তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ইদলিবে তুর্কি সেনাবাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে না জড়াতে রুশ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছেন। একই সঙ্গে তিনি রাশিয়াকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহবানও জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ এই তথ্য জানিয়েছে।
একই দিন মস্কো থেকে পাঠানো একটি বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছিল তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কেননা সেখানে রাশিয়ার পক্ষ থেকে সিরিয়ায় তুর্কি-রুশ যৌথ টহল নির্ধারণের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবে সরকারি বাহিনীর মর্টার শেলের আঘাতে নিজেদের সেনা নিহতের ঘটনায় পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে তুরস্ক। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়েক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সিরিয়ায় মোতায়েন তুর্কি বাহিনীর ওপর যে কোনো হামলার কঠোর জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, গত সোমবার স্থানীয় সময় সকালে বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে অবস্থান নেয় তুরস্কের সেনাবাহিনী। এর পরপরই মর্টার শেল থেকে গোলাবর্ষণ শুরু করে সিরিয়ার সরকারি সেনারা। এতে চার তুর্কি সেনা নিহতসহ বাহিনীর আরও ৯ সদস্য গুরুতর আহত হন। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ বাহিনী হামলাটি চালিয়েছে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীর অবস্থানের ব্যাপারে আগে থেকেই অবগত ছিল সিরিয়া। এর পরও আসাদের অনুগত সেনারা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গোলাবর্ষণ করে। যদিও এর প্রতিশোধ হিসেবে তুর্কি সেনারা এরই মধ্যে ইদলিবের ৫৪টি লক্ষ্যবস্তুতে সফলতার সঙ্গে আঘাত হেনেছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নির্দেশে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে জোরালো সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এতেই নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট এরদোগান সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও সাঁজোয়া যান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জাতিসংঘ জানিয়েছিল, রুশ যুদ্ধবিমানের সহায়তায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইদলিব অভিমুখে অগ্রসর হওয়ায় হাজার হাজার বাসিন্দা অঞ্চলটি ছেড়ে তুরস্কের দিকে পালাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার মানুষ ইদলিব ছেড়ে পালিয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। বর্তমানে তুরস্কে আশ্রিত অবস্থায় আছে আরও ৩৫ লাখের অধিক সিরিয়ান শরণার্থী। যদিও উত্তেজনার কারণে নতুন করে শরণার্থীদের ঢলের আশঙ্কায় রয়েছে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন