শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় : যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত সেই শিক্ষককে অব্যাহতি!

কুবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১০ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের সান্ধ্য কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করার দ্বায়ে অভিযুক্ত বিভাগটির বিভাগীয় প্রধান আলী রেজওয়ান তালুকদার চাপে পড়ে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যহতি নিয়েছেন।তিনি অব্যহতি চাওয়ার প্রেক্ষিতে তার আবেদন গ্রহণ করে ঐ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বনানী বিশ^াসকে বিভাগীয় প্রধান করে এক অফিস আদেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের।
জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি আলী রেজওয়ান তালুকদারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মোবাইল ফোনের গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য মুছে ফেলার অভিযোগ তুলে বিভাগটির সান্ধ্য কোর্সের এক শিক্ষার্থী বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তিতে অভিযুক্ত শিক্ষক বিষয়টিকে বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রনোদীত বলে বিভাগের দুই শিক্ষককে এর মদদ দাতার অভিযোগ তুলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই ছাত্রীকে মানসিক ভারসাম্যহীন, পরকীয়ায় আসক্ত, তিনি (ছাত্রী) টাকার বিনিময়ে বড়লোকের শয্যাসঙ্গী হয় বলেও সবার সামনে উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এবং তার শাস্তির দাবি জানিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর ভিন্ন ভিন্ন আবেদন করে দুই শিক্ষক এবং ঐ শিক্ষার্থী। এছাড়াও নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষককে বিশ^বিদ্যালয়ের সান্ধ্য কোর্স থেকে অব্যহতি দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সহকর্মী শিক্ষকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য এবং তাদের সাথে অসদাচারণসহ একাডেমিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে বিভাগের শিক্ষকদের স্বাক্ষরসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন শিক্ষকবৃন্দ। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন চাপে পড়লে এবং প্রশাসন অভিযুক্তের পক্ষ নিচ্ছে এমনটা গুজব উঠলে অভিযুক্ত শিক্ষককে উপাচার্য অব্যহতি নিতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। তারই প্রেক্ষিতে গত রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অব্যহতি চেয়ে আবেদন করলে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন এটি গ্রহণ করে তাকে পদ থেকে অব্যহতি দিয়ে বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বনানী বিশ^াসকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে এক অফিস আদেশ প্রেরণ করেন রেজিস্ট্রার।
ইংরেজি বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক সহকর্মী শিক্ষকদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা তার প্রতি অনাস্থা দেয়ায় কৌশলে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন তাকে অব্যহতি নিতে বাধ্য করে। আমদের বিচার তো আমরা পাইনি। আমরা চাই অভিযুক্ত শিক্ষকের সঠিক বিচার হোক।’
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন,‘ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আলী রেজওয়ান তালুকদারের পদ থেকে অব্যহতি চাওয়ার আবেদনে প্রেক্ষিতে তাকে পদ থেকে অব্যহতি দিয়ে নতুন একজনকে দায়িত্ব দিয়েছি।’
আলী রেজওয়ান তালুকদারকে বাঁচাতে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন কৌশলে তাকে পদ থেকে অব্যহতি নিতে বাধ্য করেছে শিক্ষকদের এমন অভিযোগের বিষয়ে উপাচার্য বলেন,‘অভিযোগ পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে করেছে। আলী রেজওয়ান ও তার বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের একটা তদন্ত কমিটি আছেই।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন