শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অত্যাবশ্যকীয় নিত্য পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির সাথে আয় হৃাস

চরম দূর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:২৭ পিএম

অত্যাবশ্যকীয় নিত্য পণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি আয় আগের তুলনায় হ্রাস পাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের নি¤œÑমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো যথেষ্ঠ কষ্টে আছে। গত প্রায় চার মাস ধরে পেঁয়াজের অগ্নি মূল্যের সাথে সম্প্রতি চাল ছাড়াও রসুন, আঁদা, মুসুর ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনি সহ বেশকিছু অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ যথেষ্ঠ বৃদ্ধি করেছে। আর নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সাথে নির্ধারতি আয়ের নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর আয় হৃাস পাওয়ায় দূর্ভোগের সাথে হতাশা আর ক্ষোভেরও সৃষ্টি হচ্ছে।

মাস চারেক আগে পেয়াজ সেঞ্চুরী অতিক্রম করে ডবল সেঞ্চুরির পরে তা আড়াইশ টাকায় স্থীর ছিল বেশ কিছুদিন। এ অবস্থায়ই টিসিবি’র মাধ্যমে বরিশাল বিভাগীয় সদর সহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলা সদওে প্রথমে ৪৫ টাকা, পরে ৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রী হলেও বাজারের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ বুধবার বরিশালের খুচরা বাজারে প্রতি কেজী পেঁয়াজ বিক্রী হয়েছে ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজের রেস ধরে গত দু মাস যাবত দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে রসুন ও আদার বাজরও উর্ধমুখি। তবে চীনে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে সে পালে এখন হাওয়া লেগেছে। বুধবার বরিশালের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশী আদা ১২০ টাকা এবং আমদানীকৃত আদা দেড়শ টাকার ওপরে বিক্রী হয়েছে । আর রসুন ডবল সেঞ্চুরী অতিক্রম করেছে। বুধবার দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারে দেশী রসুন ২শ টাকা এবং আমদানীকৃত রসুন ২১০-২১৫ টাকা কেজি বিক্রী হয়েছে।

কৃষকের ধান গোলা শূণ্য হবার পরে গত একমাসে দক্ষিণাঞ্চলে চালের বাজারও অস্থির হয়ে উঠেছে। গত এক মাসে দক্ষিণাঞ্চলের খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রাতি ৫-৭টাকা। নিম্ন-মধ্যমানের ‘ব্রি ২৮ বালাম’ বিক্রী হচ্ছে ৩৮ টাকা কেজি দরে। মধ্যম মানের ‘মিনি কেট’ চাল বিক্রী হচ্ছে ৫২-৫৪ টাকা কেজি। অথচ এবার ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’এর কারনে দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন ও আগাম রবি ফসলের ক্ষতিতে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি অনেকটাই বিপন্ন। পুনরায় পৌষের অকাল অতিবর্ষনে সবজি সহ বিভিন্ন ধরনের রবি ফসল আরেক দফা ক্ষতি হয়েছে। ফলে এবার বাজারে শীতকালীন সবজির উৎপাদন অনেকটাই হতাশা ব্যঞ্জক। পাশাপাশি দামও নি¤œ-মধ্য বিত্তের এখনো নাগালের বাইরে। তবে এখন পর্যন্ত সাধারনের ক্রয় সীমার মধ্যে রয়েছে গোল আলু, প্রতি কেজি ২০ টাকা। কৃষকের কাছ থেকে এ সবজী ব্যবসায়ীদের হাত ধরে আগামী এক মাসে হীম ঘরে ঢুকলেই মূল্য বৃদ্ধি ঘটবে বলে আশংকা ওয়াকিবাহাল মহলের।

গত একমাসে সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে লিটারে ৭-১০ টাকা পর্যন্ত। চিনির দাম গত তিন মাসে কেজিতে ৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৬৫-৬৭ টাকায়ও বিক্রী হচ্ছে।
বাজারে অত্যাবশ্যকীয় নিত্যপণ্যের দাম ক্রমাগত উর্ধমুখি প্রবনতার মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর আয় ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। গত জুলাই থেকে সব ধরনের সঞ্চয় পত্রের ওপর মুনফার ওপর ১০% উৎসে কর কর্তনের ফলে এ অঞ্চলের মানুষের দূর্ভোগ যথেষ্ঠ বেড়েছে। দু বছর আগে পরিবার সঞ্চয়পত্রে যে গৃহীনি ১ লাখ টাকায় মাসে ১ হাজার ৭০ টাকা মুনফা তুলতেন, এখন তা ৮৬৪ টাকা হৃাস পেয়েছে। ফলে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও সঞ্চয়পত্রের বিক্রী তলানীতে ঠেকেছে। এর ওপর গত ১ ফেব্রæয়ারী থেকে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সব ধরনের মুনফা প্রায় অর্ধেক হ্রাস করে ৬%-এ নামিয়ে আনায় এ অঞ্চলের সাধারন গরীবের রুজিতে আরেকবার কোপ পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবীদ গন। কারন গ্রামঞ্চলের নি¤œ-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব সহ স্থায়ী আমানতের মুনফার ওপর নির্ভরশীল ছিল এতদিন। সেখানেও নতুন খরগ নেমে আসায় দক্ষিণাঞ্চলের শহর থেকে গ্রামের সাধারন মানুষের নিরব হাহাকার শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন