ওরস থেকে অপহরণ করে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে রাতভর আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে সম্রাট (১৬) নামে এক তরুণ। গত শুক্রবার রাতে পলাশ উপজেলার গয়েশপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ১২ বছর বয়সী ছাত্রীকে ব্যাকডেটে নোটারি পাবলিক করে ধর্ষকের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। গতকাল ধর্ষিতার পিতা-মাতা আইনগত সহযোগিতা চেয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। গত শুক্রবার রাতে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বাড়ির পাশে একটি ওরশ শরীফের অনুষ্ঠানে যায় ওই ছাত্রীটি। অনুষ্ঠানের ফাকে সে দোকানে গেলে পলাশ উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের আবদুল বাছেদের ছেলে সম্রাট স্থানীয় দুই যুবক নয়ন ও আকরামের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। ছাত্রীটির পরিবারের লোকজন সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। পরদিন শনিবার সকালে ঘটনাক্রমে সম্রাটের বাড়ি থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। তখন ওই ছাত্রী তার পরিবারকে জানায় সম্রাট তাকে রাতভর ধর্ষণ করেছে।
এ ঘটনায় তারা আইনের আশ্রয় গ্রহণের উদ্যোগ নিলে জিনারদী ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান আজাদের নেতৃত্বে মাঝেরচর এলাকার মদন মিয়া ও পলাশেরচর এলাকার আওলাদের মাধ্যমে আপস মীমাংসার কথা বলে গত রোববার নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহের ঘোষণা দেন। সেখানে ওই ছাত্রীটির প্রকৃত বয়স গোপন করা হয়েছে। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে রোববার বিয়ে অনুষ্ঠিত হলেও তাতে ধর্ষণের আগের দিন বৃহস্পতিবার দেখানো হয়।
ছাত্রীটির মা বলেন, আমার স্বামী একজন রিকশা চালক। আমরা গরীব ও অসহায়। সম্রাটের পরিবার বিত্তশালী। পয়সার জোরে মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের অমতে উকিলের মাধ্যমে নোটারি পাবলিক করেছে। আমার মেয়ের প্রকৃত বয়স ১২ বছর। কিন্তু নোটারি পাবলিকে ১৮ দেখানো হয়েছে। আমি এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য মো. মনিরুজ্জামান ভূইয়া আজাদ বলেন, আমি যখন ঘটনাটি শুনেছি, চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পাশাপাশি তাদেরকে আইনের আশ্রয় নেয়ার জন্য বলি। নোটারি পাবলিক হয়েছে কিনা আমি কিছুই জানি না। আমি সবসময় নোটারি পাবলিকের বিরুদ্ধে। কারণ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অনেক তথ্য গোপন করা হয়।
পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় গতকাল ছাত্রীটির মা একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত সোমবার রাতে অভিযুক্তের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছি। ছেলেটি পলাতক রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন