বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে পদত্যাগ করতে চিঠি!

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:২৫ পিএম | আপডেট : ৭:৩৯ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ রশিদুল ইসলাম শেখকে সমিতির সাধারণ সভা ডেকে শিক্ষকদের নিকট ক্ষমা চেয়ে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে চিঠি দিয়েছে কয়েকজন শিক্ষক। বিশ^বিদ্যালয়ের বিভাগগুলোর বিভাগীয় প্রধানদেরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করা হয় বলে জানা যায়। যেখানে প্রেরকের স্থলে কোন শিক্ষকের নাম উল্লেখ না করে ‘কয়েকজন সাধারণ শিক্ষক’ বরাত দিয়ে এ চিঠি প্রেরণ করা হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল প্রস্তুত ও আসন ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটির আহবায়ক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে থাকা অবস্থায় অনুষ্ঠানে সম্মানিত শিক্ষকদের বসার ব্যবস্থা না করে অন্য অনুষদের ডিনের (চলতি দায়িত্ব) ভূমিকায় গ্র্যাজুয়েট না থাকা সত্ত্বেও মঞ্চে দামী চেয়ারে নিজের অবস্থান পাকা করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ রশিদুল ইসলাম শেখ। সমাবর্তনে শিক্ষকদের বসার ব্যবস্থা না করে কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বসিয়ে শিক্ষকদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। রাজনৈতিক কর্মী থেকে আরম্ভ করে উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত লেবারদেরও সমাবর্তনে আমন্ত্রণ দেয়া হয়। ১৩ সিটের একটি মাইক্রো বাস নিজের অধীনে সবসময় রেখে দেন, অথচ সাধারণ শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে আসা-যাওয়া করেন। কোন নোটিশ ব্যতীত গত ২ জানুয়ারি সকাল ১০.০০ টার বাস বন্ধ করে দেয় যাতে শিক্ষকরা সিএনজিতে করে শহর থেকে ক্যাম্পাসে আসেন।

চিঠিতে তার সম্পর্কে অভিযোগগুলো তুলে এবং শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের নৈতিক অধিকার আদায়ে তৎপর না হয়ে সভাপতি হয়ে নিজের সুযোগ সুবিধা আদায়ে প্রশাসনের সাথে দরকষাকষি করে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। এহেন পরিস্থিতিতে এরূপ শিক্ষক সমিতি না থাকা ভাল বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় চিঠিতে। তাই সভাপতির প্রতি অনুরোধ জানিয়ে অনতিবিলম্বে সাধারণ সভা ডেকে শিক্ষদের নিকট ক্ষমা চেয়ে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করে শিক্ষক সমাজের মর্যদা রক্ষা করাই যুক্তিযুক্ত হবে বলে আহবান জানানো হয় চিঠিতে।

জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনের প্যান্ডেল প্রস্তুত ও আসন ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটির আহবায়ক থাকে বিশ‌্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইন অনুষদের ডিন মোঃ রশিদুল ইসলাম শেখ। তার অনুষদে কোন গ্র্যাজুয়েট না থাকা সত্তে¡ও তিনি এক ধরনের প্রভাব খাটিয়ে সমাবর্তন মঞ্চে নিজের আসন পাকা করেন এমনটাই অভিযোগ করে শিক্ষকবৃন্দ। তাছাড়া সমাবর্তনে শিক্ষকদের নির্দিষ্ট আসন না রেখে কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বসার ব্যবস্থা করলে শিক্ষকরা প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে। বিষয়টি তার নজরে আসলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে সম্পর্ক ভাল। আর অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীই তার হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত। শিক্ষক সমিতির সভাপতি যদি শিক্ষকদের জন্যই কাজ না করেন তবে তার পদে থাকার কি দরকার? শিক্ষক সমিতি শিক্ষকদের অধিকারে কেন কথা বলবে না?’

চিঠির অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে কয়েকটা অভিযোগ আনা নাম ও স্বাক্ষরবিহীন একটি চিঠি আমি পেয়েছি। তবে এখানে কোন পরিচয় যেহেতু নেই সে কারণে আমার কাছে এই চিঠির কোন মূল্য নেই। যদি কেউ পরিচয়সহ অভিযোগ আনে তাহলে এটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন,‘বেনামি একটি চিঠির কথা আমি শুনেছি। আমার যতদূর জানি, বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাত-বিএনপিরা অতিউৎসাহী হয়ে কাপুরুষ কিছু শিক্ষক এই উড়ো চিঠি পাঠিয়েছে। সৎ সাহস থাকলে পরিচয় প্রকাশ করে অভিযোগ করুক।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন