বিহারের প্রিন্সিপাল ভদন্ত ধমপ্রিয় মহাস্থবির। গত ২০ জানুয়ারী বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান শুক্রবার মানবতার মুক্তি কামনার মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটে। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলীশ্বরসহ আশপাশ এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। পুরো এলাকা সেজেছে নানান রঙ্গে। শুক্রবার সকাল থেকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জড়ো হয় পুণ্যার্থীরা। বেলা ১০টার দিকে পঞ্চশীল প্রার্থনায় শুরু হয় মহাস্থবির বরণ অনুষ্ঠান। এরপর পরই শুরু হয় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধর্ম দেশনা।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সংঘরাজ ভদন্ত রতনজ্যোতি মহাথের, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার প্রিন্সিপাল ড. জ্ঞানশ্রী মহাস্থবির, ভদন্ত প্রিয়ানন্দ, ফরা বুদ্ধশ্রী মহাস্থবির, ভদন্ত জিনপ্রিয় স্থবিরসহ কুমিল্লা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভির সালেহীন ইমন, লাকসাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউনুস ভূইঞা, লালমাই উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মালেক, ও ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদারসহ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন