শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তামিমের ডাবল সেঞ্চুরি

শতকে মুমিনুলের পাকিস্তান টেস্টের প্রস্তুতি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

আগের দিন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু আভাস দিয়েছিলেন আজ ঘোষনা হতে পারে পাকিস্তান সফরের প্রথম টেস্টের দল। তবে একদিন আগে গতকাল সন্ধ্যায়ই রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দল দিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। ঠিক তার আগেই দারুণ ডাবল সেঞ্চুরিতে রাঙানো ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে অপরাজিত আছেন তামিম ইকবাল। দেশসেরা ওপেনারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অধিনায়ক মুমিনুল হকও পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। পাকিস্তানে টেস্ট ম্যাচের আগে প্রস্তুতির সুযোগ বিসিএলের এই একটি রাউন্ডই। সেই সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগালেন তামিম ও মুমিনুল।

প‚র্বাঞ্চলের হয়ে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে দুই জন খেলেছেন এই ইনিংস। ৬ বছর পর বিসিএলে খেলতে নেমেই সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন তামিম। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তার এটি ষোড়শ সেঞ্চুরি। মুমিনুলের সেঞ্চুরি হলো ২১টি। গতকাল মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে এই দুজনের ব্যাটে ২ উইকেটে ৩৯৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে প‚র্বাঞ্চল। ২৮১ বলে ৩০ চারে ২২২ করে অপরাজিত আছেন তামিম। সেঞ্চুরি তুলে ১১১ রান করে মুমিনুল ফেরার পর ক্রিজে আসা ইয়াসির আলি খেলছেন ৪৮ বলে ২২ রান নিয়ে। হাতে ৮ উইকেট রেখে প‚র্বাঞ্চলের লিড ১৮২ রানের।
তামিমের আগের ডাবল সেঞ্চুরিটি ছিল টেস্ট ম্যাচে; বাংলাদেশের হয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায়, ২০৬। ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচে দুইশর কাছে গিয়েছিলেন আগে দুইবার। ২০১২ সালে জাতীয় লিগে পরপর দুই ম্যাচে করেছিলেন ১৯২ ও ১৮৩। এবার আর থামেননি ডাবল সেঞ্চুরির আগে।

তামিম এগিয়েছেন ওয়ানডের গতিতে। দিনের শুরু থেকেই ছিলেন ছন্দে। প্রথম ৫ ওভারেই তার ব্যাট থেকে আসে ৫টি বাউন্ডারি। শুভাগত হোমের অফ স্পিন তাকে আটকে রাখতে পারে বটে, কিন্তু পেসারদের বিপক্ষে তিনি ছিলেন দারুণ দাপুটে। মুস্তাফিজুর রহমান, মুকিদুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলামকে খেলেছেন স্বচ্ছন্দে। পরে স্পিনেও রান তুলেছেন দ্রæত গতিতে। ১২৫ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর কয়েকটি ঝুঁকিপ‚র্ণ শট খেলেন বটে, তবে আবার নিজেকে দ্রুত গুছিয়ে নেন তামিম। ২৪২ বলে স্পর্শ করেন ডাবল সেঞ্চুরি। ইনিংসে বাউন্ডারি তখন ২৯টি।

টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তামিমের সবশেষ সেঞ্চুরি ছিল ২০১৫ সালের অক্টোবরে। জাতীয় লিগের ম্যাচে চট্টগামের হয়ে ১৩৭ করেছিলেন বরিশালের বিপক্ষে। ওই ম্যাচের পর এই দীর্ঘ সময়ে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি মোটে দুটি।

মুমিনুলও ছিলেন দারুণ সাবলীল। শুভাগত হোমকে চার মেরে ২৪২ বলে অনেকতটা ওয়ানডে মেজাজে ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছান তামিম। তখন আরেক প্রান্তে ৯৯ রান নিয়ে খেলছিলেন মুমিনুল। এক রান নিয়ে স্ট্রাইক বদল করার পরই মুমিনুলও তুলে নেন সেঞ্চুরি। ১১ বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন ১৮০ বলে।

শুরু থেকে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল ছিলেন তামিমকে সঙ্গ দেওয়ার ভ‚মিকায়। থিতু হয়ে পরে তিনি নিজেও নেন অথরিটি। মধ্যাঞ্চলের বোলারদের নির্বিষ করে দুজনে হয়ে যান অবিচল। সাবলীল ব্যাটিংয়ে আগের দিনের কঠিন উইকেটকে ভীষণ সহজ করে তুলেন তারা। দ্বিতীয় উইকেটে ২৯৬ রানের জুটির পর মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুমিনুল।

তবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ছড়ি ঘুরাতে পারেননি টেস্ট দলে ঠাঁই পাওয়া তরকারা। আগের দিন আগুন ঝরানো পেসার শফিউল ইসলামকে দ্বিতীয় দিন ঠিকঠাক সামলাতে পারলেন উত্তরাঞ্চলের ব্যাটসম্যানরা। অন্য পেসারদেরও সামলালেন দারুণভাবে। চট্টগ্রামের সবুজ উইকেটে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেললেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। রনি তালুকদার ও আরিফুল হকের লড়াকু ফিফটির পরও তাই দক্ষিণাঞ্চল পেল লিড।

বিসিএলের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে লিড বাড়িয়ে নিচ্ছে দক্ষিণাঞ্চল। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দলটি এগিয়ে ৯৫ রানে। প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পাওয়া শাহরিয়ার নাফীস খেলছেন ১৯ রানে। ১৬ রানে ব্যাট করছেন শামসুর রহমান।

তাসকিন আহমেদকে দিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট নেন রাজ্জাক। শেষ দিকে দ্রæত রান তোলার চেষ্টায় ছিলেন আরিফুল। তবে ইবাদত হোসেনকে বোল্ড করে ২০৭ রানে উত্তরাঞ্চলকে গুটিয়ে দেন শফিউল। ৪০ রানে নেন ৬ উইকেট। রাজ্জাক ৪ উইকেট নেন ৭২ রানে।
পাকিস্তানে প্রথম টেস্টের আগে বিসিএলের এই একটি রাউন্ড খেলতে পারবেন টেস্ট দলের ক্রিকেটাররা। টেস্ট ম্যাচটি শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি, রাওয়ালপিন্ডিতে। বাংলাদেশ দল ঢাকা ছাড়বে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে।


সংক্ষিপ্ত স্কোর
২য় দিন শেষে
মধ্যাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল, মিরপুর
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ২১৩।
প‚র্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৯৫ ওভারে ৩৯৫/২ (পিনাক ২৬, তামিম ২২২*, মুমিনুল ১১১, ইয়াসির ২২*; মুস্তাফিজ ০/৮৭, শহিদুল ০/৮৩, শুভাগত ১/১০৮, মুকিদুল ১/৫১, সোহরাওয়ার্দী ০/৩৩, সাইফ ০/২৪)।

 

উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল, চট্টগ্রাম
দক্ষিণাঞ্চল : ২৬২ ও ২য় ইনিংস : ২২ ওভারে ৪০/১ (শাহরিয়ার ১৯, এনামুল আহত অবসর ০, মাহমুদ ২, শামসুর ১৬; ইবাদত ০/৯, তাসকিন ১/১২, আরিফুল ০/০, সুমন ০/১২, সানজামুল ০/৩, তানবীর ০/২)।

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস : (আগের দিন ৪৬/৫) ৭৭.১ ওভারে ২০৭ (রনি ৫৫, তানবীর ৩৪, আরিফুল ৫৮*, সুমন ২৭, তাসকিন ৭, ইবাদত ০; শফিউল ৬/৪০, আল আমিন ০/১৮, কামরুল রাব্বি ০/৫০, রাজ্জাক ৪/৭২, মাহমুদউল্লাহ ০/২২)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন