শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত জাবি ভিসি

জাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২০, ৬:৫৬ পিএম

ভিসি অপসারণের দাবিতে তীব্র আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদের আরও একটি বছর পার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।

দেশের প্রথম নারী ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এ পর্যন্ত মোট ছয় বছর জাবি ভিসির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এই দায়িত্ব পালন কালে প্রথম মেয়াদের ৪ বছর শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করেন। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ভিসি প্যানেল নির্বাচনের দাবি, অধিকতর উন্নয়ন পকল্পে দুর্নীতির তদন্তের দাবি, সর্বশেষ ভিসি অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলছে ক্যাম্পাসে।

এমন অবস্থায় দ্বিতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বর্ষ পূর্তিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, অফিসার, কর্মচারি ও ছাত্র-ছাত্রীগণ তাঁকে ফুল দিয়ে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এই সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন, সকলে তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

দায়িত্ব পালনের ৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভিসি তাঁর অনুভূতি ব্যক্তকালে উপাচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর জনাব আবদুল হামিদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব এবং ইউজিসির চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাঁদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

ভিসি বলেন, আমি উপাচার্যের দায়িত্ব পালনে ‘একযোগে চলার’ নীতিতে বিশ্বাস করি। এ লক্ষ্যে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের কথা শুনি। অবশিষ্ট সময়ের দায়িত্ব পালনকালেও এ ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

ভিসি তাঁর সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, বিগত অর্থবছরে কয়েকটি অসম্পন্ন কাজসহ উল্লেখযোগ্য নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণমূলক কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ১৩৯টি উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩৫টি কাজের শতভাগ শেষ হয়েছে। বাকী কাজগুলো গড়ে ৯৮% ভাগ সম্পন্ন হওয়ার পথে।

ভিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে বলেন, প্রায় সাড়ে ১৪শত কোটি টাকা ব্যয়সংবলিত “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন” শীর্ষক একটি প্রকল্প-প্রস্তাব ২০১৮ সালে সরকার অনুমোদন করে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় উন্নয়ন বাজেট।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১০-তলা বিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, ১০০০ জন ছাত্র ও ১০০০ জন ছাত্রীর জন্য ৩টি করে ১০-তলা বিশিষ্ট মোট ৬টি হল, বিভিন্ন হলের হাউজ টিউটরদের জন্য ১০-তলা বিশিষ্ট ১টি বাসভবন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের উত্তর ব্লকের ৪র্থ ও ৫ম তলা নির্মাণ, ১০-তলা বিশিষ্ট ১টি প্রভোস্ট কমপ্লেক্স, শিক্ষক ও অফিসারদের জন্য ১টি করে ১১-তলা বিশিষ্ট আবাসিক টাওয়ার, তৃতীয় শ্রেণি, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য ১টি করে ১১-তলা বিশিষ্ট আবাসিক টাওয়ার, ১০-তলা বিশিষ্ট ১টি গেস্ট হাউজ কাম পোস্ট গ্রাজুয়েট গবেষক হাউজ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, কলা ও মানবিকী অনুষদ ও গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ ভবনের আনুভূমিক সম্প্রসারণের জন্য ৬-তলা বিশিষ্ট ৪টি নতুন ভবন, ৬-তলা বিশিষ্ট ১টি লেকচার থিয়েটার এবং পরীক্ষা হল, ৬-তলা বিশিষ্ট ১টি লাইব্রেরি ভবন এবং ৩-তলা বিশিষ্ট ১টি স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এই প্রকল্পে আরও প্রস্তাব করা হয়েছেÑ জহির রায়হান মিলনায়তনের মডিফিকেশন, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চের উন্নয়ন, ছাত্রীদের জন্য একটি খেলার মাঠ এবং আল-বেরুণী হলের খেলার মাঠের উন্নয়ন।

এছাড়াও, প্রকল্পটিতে ১টি মিনিবাস, ১টি ডাবল কেবিন পিক-আপ, ২টি এ্যাম্বুলেন্স, গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ, অফিস আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক লাইন সম্প্রসারণ এবং ২২টি ট্রান্সফরমার স্থাপন, পানির লাইন সম্প্রসারণ ও ১০টি গভীর নলকুপ স্থাপন, ব্রিজ ও ড্রেনসহ অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

উপাচার্য তাঁর অভিব্যক্তিতে আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানের নব নব ক্ষেত্র আবিষ্কার ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষার অন্বেষণে সদা ব্যাপৃত থাকবেন, এটি সকলের প্রত্যাশা। আমরা প্রতিষ্ঠানে পরমত-সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, যুক্তি ও ন্যায় ভিত্তিক ভাবনা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অনুশীলনে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে চাই।

প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম-এর ২০১৮ সালের ২ মার্চ তিনি ৪ বছরের জন্য দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্বগ্রহণ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন