পাশাপাশি বসে হাসিমুখে কুশল বিনিময় করলেন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও ধানের শীষের প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল রোববার নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠানে সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং মাঠের বিরোধী দল বিএনপির মেয়র প্রার্থীর মধ্যে এ কুশল বিনিময় হয়। মেয়র পদের প্রতিদ্ব›িদ্বতায় এ দুজনসহ সাত প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান। নয় প্রার্থীর মধ্যে দু’জন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ৫৫টি কাউন্সিলর পদে ২৭৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষিত হয়।
শুরুতে দাখিল করা নথিপত্র সঠিক থাকায় সাত মেয়র প্রার্থীর প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, পিপলস পার্টির আবুল মনজুর, ইসলামিক ফ্রন্টের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও ইসলামী আন্দোলনের মো. জান্নাতুল ইসলাম। স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী তানজীর আবেদিন ও খোকন চৌধুরীর জমা দেওয়া ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকায় গরমিল থাকায় তাদের প্রার্থীতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তবে বাদ পড়া প্রার্থীদের জন্য আগামী ৩ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
মেয়র পদে মনোনয়ন পত্র বাছাই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত হন। শুরুতে কুশল বিনিময় করেন রেজাউল করিম ও ডা. শাহাদাত হোসেন। এরপর তারা অনুষ্ঠানের প্রথম সারিতে পাশাপাশিই বসেন। এসময় দুই মেয়র প্রার্থীই ছিলেন হাসিমুখে। তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তাও বলেন।
এ বিষয়ে ডা. শাহাদাত পরে সাংবাদিকদের বলেন, উনাকে বলেছি এটা আমাদের দুজনেরই প্রথম মেয়র নির্বাচন, আমরা যেন একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন করতে পারি। রেজাউল করিমের রাজনৈতিক জীবন অর্ধ শতাব্দীর বেশি। আমিও ৩০ বছরের বেশি সময় রাজনীতিতে আছি। আমরা দুজন মিলে যদি জনগণকে ভোটকেন্দ্রমুখী না করতে পারি, তাহলে আমাদের এত দীর্ঘ সময়ের রাজনীতির কিই বা দাম আছে।
রেজাউল করিম চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, বিএনপি প্রার্থীর সাথে সৌজন্যমূলক কথা হয়েছে। তিনি আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। এমনি আলাপ হয়েছে, তবে ভোট নিয়ে কোনো কথা হয়নি। প্রতিদ্ব›দ্বী প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থীর হাসিমুখে কুশল বিনিময় এবং দীর্ঘক্ষণ পাশাপাশি বসার এমন দৃশ্যে খুশি উপস্থিত বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ভোটের মাঠে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক। অন্যদিকে ডা. শাহাদাত মহানগর বিএনপির সভাপতি।
কাউন্সিলরে বৈধ ২৭৯ জন
৪১টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে নয়জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। তবে সংরক্ষিত ১৪টি মহিলা কাউন্সিলর পদে কোনো প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়নি। বাছাই শেষে কাউন্সিলর পদে ২৭৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তারা আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ পাবেন। আগামী ৯ মার্চ প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ মার্চ। এবারের চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন, সংরক্ষিত ১৪টি কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন এবং ৪১টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২২০ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন