শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ইটভাটায় বিদ্যুৎ টাওয়ার ও গ্যাস লাইন

অবাধে কাটা হচ্ছে তিতাস নদীর পাড়

খ আ ম রশিদুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

ইটভাটার ভেতরেই জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুত টাওয়ার ও গ্যাসের জাতীয় সঞ্চালন লাইন। শুধু তাই নয়, সরাইলের শাহবাজপুরে ইটভাটা মালিকরা ভেকু দিয়ে তিতাস নদীর পাড় কেটে মাটি তুলছে ভাটায়। আবার কোন কোন অংশে দেদারসে নদী ভরাট করে চলছে ভাটা সম্প্রসারণ কাজ।
পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া দিব্যি চলছে এসব ইটভাটা। প্রশাসনের বিধিনিষেদেরও তোয়াক্কা নেই। প্রশাসন সীলগালা করে দিয়েছে এমন ইটভাটাও সচল। শাহবাজপুর মৌলভীবাজারের পশ্চিম পাশে তিতাস নদীরপাড়ে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। এসব ইটভাটার মধ্যে মেসার্স আমিন এন্ড কোম্পানি, মেসার্স বলাকা এন্ড কোম্পানি এবং মেসার্স রানা এন্ড কোম্পানির মালিক মো. মিজানুর রহমান।
পরিবেশ অধিদপ্তর এবং সরাইল উপজেলা প্রশাসন সুত্র জানায়, ভাটাগুলোর মধ্যে আমিন এবং বলাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র নেই। আর কোন রকম কাগজপত্র বা অনুমতি ছাড়াই মিজানুর রহমান রানা নামে আরেকটি ভাটা চালাচ্ছেন।
জানা যায়, এর আগে মিজানুর রহমানের মেসার্স মিজান ব্রিকস এন্ড কোম্পানি নামের একটি ভাটা ছিলো। ২০১৭ সালে ছাড়পত্র না থাকায় এই ভাটাটিকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা পরিশোধ না করে এখন রানা নামে নতুন ওই ভাটা চালু করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স শুধু পুঁজি। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এস.এম. মোসা জানিয়েছেন, অবৈধভাবে পরিচারিত দুটি ইটভাটার বিরুদ্ধেই তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ওই ভাটা মালিককে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তীতে ১২ ফেব্রুয়ারি ভাটাটি সীলগালা করে দেয়া হয়। ২৪ ফেব্রুয়ারি সরেজমিনে দেখা যায়, মিজানের মালিকানাধীন তিনটি ভাটা চালু অবস্থায় রয়েছে। এসব ভাটার মাঝখানে রয়েছে কয়েকটি জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুতের টাওয়ার। গ্যাসের সঞ্চালন লাইন গেছে ভাটার ভেতর দিয়ে। নদী পাড়েরও সর্বনাশ করছেন এই ভাটা মালিকসহ আরো কয়েকটি ভাটার মালিক। মিজানুর রহমান বলেন, কোন ভাটারই সঠিক কাগজপত্র নেই। নদী দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে ভাটা মালিক বলেন, বিদ্যুতের টাওয়ার ও গ্যাসের লাইন তার জমির ভেতর দিয়েই গেছে। পাশের আমানত ব্রিকস ফিল্ডের মালিক নদীর পাড় ভেকু দিয়ে কেটে মাটি উঠাচ্ছেন। আবার নদী ভরাট করছেন তারা। সরাইল উপজেলার ৪৪টি ইটভাটার মধ্যে কয়েকটি চলছে বৈধভাবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে ৮টি ছাড়া ৩৫টি ভাটাই অবৈধ ভাবে চলছে। কাগজপত্র ছাড়াই চলছে কালীকচ্ছের মেসার্স রিফান ব্রিকস, মেসার্স নিউ সফল ব্রিকস, মেসার্স আজম ব্রিকস, মেসার্স আজম ব্রিকস-২, মেসার্স ২২২ ব্রিকস, মেসার্স আর এস পি ব্রিকস, মেসার্স পিবিসি ব্রিকস, মেসার্স নিউ আশা ব্রিকস, মেসার্স রূপালী ব্রিকস এন্ড কোম্পানি, মেসার্স এইচ এম এস ব্রিকস, মেসার্স সানু মিয়া ব্রিকস, মেসার্স মঈন ব্রিকস, মেসার্স এশিয়া ব্রিকস, শাহবাজপুরের মেসার্স ইউনিয়ন ব্রিকস লিমিটেড, মেসার্স আমানত ব্রিকস (আহাদ), মেসার্স আমানত ব্রিকস-২, শাহবাজপুর বড়ধীতপুরের মেসার্স আমানত ব্রিকস, মেসার্স আমিন এন্ড কোম্পানি, মেসার্স মদিনা এন্ড কোম্পানি, রাজাবাড়িয়াকান্দির মেসার্স নিহাদ ব্রিকস, মেসার্স রয়েল ব্রিকস, মেসার্স সুবর্ন ব্রিকস, মেসার্স নিউ মায়ের দোয়া ব্রিকস, মেসার্স দেশ ব্রিক ফিল্ড, কুন্ডা লোপাড়ার মেসার্স মা বাবা ব্রিকস, শাখাইতি দেওবাড়িয়ার মেসার্স মেঘনা ব্রিকস, মেসার্স ভৈরব ব্রিকস, মেসার্স পিভিসি ব্রিকস, মলাইশের মেসার্স নিউ কল্যান ব্রিকস কোম্পানি লিমিটেড, নোয়াগাওয়ের মেসার্স এস আর ব্রিকস, মেসার্স এইচ এম এস ব্রিকস, মেসার্স সানু মিয়া ব্রিকস, দেওড়া নিয়ামতপুরের মেসার্স নিউ ফাইভ স্টার ব্রিকস, দেওড়ার মেসার্স জনপ্রিয় ব্রিকস, শাহজাদাপুরের মেসার্স নিউ সমতা ব্রিকস এন্ড কোম্পানি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, শাহবাজপুরের ওই ইটাভাটাগুলো পরিদর্শন করেছি। নদীর পাড় দখলমুক্ত করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া যেসব ইটভাটার কোন কাগজপত্র নেই সেগুলো অবৈধভাবে চলছে। তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন