উত্তর : ইসলামে মায়ের দুধের প্রথম হকদার তার নিজের সন্তান। অবশ্য মা তার দুধ পান করাতে বাধ্য নয়। ইচ্ছা করলে সে সন্তানকে দুধ পান করানোর বিনিময়ে স্বামীর কাছ থেকে কিছু দাবী করতে পারে। যদি মা তার শিশুকে দুধ না দেয়, তাহলে অন্য দুধ মা রেখে স্বামী তার সন্তানকে দুধ পান করাবে। আমাদের সমাজে এ নীতির উর্দ্ধে থেকে মায়েরা স্নেহকে প্রাধান্য দিয়ে দুধ পান করিয়ে থাকেন। এটি তার নিজেরও তৃপ্তি, সন্তানের প্রতি মায়া এবং পাশাপাশি স্বামীর প্রতি ভালোবাসাপূর্ণ অনুগ্রহ বা এহসান। এখানে খুব লক্ষ্য রাখার একটি বিষয় এই যে, বংশের দ্বারা যেমন আত্মীয়তা সাব্যস্ত হয়, দুধ পানের দ্বারাও এমনই এক ধরণের আত্মীয়তা সাব্যস্ত হয়। যেমন, যে শিশু কোনো নারীর দুধ পান করবে, তাকে তার দুধবাবা কোনোদিনই বিয়ে করতে পারবে না। কারণ, সে ঔরসজাত কন্যার মতই দুধকন্যা। এ লোকটির ছেলেরাও এ মেয়েটিকে বিয়ে করতে পারবে না, কেননা সে মেয়েটি তাদের দুধবোন। এদের পরস্পরের মধ্যে পর্দার হুকুমও নেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বুকের দুধ বিক্রি করা যাবে কি না? এখানে মাসআলাটি দু’রকম। ১. বিক্রি করা যাবে বা বিনিময় নিয়ে কোনো শিশুকে দুধ খাওয়ানো যাবে। পাশাপাশি তার সাথে হয়ে যাওয়া আত্মীয়তা চিরদিন মেইনটেইন করতে হবে। বিয়ে শাদীর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ২. যেখানে সেখানে দুধ বিক্রি করা বা মিল্ক ব্যাংকে বেচে দেওয়া শরীয়তে জায়েজ নয়। কেননা, এখানে কার কার দুধ মিশ্রিত হচ্ছে, কোন কোন শিশু তা খাচ্ছে এসব জানা বোঝা বা মেইনটেইন করা সম্ভব নয়। যাতে শরীয়তের লঙ্ঘনের শতভাগ আশংকা থেকে যায়। তাছাড়া বড় একটি সমস্যা এই যে, বহু পুরুষের দ্বারা উৎপন্ন বহু নারীর মিশ্রিত দুধ মনস্তাত্ত্বিকভাবে শিশুটিকে বিভ্রান্ত মানসিতার শিশুরূপে গড়ে তুলবে। এমন প্রজন্ম সুস্থ হতে পারে না। এ সমস্যাটি ইসলামও চায় না। সুতরাং দ্বিতীয় পর্যায়ের মাসআলাটি জায়েজ হবে না।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
inqilabqna@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন