বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফরিদপুর-বরিশাল-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক ৪ লেন নির্মান প্রকল্পে সংশোধনী আসছে

মহানগরীতে নতুন ভুমি অধিগ্রহনের পরিবর্তে সরকারী জমি উদ্ধার ও বাইপাস নির্মিত হবে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:০৫ পিএম

ফরিদপুর-বরিশাল-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক-এর বরিশাল-ফরিদপুর অংশের ১২৪ কিলোমিটার ৪ লেনে উন্নীতকরন প্রকল্পে আবারো সংশোধনী আসছে। তবে এ মহাসড়কটি ৪ লেনে নির্মানের লক্ষে ভ’মি অধিগ্রহনের কাজ জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে চাচ্ছে সড়ক অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে মহাসড়কটি ৪ লেনে সম্প্রসারনের লক্ষে ফরিদপুর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত প্রায় ৩০৫ একর জমি হুকুম দখলের লক্ষে প্রায় ১ হাজার ৮শ কোটি টাকা বরাদ্ব দেয়া হয়েছে। ঐ কর্মসূচীর আওতায় ফরিদপুরে প্রায় ৭১ একর, মাদারীপুরে ৪৬ একর, বরিশালে ৯১ একর ও পটুয়াখালীতে ৯৬ একর ভূমি হুকুম দখল কাজ আগামী জুনের মধ্যে শেষ করতে হবে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ‘টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্স ফর সাব-রিজিওনাল রোড ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফেসিলেটিজ প্রজেক্ট’এর আওতায় কুয়াকাটা থেকে ফরিদপুর পর্যšত ২৩২ কিলোমিটার মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করা হবে। এ লক্ষে ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা সমিক্ষা সহ বিস্তারিত নকশা প্রনয়ন সম্পন্ন হলেও প্রকল্পটিতে বরিশাল মহাগরীর অভ্যন্তর থেকে ৪ লেন মহাসড়ক নির্মান পরিহার করে বাইপাস নির্মানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত ঐ চারলেন মহাসড়কের মূল ‘ক্যারেজওয়ে’টি ৩.৬ মিটারের চেয়ে আরো প্রসস্ত করে নির্মানের লক্ষে পুনরায় সমিক্ষা সহ নকশায় পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। আগামী ৫০ বছর দেশের ৮ নম্বর এ জতীয় মহাসড়কটির যানবাহন চলাচলের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সড়ক অধিদপ্তর নতুন এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এর ফলে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ ৪ লেন প্রকল্প ব্যায় কত দাড়াবে তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট মহল। সবকিছুই নির্ভর করছে সংশোধীত নকশার ওপর।
এছাড়াও মহাসড়কটির ফরিদপুরÑবরিশাল অংশে শিকারপুর ও দোয়ারিকাতে বিদ্যমান দুটি বড়মাপের সেতু প্রসস্ত করা হবে, না সেস্থলে ৪ লেনের নতুন সেতু নির্মান করা হবে সেসব সিদ্ধান্তের ওপরও এ প্রকল্প ব্যায় নির্ধারন নির্ভর করছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে গত দুই দশকে বরিশালÑফরিদপুর মহাসড়কে যানবাহনে চাপ দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধির পাশাপাশি আগামী বছরের মধ্যে পায়রা বন্দরের বানিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হলে এ মহাসড়কে ভাড়ী যানবাহনের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। ফলে বরিশাল মহানগরীর মধ্যে দিয়ে এসব যানবাহন চলাচলে জানমালের ঝুকি আরো বাড়বে। এবিবেচনায় নগরীর রূপাতলী থেকে নথুল্লাবাদ হয়ে গড়িয়ার পাড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তায় তীব্র যানযট পরিহার করার লক্ষে বরিশাল বাইপাস নির্মানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
এসব বিবেচনায় বরিশাল মহানগরীর গড়িয়ারপাড় থেকে দপদপিয়া সেতুর সংযোগ সড়ক পর্যন্ত বিদ্যমান মহাসড়কের পাশে নতুন জমি অধিগ্রহনের পরিবর্তে পূর্বের হুকুম দখলকৃত ১২০ ফুট প্রসস্ত জমিতেই মহাসড়কটি উন্নয়ন করা হবে বলে জানা গেছে। তবে নগরীর যানযট নিরশন সহ নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষে নথুল্লাবাদ, নবগ্রাম রোড-চৌমহনী ও আমতলা মোড়ে ৩টি ফ্লাইওভার নির্মানের যে দাবী ছিল, সড়ক অধিদপ্তর আপতত তা করছে না বলেও জানা গেছে।
পাাশাপাশি যানযট মূক্ত বরিশাল মহানগরীর জন্য বাইপাস নির্মানের লক্ষে ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিঘ্রই বরিশাল বাইপাসের চুড়ান্ত নকশা প্রনয়ন করে মূল ডিপিপি’র অন্তভর্’ক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। ২০০২ সালে বরিশালÑফরিদপুরÑমহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। অথচ ১৯৯৮ সালে বরিশাল বাইপাস নির্মনের একটি ডিপিপি যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া হলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ফরিদপুর থেকে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৩২ কিলোমিটার মহাসড়কই ৪ লেনে উন্নীত করার লক্ষে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা প্রনয়ন সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা লাভ সহ নানা কারণ বিবেচনায় প্রাথমিক পর্যায়ে বরিশাল থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি’র আর্থিক সহায়তার চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ১০৮ কিলোমিটার মহাসড়ক একই প্রকল্পের আওতায় আসবে। ঐ মহাসড়কের কলাপাড়া থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি বন্দরের নিজস্ব অর্থে অরসিসি প্রযুক্তিতে ৪ লেন-এ উন্নীত করনের কাজ প্রায় শেষ করেছে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী।
তবে বরিশাল মহানগরীর অভ্যন্তরের সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশে নতুন ভ’মি অধিগ্রহন সহ ৪ লেন নির্মিত না হলেও ১৯৬০ সালে অধিগ্রহনকৃত ১২০ ফুট প্রশস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার করে সীমানা চিঞ্হিত করন সম্পন্ন হয়েছে ইতোমধ্যে। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে এ জরিপ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবী করে ৬০ বছর আগে অধিগ্রহনকৃত ঐসব ভ’মি পুনরুদ্ধারে খুব শিঘ্রই কার্যক্রম শুরুর কথাও জানিয়েছে বরিশাল সড়ক বিভাগ। পাশাপাশি একই প্রকল্পের আওতায় মহানগরীর এ মহাসড়কের উন্নয়ন করার কথাও জানিয়েছেন প্রকল্পটির পরিচালক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন