শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মতিঝিলে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে খুন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

বৃদ্ধ গোপাল চন্দ্র কুড়ি (৭৩) ও তার স্ত্রী ছবি কুড়ি (৬০) থাকতেন রাজধানীর মতিঝিল আরামবাগ এলাকায়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে প্যারালাইজডসহ নানা রোগে ভুগছিলেন তারা। তাদের তিন মেয়ে থাকলেও দুই জন থাকেন ভারতে, একজন অস্ট্রেলিয়ায়। তাই নিজে মারা যাওয়ার পর বৃদ্ধা স্ত্রীকে কে দেখবেন, প্রায়ই এমন চিন্তা করতেন তার স্বামী। আর এই চিন্তা থেকেই স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন গোপাল চন্দ্র কুড়ি।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর মতিঝিল আরামবাগ ১৮২/এ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী গোপাল চন্দ্র কুড়িও আহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দিয়ে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধারের পর গোপাল চন্দ্র কুড়ি’র বরাত দিয়ে এমনটিই জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, গতকাল সকালের দিকে হাতে আঘাত নিয়ে মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে আসেন গোপাল চন্দ্র কুড়ি। তার ডান হাত কিছুটা কাটা ছিল। হাত কাটার রহস্য জানতে গেলেই তার স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পায়। পরে খবর দিলে মতিঝিল থানা পুলিশ ওই বাসা থেকে বৃদ্ধার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
মতিঝিল থানার এসআই শফিকুল ইসলাম আকন্দ জানান, গোপাল চন্দ্র কুড়ি’র বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলায়। মতিঝিলে কুড়ি এন্ড কোং এর কেমিকেল রিচার্জ কোম্পানীর মালিক তিনি। তার তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে ভারতে, এক মেয়ে অস্ট্রেলিয়া থাকে। মতিঝিলের ওই ফ্ল্যাটটি তার নিজের। স্বামী-স্ত্রী দুই জনই বাসায় একা থাকতেন।

আহতের বরাত দিয়ে তিনি জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী দুজনই অসুস্থ। তাদের মধ্যে গোপাল বেশি অসুস্থ। এজন্য তিনি সব সময় বলতেন, তিনি মারা গেলে তার স্ত্রীকে কে দেখবেন। তিন মেয়েও দেশের বাহিরে। এই চিন্তা থেকে গতকাল ভোরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন গোপাল। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ছবি কুড়ি। এসময় গোপালের ডান হাত কেটে যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
মতিঝিল থানার পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) মনির হোসেন মোল্লা জানান, গত ১৬ বছর ধরে নিহত বৃদ্ধা প্যারালাইজড অবস্থায় রয়েছেন। বৃদ্ধ স্বামীও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার পরিবার জানিয়েছে, তিনি (গোপাল) মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ছয় থেকে সাত মাস তিনি বাড়ি থেকেই বের হননি। তাদের তিন মেয়ে থাকলেও দেখার মতো কেউ নেই। ধারণা করা হচ্ছে, মানসিক হতাশা থেকে স্ত্রীকে খুন করেন গোপাল। নিহতের লাশের পাশ থেকে একটি ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন