শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভালোবাসার দিনে ঠাঁই নেই

নুর হোসেন ইমন | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশের কলেজ বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে ভালোবাসা দিবস নিয়ে তর্ক-বিতর্ক আর আলোচনা-সমালোচনার অন্ত না থাকলেও বইয়ের প্রতি ভালোবাসায় কোন সমালোচনা নেই। গতকাল শুক্রবার ১৪ ফেব্রæয়ারি অমর একুশে বইমেলার চিত্র দেখলেই বিষয়টি সহজে বুঝা যায়। বাংলা সন সংস্কারের পর এবার পহেলা ফাগুন বসন্তের প্রথম দিন ও ভালোবাসা দিবস একই দিনে পড়েছে। ফলে ভালোবাসা দিবস আর পহেলা ফাগুন মিলে বইমেলায় ছিলো না তিল ধারণের ঠাঁই।
গতকাল ছুটির দিন শুক্রবার সকাল ১১টার আগেই মেলায় প্রবেশের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে। অন্য দিনের তুলনায় এ দিন যেন দশনার্থীদের বাঁধ ভাঙা স্রোত নামে। বাসন্তী রঙের পোশাক আর পাঞ্জাবি পড়া কপোত-কপোতী সত্যিই বই কিনবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকলেও এমন ভিড় লেখকদের নতুন কিছু লেখার জন্য উৎসাহিত করবে বলে জানান লেখকরা।
পহেলা বসন্ত আর ভালোবাসা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে তেজহীন রোধের এ বিকেলে প্রিয়জনের হাত ধরে বইমেলায় আসার চেয়ে আনন্দের কাজ আর কী হতে পারে! যেকোনো দিবস মানেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তারুণ্যের উপচে পড়া ভিড়। বই মেলার ১৩তম দিনটি ভালোবাসাকে কেন্দ্র করেই জমে উঠে। প্রিয় মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বইমেলার স্টলে স্টলে ঘুরে চলে কবিতার কিংবা উপন্যাসের বই উপহার দেয়ার সৌন্দর্য। শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা কেন, বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসার উপহার হিসেবে বইতো নিশ্চয়ই সেরা।
ঋতুরাজ বসন্তের আগমন বাঙালি প্রাণে নতুন আবেশ ছড়ায়। আর ফাল্গুনের প্রথম দিনে বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলাতেও দেখা যায় সে আবেশ। মাথায় ফুলের টায়রা, কারও বা খোঁপায় হলুদ গাঁদার মালা। এক হাতে বই, অন্য হাত প্রিয় মানুষের হাতে। মেয়েদের হাতে রিনিঝিনি শব্দ করে বাজছে কাচের চুড়ি। কারো গালে বা বাহুতে আলপনা। বসন্তের এ সাজে পিছিয়ে ছিলো না ছেলেরাও। গায়ে বাহারী রঙের পাঞ্জাবি পড়ে এদিন মেলায় দেখা গেছে তাদের।
তবে মেলায় সবচেয়ে সুন্দর সাজে দেখা গেছে বাবা-মায়ের হাতে থাকা ফুলের মত শিশুদের। আবার কেউবা দল বেঁধে বন্ধু বান্ধবের সাথে। নানা বয়সের পাঠকের পদচারণায় এদিন মেলা ছিল সরগরম। বসন্তের ছোঁয়া যে শুধু পাঠকদের মাঝেই ছিলো, তা কিন্তু নয়। ফাল্গুনের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে তুলেছেন স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীরাও। মেলার প্রতিটি স্টলেই বইপ্রেমীদের ভিড় ছিল দেখার মত।
মেলা প্রাঙ্গনে কথা হয় মো. সানাউল্লার সাথে। তিনি ঢাকার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ভালোবাসা দিবসে পরিবার নিয়ে এসেছেন মেলায়। তিনি বলেন, ১৪ ফেব্রæয়ারির দিনটাতে পরিবারের সাথে সময় কাটানো বড় আনন্দেন ব্যাপার। আর বই মেলায়ও আসব আসব বলে আসা হয় না। তাই পরিবার নিয়ে মেলায় চলে আসলাম। মেলাপ্রাঙ্গন ঘুরে দেখা যায় প্রিয়জন ও বন্ধুদের সাথে আসা দর্শনার্থীদের ঘোরাঘুরি ও সেলফি তোলার ধুম।
প্রথম দিনেই নজর কেড়েছে ইলিয়ড ও ওডিসি : প্রকাশের প্রথম দিনেই পাঠকের নজর কেড়েছে বিশ^সাহিত্যের অমূল্য সংযোজন মহাকবি হোমারের ‘ইলিয়াড অ্যান্ড ওডিসি’র বাংলা ভাষায় অনুবাদ ইলিয়ড ও ওডিসি। বইটি ভাষান্তর করেছেন মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম। স্বরবৃত্ত প্রকাশন থেকে প্রকাশিত বইটি মেলার সোহরাওয়ার্দী অংশের ৫৫০-৫১ নাম্বার স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে একই প্রকাশন থেকে লেখকের ‘আমেরিকার দিনগুলি’ ও ছোটদের জন্য লেখা ‘ছাতিম গাছের ভূত’ নামে ২টি বই বের হয়। স্বরবৃত্ত প্রকাশনের ম্যানেজার আউয়াল বলেন, ইলিয়ড ও ওডিসি স্টলে আসার পর সব ধরণের পাঠক বইটির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে। সব বয়সের দর্শনার্থী বইটি দেখছেন। বিক্রয়কর্মী সুমন বলেন, স্টলে আসার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বইটির বেশ কয়েক কপি বিক্রি হয়েছে। সময় গড়াতে গড়াতে বইয়ের বিক্রি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।##

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন