মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আমদানি-রফতানিতে ভয়ের কিছু নেই

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। একই রকম মন্তব্য করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্যে সাময়িক সমস্যা হতে পারে, তবে বড় কোনো ঝামেলা হবে না। 

গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দুই দেশের কূটনীতিকদের এক বৈঠক শেষে তারা এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, চীন অনেক আস্থাশীল ও তড়িৎকর্মা রাষ্ট্র। তাদের অনেক মেকানিজম ও বিকল্প পদ্ধতি জানা আছে। যে কারণে তারা খুব শক্তভাবে করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করছে। ঠিক তেমনি তারা বাণিজ্যের দিকটিও গুছিয়ে নিতে পারবে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে দুই দেশের বাণিজ্যে তেমন কোনো সমস্যা হবে না।
এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাস যদি চীন থেকে পণ্য সরবরাহ বন্ধ থাকে, তাহলে রফতানি খাতে ১২শ থেকে ১৫শ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমদানি ও রফতানিতে করোনাভাইরাসের প্রভাবে তেমন বড় কোনো ঝামেলা তৈরি হবে না। তবে সাময়িক একটু সমস্যা হতে পারে। এরই মধ্যে নববর্ষের ছুটি শেষ হয়েছে, চীনারা কাজে ফিরতে শুরু করেছে। সহজেই সবকিছু সামলানো যাবে।
লি জিমিং বলেন, এখনই বিকল্প বাজার খোঁজার সময় হয়নি। চীন এখনো আগের মতোই বাণিজ্য খাতে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মো. আব্দুল কাদের খান বলেন, চীন থেকে মোট অ্যাকসেসরিজের ৪০ বা ৫০ শতাংশ আমদানি করা হয়। তবে আমাদের যে চাহিদা রয়েছে, এত অল্প সময়ে কাছাকাছি দেশ ভারতসহ অন্য কেউ এই সাপোর্ট দিতে পারবে না। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি যদি চীনের কারখানাগুলো খুলে যায়, তাহলে আমাদের চাহিদা প‚রণে সময় লাগবে না।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিসিসিআই) সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির প্রভাব বাণিজ্যে পড়বে না। কারণ চীন একটি বিশাল আয়তনের দেশ। মূলত হুবেই ও আশপাশের কয়েকটি প্রদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত অর্থনীতি গড়ে তোলার অংশ হিসেবে চীন একেকটি প্রদেশ বা অঞ্চলে একেক ধরনের পণ্য উৎপাদন কেন্দ্র বা হাব গড়ে তুলেছে। ফলে চীনে সব রকম পণ্য উৎপাদনে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ার কথা নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে এমন প্রদেশগুলো সংক্রমণের বাইরে থাকায় চীন থেকে পণ্য আমদানিতে এখন পর্যন্ত বড় কোনো প্রভাব পড়ার কারণে নেই। গাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ-চায়না চেম্বারের পক্ষ থেকে চীনের সামগ্রিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজও (এফবিসিসিআই) এ বিষয়ে কাজ করছে। চীনের সঙ্গে যেসব খাতে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, সেসব খাতের সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখছে।
এদিকে কুয়েতে মানবপাচারে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যের জড়িত থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সংসদ সদস্যের কথা বললেন, আমরা শুনেছি যে এটা ফেক নিউজ।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারের কাছে এই মুহূর্তে কোনো তথ্য নেই। কুয়েতে আমাদের মিশন এখনও এ বিষয়ে কোনো খবর দেয়নি, আমরা এখনও জানি না। তবে যতটুকু জানি এটা বোধহয় কোনো একটা পত্রিকায় বের হয়েছিল এবং পরে ওই পত্রিকাই বোধহয় বলেছে যে, এটার সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, হুবেই প্রদেশে থাকা আরও ১৭১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে। এদের মধ্যে ৩০ জন নিজেদের অর্থে দেশে ফিরতে রাজি আছেন বলে দূতাবাসে নাম নিবন্ধন করেছেন। তবে আমরা সবাইকেই ফিরিয়ে আনব। এ ব্যাপারে কাজ চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন