শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

‘পৃথিবীর ১২৬টি দেশে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১৭ পিএম

এডিস মশার উৎপত্তিস্থল, বংশবিস্তার, রোগ-জীবাণু বহন, মানুষকে আক্রান্ত করাসহ বিশ্বে ডেঙ্গু রোগের সামগ্রিক চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) এর সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তৌহিদুল হক।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরা কমিউনিটি সেন্টারে এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে এক অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে অবহিতকরণের মাধ্যমে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উদ্দেশে এ সভার আয়োজন করা হয়।

পৃথিবীর ১২৬টি দেশে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে ২৫০ কোটির অধিক মানুষ অর্থাৎ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ ডেঙ্গু ঝুঁকিতে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের মধ্যে ১০টি দেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। এ দেশগুলোর প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ এ ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে গত বছর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করার রেকর্ড থাকলেও গত আগস্টে ছিলো এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। সারাদেশে এ এক মাসেই প্রায় ৫৩ হাজার রোগী ভর্তির রেকর্ড করা হয়, যার অধিকাংশই ছিলো রাজধানী ঢাকায়। তবে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব সর্বাধিক ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে- এ বছরও একই সময়ে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। একই সঙ্গে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম দেখানো হয়, যার মধ্যে এ রোগ প্রতিকারে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও এডিস মশার ওপর গবেষণা অন্যতম।

অ্যাডভোকেসি সভায় এডিস ও কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রমের সচিত্র পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার। তিনি এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ২০১৯ সালে ডিএনসিসির সামগ্রিক কার্যক্রম ও ২০২০ সালে চলমান এবং আসন্ন এডিস মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসির পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এ রোগ নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যে আমরা গত বছর বিভিন্ন আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে একাধিক অবহিতকরণ সভা, সচেতনতামূলক পদযাত্রা ও পথসভা, বাউল সঙ্গীত, জাতীয় পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি, সচেতনতামূলক বার্তা, টেলিভিশনে টিভিসি প্রচার ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেছি।

এছাড়া ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম দেশের জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশন মালিক এবং বার্তা প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন, যা এবছরও চলমান থাকবে।

লে. কর্ণেল সারওয়ার আরো বলেন, আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একেকজন ‘অ্যাম্বাসেডর’ হিসাবে কাজ করতে পারে। গতবছর তারা নিজেরা নিজেদের বাসা-বাড়ি পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রতিবেশীর বাসা-বাড়িও পরিদর্শন করে এডিস মশার প্রজননস্থল ধবংস করেছে। আমরা এবারও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একই প্রত্যাশা করছি। এছাড়া মেয়রের নেতৃত্বে ডিএনসিসির সকল বিভাগ ও সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণের সমন্বয়ে আমরা ‘চিরুনি অভিযান’ পরিচালনা করি।

তিনি আরো বলেন, মসজিদের ইমামগণ সমাজের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি। মানুষ তাদের বয়ান শুনে, তাদেরকে মান্য করে। গত বছরও ইমামগণ প্রতি জুমার নামাজে তাদের বয়ানে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে আলচনা করেছেন, যা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। আমরা আশা করবো, এবারও ইমামদেরকে আরো জোরালো ভাবে আমাদের পাশে পাবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন