মীরসরাইয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার অর্ধ লক্ষাধিক কৃষক পরিবার। জমিতে নিরাপদ বালাইনাশক ওষুধ প্রয়োগের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক না পরায় আক্রান্ত হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন জটিল রোগে। জমিতে কিটনাশক প্রয়োগের সময় মুখে মাক্স, হাতে গ্লাভস ও শরীরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক পরিধান করা ও কিটনাশক প্রয়োগের সঠিক নিয়ম থাকলেও উপজেলার কোনো কৃষক এই নিয়মের তোয়াক্কা করছে না। ফলে স্নায়ু, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় এর প্রভাব দেখা না দিলেও ধীরে ধীরে আক্রান্ত হচ্ছে তারা।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলে প্রত্যেক বছর রবি মৌসুমে ১৮৫০ হেক্টর, খরিপ-১ মৌসুমে ৮ শত হেক্টর ও খরিপ-২ মৌসুমে ২৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ হয়ে থাকে। এছাড়া আউশ মৌসুমে ৬ হাজার ৬০০ হেক্টর, আমন মৌসুমে ২৫ হাজার ৫০০ হেক্টর ও বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়ে থাকে। আর এসব চাষাবাদের সাথে জড়িত রয়েছে ৫২ হাজার ২০০ জন কৃষক। কৃষক পরিবার রয়েছে ৬৪ হাজার। কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন সময় নিবন্ধিত কৃষকদের জমিতে কিটনাশক প্রয়োগ বিধির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কিন্তু এই প্রয়োগ বিধি মানছে না কোনো কৃষক। প্রয়োগ বিধি না মেনে প্রকাশ্যে জমিতে কিটনাশক প্রয়োগ করায় বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কৃষক ও তাদের পরিবার।
উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি সুভারভাইজার কনিকা রানী মজুমদার বলেন, আমরা সব সময় কৃষকদের জমিতে কিটনাশক ব্যবহারে সঠিক প্রয়োগে সচেতন হওয়ার জন্য বলে থাকি। কিন্তু কৃষকরা আমাদের নির্দেশনা মানছে না।
উপজেলা কৃষি সহকারী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, জমিতে যে কিটনাশক প্রয়োগ করা হয় তা খুবই বিষাক্ত। জমিতে কিটনাশক প্রয়োগের সময় মুখে মাক্স, হাতে গøাভস, চোখে চশমা ও শরীরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক পরিধান করার নিয়ম রয়েছে। কৃষি অফিসের উদ্যোগে কিটনাশক প্রয়োগ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ নিয়ে কৃষকদের সচেতনা বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে ৯নং মীরসরাই সদর ইউনিয়নের ৪নং গড়িয়াশ গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান ক্ষোভের সহিত অভিযোগ করেন কৃষি অফিস থেকে নিরাপদ কিটনাশক ব্যবহারে কোনো প্রশিক্ষণ আমাদেরকে দেয়া হয় না। ফলে আমাদের পরিবারগুলো নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এদিকে কীটনাশক ব্যবহারের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা পোশাক পরিধান না করায় বিভিন্ন দীর্ঘ মেয়াদী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কৃষকরা। যদিও প্রাথমিক অবস্থায় এর প্রভাব বোঝা যায় না। পরে ধীরে ধীরে শরীরে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, মাথা ব্যাথা ও চর্মরোগ দেখা দেয় বলে জানান বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন