বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশে মোাদির আগমন রুখতে হবে

দিল্লিতে হত্যা, মসজিদ ভাঙচুরের প্রতিবাদ মিছিলে জনতার দাবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৪ এএম

ভারতের দিল্লিতে মুসলমানদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা, হত্যা, মসজিদ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে এবং নরেন্দ্র মোদীর রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিলের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে তৌহদি জনতা। সমাবেশে অংশ নেয় লাখ লাখ মুসল্লি।
ভারতীয় মুশরিকদের হাতে নিহত মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ শহীদ উল্লেখ করে বক্তারা এসময় বলেন, যে মুসলমানরা নিজেদের রক্ত ঢেলে দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করেছে, আইন করে সেদেশের মুসলমানদেরকে বিতাড়িত করা যাবে না। মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে হত্যা করে মসজিদ ভেঙে মুসলমানদেরকে দমন করা যাবে না। উপরন্তু মুসলমানদের ওপর দমননীতি হবে বিজেপি সরকারের পতনের কারণ। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এক দেহের মত দাবি করে বক্তারা বলেন, কোন দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করা আভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে না। এসব ঈমান বিধ্বংসী ধারণা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। এসময় সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবি করে বক্তারা বলেন, মোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে দেওয়া হবে না। কারন মোদির হাত মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত। সরকার মোদিকে যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তা যেন ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া জেলা উপজেলায় মসজিদের খুতবায়ও এ হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে জানান, নরসিংদী জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। তানযীমুল মাদারিসিল কওমিয়া এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী। প‚র্বঘোষিত কর্মস‚চি অনুযায়ী তানজিমের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নরসিংদী পৌরসভা এলাকায় সমবেত হয়। সেখান থেকে বিক্ষোভে সংগঠিত হয়ে নরসিংদী শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ শেষে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে গিয়ে এক সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে বক্তৃতা করেন, খেলাফত মজলিসের আমীর আল্লামা ইসমাইল নুরপুরী, মাওলানা শওকত হুসাইন সরকার এবং মাওলানা ইলিয়াস শেরপুরী। আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরী বলেন, যে মুসলমানরা নিজেদের রক্ত ঢেলে দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা অর্জন করেছে, আইন করে সেদেশের মুসলমানদেরকে বিতাড়িত করা যাবেনা। যে মুসলমানরা ১২শ› বছর দিল্লি শাসন করেছে, সেসব মুসলমানরা এখনো দিল্লি শাসন করার ক্ষমতা রাখে। মুসলমানদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে হত্যা করে মসজিদ ভেঙে মুসলমানদেরকে দমন করা যাবে না। উপরন্তু মুসলমানদের ওপর দমননীতি হবে বিজেপি সরকারের পতনের কারণ।
এদিকে, নরসিংদী জেলা শহরের ব্রাহ্মন্দী জামে মসজিদের খতিব, জামেয়া কাসেমিয়ার মুহাদ্দিস, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা নাজমুল ইসলাম বলেছেন ভারতীয় মুশরিকরা বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মত দুনিয়া কাঁপানো ঘটনার পরও সাজানো বিচারালয় থেকে আইনী ভাবে বেঁচে গেছে। আর এরই ফলশ্রæতিতে এখন আবারও নতুন করে মসজিদ ভাঙা শুরু করেছে। মসজিদে মসজিদে হামলা চালিয়ে ইমাম ও মুসল্লীদেরকে হত্যা করছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সারা পৃথিবীর মুসলমানরা এক দেহের মত। কোন দেশের মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করা আভ্যন্তরীণ ব্যাপার হতে পারে না। এসব ঈমান বিধ্বংসী ধারণা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতা জানান নীলফামারীতে জুম্মা নামাজ শেষে হাজারো মুসল্লি শহরের স্মৃতি অ¤øান পাদদেশে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। শহরের বড় মসজিদের ইমাম আশরাফুল হক নূরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, সামছুল আরেফীন, রফিকুল ইসলাম, মোকারোম হোসেন সাইদি, হাবিবুল্লাহ বেলালী প্রমূখ। শেষে সেখানকার মুসলমানদের হেফাজতের জন্য দোয়া করা হয়।
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা জেলা শহরের বড় বাজারস্থ জামে মসজিদের সামনে থেকে খেলাফত যুব আন্দোলণের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশটি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে শহীদ মিনারের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে দিল্ল্েিত এই নৃশংস হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের জোর দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন খেলাফত যুব আন্দোলনের জেলা আমীর গাজী আব্দুর রহিম, মাওলানা হাবিবুল্লাহ খান, মাওলানা আবু সালেহ্, মাওলানা জাকারিয়া, মাওলানা মোস্তফা জেহাদী, হাফেজ আব্দুল মোতালিব প্রমূখ।
পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তৌহদি জনতা। গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ মিছিলে বাউফল পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদের কয়েক শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহন করেন। মিছিলটি গোলাবাড়ী শাহী মসজিদ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাহী মসজিদের খতিব মাও.আব্দুর রহমান,আল মদিনা মসজিদের খতিব মাও. আল আমিন, জনকন্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরুজ্জামান বাচ্চু, প্রথম আলোর এবিএম মিজানুর রহমান, নয়াদিগন্তের আসাদুজ্জামান সোহাগ বক্তব্য রাখেন।
বাউফল (পটুয়াখালী ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তৌহদি জনতা। আজ শুক্রবার বাদ জুম্মা অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ মিছিলে বাউফল পৌরসভার বিভিন্ন মসজিদের কয়েক শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ গ্রহন করেন। মিছিলটি গোলাবাড়ী শাহী মসজিদ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে উপজেলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাহী মসজিদের খতিব মাও.আব্দুর রহমান,আল মদিনা মসজিদের খতিব মাও. আল আমিন, জনকন্ঠের নিজস্ব সংবাদদাতা কামরুজ্জামান বাচ্চু, প্রথম আলোর এবিএম মিজানুর রহমান, নয়াদিগন্তের আসাদুজ্জামান সোহাগ বক্তব্য রাখেন।
শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ভারতের নিরীহ মুসলমানদের উপর ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বর হত্যাযঞ্জ বন্ধ করতে মোদীর সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলনের সভাপতি আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হাসান পীর সাহেব বাহাদুরপুর। তিনি ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্যাতিত মুসলমানদের জান-মালের হেফাজতের জন্য মসজিদে মসজিদে বিশেষ দুয়া পরিচালনা করতে দেশের সকল ইমাম-খতীবদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। এছাড়া গতকাল গতকাল শিবচর বাইতুন নুর জামে মসজিদে মুফতী সাঈদ আহমাদ উসমানী সহ বিভিন্ন মসজিদের খতীবগণ ভারতের নিরীহ মুসলমানদের উপর জুলুম নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান ও নির্যাতিত মুসলমানদের জান-মালের হেফাজতের জন্য বিশেষ দুয়া পরিচালনা করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ (না:গঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইলে বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ করেছে মুসল্লিরা। আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুয়ত বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ সংগঠনের উদ্দ্যোগে গতকাল জুমআ’র নামাজের পর এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে দেওয়া হবে না। কারন মোদির হাত মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত। সরকার মোদিকে যে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তা যেন ফিরিয়ে নেওয়া হয়। মোদি যদি আসে-কি হবে জানি না।
গণবিক্ষোভের প্রধান বক্তা মাওলানা মুফতি বশীর উল্লাহ বলেন, আসামে এনআরসির নামে ৪০ লাখ মানুষকে বাস্তুহারা করা হয়েছে। আর সারা ভারত থেকে মুসলিম নিধনের অংশ হিসেবে দিল্লিতে মুসলমানদের উপর হামলা ও গণহত্যা করা হচ্ছে। আমাদের মন্ত্রীরা বলছেন এসব ভারতের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু আমরা বলতে চাই সেখানে শুধু মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে। মসজিদে আগুন দেওয়া হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় পুলিশ এতে সহযোগিতা করছে। এতে আমরা কি বুঝতে পারি ? ভারতে যখন মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে তখন পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে ভারতের মুসলমানদের রক্ষা করা আমাদের ফরজ হয়ে গেছে। সমাবেশে আরোও বক্তব্য রাখেন, মাওলানা ফয়সাল আহম্মেদ জালালাবাদী, মাওলানা জাফর আহম্মেদ, মাওলানা খালেদ প্রমূখ ।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বিক্ষোভ আর প্রতিবাদ মিছিলে উত্তাল শ্রীমঙ্গলের রাজপথ। শুক্রবার বাদ জুমআ বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ্ ও তালামীযে ইসলামিয়ার উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল জামে মসজিদ থেকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌমুহনা পয়েন্টে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আল ইসলাহ সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মো. নাছির উদ্দিন’র সভাপতিত্বে ও তালামীয সভাপতি ছাত্রনেতা সোহাগ আহমদ’র পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আল ইসলাহ যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো. রাশিদ আলী, আল ইসলাহ উপলাজেলা র্নিবাহী সদস্য ও সাবেক পৌর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জসিম, আল ইসলাহ পৌর শাখার যুগ্ন সাধারন সম্পাদক জননেতা ফয়েজ আহমদ’সহ প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন