বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সরিষার হাসিতে উজ্জ্বল মীরসরাইয়ের কৃষকের মুখ

প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বৃদ্ধি পেয়েছে সরিষা আবাদ। ইতিমধ্যে অনেক গ্রামে সবুজ, বেগুনী, সাদা, সোনালী নানা মৌসুমী ফলনের পাশাপশি হলুদের হাসি যেন অন্য সকল সুন্দরকে হার মানিয়ে মাঠজুড়ে আলোর নিশান হয়ে উঠেছে। উপজেলার সোনাপাহাড়, হিঙ্গুলী, করেরহাট, ধূম, আমবাড়িয়া গ্রামের পাহাড়ী এলাকা সংলগ্ন অনেক জমিতেই এখন বেড়েছে সরিষার চাষ। মাঘ মাসের ঠিক এই সময়ে মাঠে-ঘাটে তেপান্তরে সরিষা ফোটার ধুম পড়েছে। এখানকার মাঠগুলো জুড়ে হলুদের চাদরে গাড় সোনালী আভায় গোটা প্রান্তর হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত আলোকময়। মীরসরাইয়ের সোনাপাহাড় ও আমবাড়িয়া গ্রামে সরেজমিনে অনেক সরিষা ক্ষেত হলুদের হাসিতে ঝলমল করতে দেখা যায়। সোনাপাহাড়ে গত বছর কয়েকটি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। কিন্তু এ বছর অনেক জমিতেই সরিষার হাসিতে ঝলমল করছে। আমবাড়িয়া গ্রামে অনেক কৃষক এখন মশুর, হেলোইন, জিরা, বাউলা, মটরশুঁটি ও ধনেপাতার পাশাপাশি একই ক্ষেতে কিছু সরিষাও চাষ করতে শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায, দেশে এখন ১৫ জাতের সরিষার ফলন হচ্ছে। মীরসরাইতে চাষ হওয়া এই জাতের সরিষা হেক্টরে ১ হাজার ৬শ’ কেজি থেকে ২ হাজার কেজি উৎপাদন হবে। এ সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। প্রতি কেজি সরিষা থেকে ৫০০ গ্রাম তেল পাওয়া যায়। এ সরিষা আবাদের মাত্র ৯০ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে কাটিং করা যায়। তারপর ক্ষেতে ইরি-বোর আবাদ করা যায়। বারি সরিষা আবাদ করে কৃষক বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বিশাল মুনাফা করতে পারবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে উক্ত তথ্য জানানো হয়। এক দিকে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে আবাসনের জন্য দিনদিন কৃষি জমি কমছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণের পর ‘বারি ১৫’ জাতের সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি স্থানীয় জাতের তুলনায় বারি সরিষার ফলন তিনগুণ পাচ্ছেন। এ সরিষা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। আগামীতে এ অঞ্চলের কৃষকরা সরিষা, মটরশুঁটি, মশুর, খেসারি, ইত্যাদি চাষাবাদে ও লাভবান হতে পারবে বলে জানান কৃষি বিভাগ। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, বারি জাতের সরিষা আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে সরিষার আমদানি নির্ভরতা কমবে। এ সরিষার তেলের গুণগত মানও বেশ ভাল। চট্টগ্রামের মীরসরাইসহ বিভিন্ন এলাকা এই সরিষা আবাদের জন্য উপযোগি। মীরসরাইয়ের উপজেলা কৃষি অফিসার শাহ আলম বলেন মীরসরাই উপজেলায়ও তেল, ডাল ও ধান জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের অগ্রগতিতে মীরসরাই অর্থকরি ফসলগুলোতে আরো এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন