শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

খাদের কিনারায় রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। যারা গত মৌসুমের আগপর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে ছিল অপ্রতিরোধ্য। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতাটির টানা তিনটি শিরোপা যার হাত ধরে এসেছে, সেই জিদানের দলের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগে ম্যানচেস্টার সিটি পেয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি। এত চাপের মাঝে পরশু শুরুতে পিছিয়েও পড়ে ইংলিশ ক্লাবটি। তবে হার মানেনি, ঘুরে দাঁড়িয়ে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু থেকে ২-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে ম্যান সিটি। লিগের শেষ ষোলোর ড্র ভাগ্যে অলিম্পিক লিওঁকে পেয়ে খুশিই হওয়ার কথা জুভেন্টাসের। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে অন্তত বড় দলকে তো এড়ানো গেছে। কিন্তু মাঠের ফুটবলে একই দিনে উল্টো চিত্র দেখলো ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। জয়েরক্ষুধায় নিজেদের প্রমাণে প্রাণপণ লড়ে যাওয়া লিওঁ ইতিহাস লিখলো তাদের ১-০ গোলে হারিয়ে। ফিরতি লেগ ঘরের মাঠে হওয়ায় আশার পালে হাওয়া লাগছে জুভেন্টাসের।

অনেক ঘটনার জন্ম দিয়েছে রিয়াল-ম্যান সিটির শেষ ষোলোর লড়াইয়ের প্রথম লেগ। ইনজুরিতে প্রথমার্ধেই আইমেরিক লাপোর্তের ছিটকে যাওয়া, ম্যান সিটির পেনাল্টি এবং রিয়ালের হারের ধাক্কার আগে সের্হিয়ো রামোসের লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়া। তবে সবকিছু ছাপিয়ে নতুন ইতিহাস লিখেছে পেপ গার্দিওলার দল। গাব্রিয়েল জেসুস ও কেভিন ডি ব্রæয়েনের গোলে সিটিজেনরা চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথমবার হারিয়েছে রিয়ালকে।

ম্যাচের ২১তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু জেসুসের নেওয়া বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। মিনিট দশেক পর গোলবঞ্চিত রিয়াল। করিম বেনজিমার হেড একেবারে গোললাইনের সামনে থেকে ফেরান সিটি গোলকিপার এদেরসন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরেকবার হতাশ হতে হয় সফরকারীদের। এবার গোলকিপার নয়, গোললাইন থেকে বল ফেরান কাসেমিরো।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে গোলশ‚ন্য প্রথমার্থ শেষে দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিটে আসে প্রথম গোল। ম্যাচের ৬০ মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেন ইসকো। ফাঁকায় পাওয়া বলের সুবিধা নিতে এতটুকু ভুল হয়নি স্প্যানিশ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের। ভিনিসিয়ুসের পাস ধরে বক্সের ভেতর থেকে বল জড়িয়ে দেন জালে। তাতে এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে মাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর গ্যালারি।

যদিও সেই উৎসব আহ্বান হয়ে যেতে সময় লাগেনি। ১৮ মিনিট পর ম্যান সিটিকে সমতায় ফেরান জেসুস। বক্সের ভেতর ডি ব্রুয়েনের ক্রস থেকে হেডে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। মিনিট পাঁচেক পর এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে মাতে সফরকারীরা। নিজেদের সীমানায় দানি কারভাহাল ফাউল করেন রাহিম স্টার্লিংকে, তাতে পেনাল্টি পায় ম্যান সিটি। স্পট কিক থেকে লক্ষ্যভেদ করতে কোনও অসুবিধাই হয়নি ডি ব্রুয়েনের। রিয়ালের ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে আসে রামোসের লাল কার্ড। জেসুসকে ফাউল করার সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়াল অধিনায়ককে। এখন তাকে ছাড়াই খেলতে হবে ইতিহাদের দ্বিতীয় লেগ।
একই দিনে পার্ক অলিম্পিক লিওঁর ম্যাচের প্রায় পুরো সময়ই দাপট দেখিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি। লিগ ওয়ানে বাজে সময় কাটানো লিওঁ চ্যাম্পিয়নস লিগের বড় মঞ্চে গর্জে ওঠেছিল। শুরু থেকে সফরকারী রক্ষণে চাপ প্রয়োগ করে। একবার বারে লেগে গোলবঞ্চিত হলেও সেই আক্ষেপ জুড়ায় তারা ৩১ মিনিটে, যখন লুকাস তোসার্তের গোলে গ্যালারিতে ওঠে সমুদ্রের গর্জন। বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে যান হোসেম অয়ার। তার ক্রস থেকে বাঁ পায়ের ভলিতে জাল খুঁজে পান তোসার্ত। এটাই এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে তার প্রথম গোল।

এই গোলের পর আরও প্রায় এক ঘণ্টা সময় পেলেও সমতা ফেরাতে পারেনি জুভেন্টাস। শেষ বাঁশি বাজার মিনিট তিনেক আগে পাউলো দিবালা বল জালে জড়ালেও অফসাইডে বাতিল হয়ে যায় সেটি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন নিষ্প্রভ। অবাক করা ব্যাপার হলো, তিনি একাদশে থাকার পরও গোটা ম্যাচে একবারও গোলমুখে শট নিতে পারেনি জুভেন্টাস! বল পজেশন (৬৪ শতাংশ) ও পাস বেশি খেললেও গোলের সামনে অসহায় ছিল জুভেন্টাসের আক্রমণভাগ। কিন্তু কেন এমন হাল বিশ্বের অন্যতম সেরা আক্রমণভাগের? ব্যাখ্যা নেই জুভেন্টাস কোচ মাউরিজিও সারির কাছে, ‘কেন? এই ব্যাখ্যা দেওয়া কঠিন। তবে এটা বলতে পারি প্রথমার্ধে আমরা বল আদান-প্রদানে মন্থর ছিলাম, যে কারণে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারিনি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন