শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

লাভজনক হলেও বাস সঙ্কট

বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপো

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপোটি পুনরায় লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। কিন্তু সচল ও যাত্রীবান্ধব বাসের অভাবে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না। অথচ দীর্ঘদিনের পুরনো বাস দিয়েও এ ডিপোটি মাসে গড়ে দেড় কোটি টাকা আয় করছে।
মাথা ভারী প্রশাসনের ফলে অতিরিক্ত প্রশাসনিক ব্যয় ও নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলে ফেরি আর সেতুর টোল প্রদান করেও ডিপোটি মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা মুনাফা করছে। অথচ প্রয়োজনীয় বাসের অভাবে যথাযথ যাত্রী পরিবহন করতে পারছে না ডিপোটি। প্রায় দেড় দশকের পুরানো বাস জোড়াতালি দিয়ে যাত্রী সেবা অব্যাহত রেখেছে বিআরটিসি।
অথচ সংস্থাটির যে কয়টি লাভজনক বাস ডিপো রয়েছে, তার অন্যতম দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র এ ডিপোটি। কিন্তু এখানে এখন মোট বাসের প্রায় অর্ধেকই অচল। এমনকি বর্ষার সময় অনেক বাসে ছাতা মাথায় দিয়ে ভ্রমণের অভিযোগও রয়েছে যাত্রীদের। তবে সম্প্রতি পুরানো কিছু বাস মেরামত করে কিছুটা যাত্রীবান্ধব করা হলেও তা ভ্রমণকারীদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না।
বরিশাল ডিপোতে বর্তমানে প্রায় ৮০টি বাসের মধ্যে যাত্রী পরিবহনে রয়েছে মাত্র ৪৩টি। অন্তত ২৫টি বাস হারিয়েছে আয়ুষ্কাল। কিছু বাস নিলামে বিক্রিও হয়েছে। ভারী মেরামতে রয়েছে অন্তত ১০টি। এছাড়াও হালকা মেরামতেও কয়েকটি বাস রয়েছে। এসব বাদ দিয়ে গড়ে ৪৩টির মত বাস প্রতিদিন রাস্তায় নামে। কিন্তু বরিশাল থেকে রাজধানীর সংক্ষিপ্ত সড়ক পথ পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কাওড়াকান্দি রুটে গড়ে ১০টি এসি বাস প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র ৭টি।
সম্প্রতি সংস্থাটি ভারতীয় ‘লাইন অব ক্রেডিট’-এর আওতায় প্রায় সাড়ে ৪শ’ এসি বাস আমদানি করলেও বরিশাল বাস ডিপোর ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৭টি। আরো বিপুল সংখ্যক নন এসি বাস আমদানি হলেও সেখান থেকেও ভাগ্যে জোটেনি ১০টি বাসও। বছর পাঁচেক আগে ভারত থেকে আমদানি করা এসি বাস থেকে ১০টি দেয়া হলেও তার কোনটির এসি এখন আর কাজ করছে না। ওইসব বাসের ইঞ্জিন থেকে শুরু করে মূল বডি পর্যন্ত এতটাই নিম্নমানের যে পাঁচ বছরের মধ্যেই তা রাস্তায় চলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এরপরেও জোড়াতালি দিয়েই নন এসি হিসেবে কিছু রুটে এসব বাস চলছে।
এ ডিপোটি সাগরপাড়ের কুয়াকাটা থেকে উত্তরের রংপুর আর উত্তর-পশ্চিমের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রী সেবা প্রদান করছে। কিন্তু বেশিরভাগ বাসেই স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণের সুযোগ নেই। ভালোমানের বাসের অভাবে ইতোমধ্যে বরিশাল-খুলনা-বেনাপোল, চরফ্যাশন-বরিশাল-যশোর এবং কুয়াকাটা-সাতক্ষীরা-মুন্সীগঞ্জ রুটে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি বরিশাল থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা রুটে যে কয়েকটি বাস চলছে তার অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। অনেক বাস যান্ত্রিক গোলযোগে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। ভালোমানের বাসের অভাবে বরিশাল-পয়সারহাট-কোটালীপাড়া-গোপালগঞ্জ-খুলনা রুটে যাত্রী পরিবহন সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না।
বরিশাল বাস ডিপোতে বর্তমানে দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীসহ দেড় শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। মাথা ভারী এ প্রশাসনের পেছনে মাসে ব্যয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। উৎসবের মাসে এ ব্যয় বেড়ে যায় দেড় গুণ। ফলে ‘লাভের গুড় পিপড়ায় খায়’ অবস্থা বিআরটিসির বরিশাল বাস ডিপোর।
এ ব্যাপারে ডিপোটির ম্যানেজার (অপারেশন) জানান, সংস্থার সব ডিপোর বিষয় সদর দফতর জানে। প্রতিমাসে রিভিউ মিটিংয়ে সব বিষয় আলোচিত হয়। কর্তৃপক্ষ যখন যা ভাল মনে করবেন তাই করবেন, জানিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন