শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাংলাদেশ থেকে ভারতের অনেক কিছু শেখার রয়েছে : ভারতীয় কলামিস্ট স্বাতি নারায়ণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:১১ পিএম

ভারতের প্রখ্যাত কলামিস্ট স্বাতি নারায়ণ ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জে কিষাণ রেড্ডির চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে বেশ কয়েকটি দিক দিয়ে উন্নত। পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসের এক নিবন্ধে তিনি লিখেন, আশির দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবেচেয়ে বেশি বাঁচতেন ভারতের মানুষেরা। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশি নারীরা ভারতের থেকে চার বছর বেশি বেঁচে থাকার প্রত্যাশা করতে পারে। এই সাফল্যের সূত্রটি খুবই সহজ।
তিনি লিখেন, ২০০৯ সাল থেকে প্রতি তিনটি গ্রামে একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করেছে বাংলাদেশ। এছাড়াও চার দশক ধরে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি বাড়ি গিয়ে নারীদের কাছে ওষুধ সরবরাহ করেছেন এবং পরিবার পরিকল্পনা করতে সহায়তা করেছেন।
তিনি লিখেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে, ভারতের জনসংখ্যা তুলনামূলক লভ্যাংশে থাকলেও যুব শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি প্রান্তিক সুবিধা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ করছে। সবচেয়ে বড় কথা, পঞ্চগড় জেলায় আমার করা এক জরিপে দেখেছি, ভারতের শিশুদের থেকে বাংলাদেশের শিশুদের পড়ার দক্ষতা অনেক বেশি। বাংলাদেশের ৪৪টি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি নেই বললেই চলে। এছাড়াও শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার সরকারি, বেসরকারি (এনজিও) এবং মাদরাসাগুলোতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে।
তিনি আরো লিখেন, পুষ্টিগ্রহণের দিক থেকেও বাংলাদেশ এগিয়ে। জনসংখ্যাতাত্তি¡ক স্বাস্থ্য জরিপ অনুযায়ী, ভারতে সঠিক ওজনের থেকেও কম ওজন নিয়ে বাস করে ৩৬ শতাংশ শিশু। অন্যদিকে, বাংলাদেশে সঠিক ওজনের থেকেও কম ওজন নিয়ে বাস করে ৩০ শতাংশ শিশু। একইভাবে, ভারতীয় শিশুদের একটি বৃহত্তর অংশ সঠিকভাবে বেড়ে ওঠছে না।
স্বাতি নারায়ণ লিখেন, বাংলাদেশে কমপক্ষে ৯০ শতাংশ নাগরিকদের বাড়িতে টয়লেট রয়েছে। আমার এক জরিপে ২০১৬ সালের মধ্যে ৯৬ শতাংশ বাড়িতে এবং ৮০ শতাংশ বিদ্যালয়ের সঠিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা দেখতে পাই। স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সাধারণত ইসলামিক জোর দাবি ছাড়াও স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো দরিদ্র পরিবারগুলোতে সিমেন্টের রিং বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। তারা নিয়মিতভাবে আলোচনা, মসজিদ, গণমাধ্যম এবং স্কুলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সচেতনতার বার্তাও ছড়য়ে দিচ্ছে।
এর বাইরে বাংলাদেশের নারীদের কাজ নিয়েও তিনি তুলনা করেন। তিনি লিখেন, ২০০৬ সালের বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় ‘শিক্ষামূলক হাইপোগামি’র ক্রমবর্ধমান প্রবণতা পাওয়া গেছে। এদিকে, ভারতের নিচে নামছে। তিনি লেখেন, বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক নারী জনশক্তি রয়েছে। তৈরি পোশাক খাত ছাড়াও কয়েক হাজার গ্রামীণ নারী কৃষি কাজ, চা কারখানা, পাটকল, হাঁস-মুরগি উৎপাদন এবং দুগ্ধ শিল্পে কাজ করেন।
স্বাতি নারায়ণ লিখেন, ভারতে ৪৫ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি বেকার। আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ডুবছেই। তাই ভারত সরকারের মন্ত্রীদের উচিত নিজেদের লাগাম নিজেরাই টেনে ধরা। তিনি লেখেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আলোকে অবৈধ অভিবাসীর মিথ্যা ছায়ামূর্তি তৈরি করে আমাদের প্রতিবেশীদের মধ্যে ইসলামবিদ্বেষী ক্ষোভ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আর কিছুই নয়। বরং ভারত সরকারের পক্ষে ‘সোনার বাংলা’ থেকে নাগরিকদের জীবনযাত্রার উন্নতি কিভাবে করতে হয় তা শেখা বুদ্ধিমানের কাজই হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack ali ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:২৬ পিএম says : 0
Thank for your comments....
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন