‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!’ এই শব্দটাই ঘুরে ফিরে আসছে। আর আসছে আকবর আলীর কথা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে সর্বোচ্চ চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয়কে ঐতিহাসিক বললেও যেন একটু অতৃপ্তি থেকে যায়। অতি ব্যবহারে এই শব্দটা যেন একটু ক্ষয়েই গেছে। আর সেই জয়ে ‘আকবর দ্য গ্রেট’ নেতৃত্ব দিলেন একেবারে সামনে থেকে। বিশ্ব মিডিয়ায় তাই বাংলাদেশের এই জয়ের প্রসঙ্গে আসছে এই দু’টি শব্দ: বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর আকবর!
যে কোনো পর্যায়ের বিশ্বকাপে এটি বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা জয়। ছোটদের এবারের এই টুর্নামেন্টে একবারও হারেনি তারা। একেবারে অপরাজিত থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে আকবরের দল। বিশ্বের খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করেছে বাংলাদেশের যুবাদের বিশ্ব জয়ের খবর। প্রশংসায় ভাসাচ্ছে সাবেক বর্তমান ক্রিকেটাররা। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো তাদের ম‚ল শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশে উদযাপন : ‘আকবর দ্য গ্রেট’ এবং মিষ্টি বিতরণ্’
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ লিখেছে, ‘প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতল।’ আইসিসি তাদের পেজের ম‚ল শিরোনামে লিখেছে, ‘বাংলাদেশ ঐতিহাসিক জয়ের মধ্যদিয়ে অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল।’
বিবিসি লিখেছে, ‘ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতল বাংলাদেশ।’ স্কাই স্পোর্টস লিখেছে, ‘প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতল।’ সুপার স্পোর্ট শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশ প্রথমবার অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছে।’
অবশ্য বাংলাদেশ ও ভারতের খেলায় পাকিস্তান কার সমর্থন করবে তা চোখ বন্ধ করেই বলা যায়। কারণ সীমান্ত বৈরিতার প্রভাব দুই দেশের ক্রিকেটেও বিদ্যমান। ক্রিকেট পাকিস্তানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বাংলাদেশের জয়কে ‘ঈদ মোবারক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ জয়কে ভিন্নভাবে দেখছে না ভারতীয় মিডিয়া। একে স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছে তারা। যদিও কিছু সংবাদমাধ্যম ম্যাচ শেষে টাইগার যুবাদের অতিরিক্ত উদযাপন এবং ক্ষণিকের হাতাহাতির বিষয়টি উল্লেখ করেছে। কয়েকটি গণমাধ্যম আবার সেটিকে প্রধান খবর করেছে। ভারতের প্রভাবশালী বাংলা গণমাধ্যম ‘এই সময়’ লিখেছে- ‘বাংলাদেশের বিশ্বজয়’। তারা আরেকটি শিরোনামে লিখেছে- ‘ইতিহাস লিখলেন ১১ বাঙালি, ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বজয়ী বাংলাদেশ’।
‘আনন্দবাজার’ নিজেদের অনলাইন সংস্করণে অবশ্য হাতাহাতির বিষয়টি টেনেছে। তারা হেডলাইন দিয়েছে- ‘প্রায় হাতাহাতিতে শেষ হলো দ্বৈরথ।’ ইংরেজি দৈনিক ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ শিরোনাম করেছে, ‘বৃথা গেল বিষ্ণের নায়কোচিত প্রচেষ্টা, ভারতকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জয় বাংলাদেশের’।
‘এনডিটিভি’ লিখেছে, ‘ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশের প্রথম অন‚র্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়’। ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’র শিরোনাম, ‘ভারতকে হারিয়ে প্রথম আইসিসি বিশ্বকাপ জয় বাংলাদেশের’। এ নিয়ে একাধিক খবর ছাপিয়েছে ‘দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’। তারা এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে, ‘প্রতিবেশী নায়কেরা’। আরেকটি শিরোনাম করেছে, ‘বাংলা ক্রিকেটের বিস্ময়কর গল্প’। এছাড়া রবি বিষ্ণেই এবং দুদলের বচসার ঘটনা নিয়েও নিউজ করেছে তারা। ভারতের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ লিখেছে, ‘হৃদয় ভাঙল ভারতের ছেলেদের’।
অবশ্য বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয় কিংবা ফাইনালে ভারতের হার নিয়ে কোনো প্রকার প্রতিবেদনই প্রকাশ করেনি ‘দ্য হিন্দু’। এমনিতে তারা টাইগারদের নিয়ে নিয়মিত খবর প্রকাশ করে থাকে। তবে ‘ইন্ডিয়া টুডে’ টাইগার যুবাদের দুর্দান্ত জয়ের চেয়ে বেশি হাইলাইট করেছে ঝগড়া-বিবাদের বিষয়টি। তারা শিরোনাম করেছে, ‘ফাইনাল শেষে হাতাহাতির জন্য বাংলাদেশ খেলোয়াড়দের দুষেছেন ভারত অধিনায়ক’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন