শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দেশের ৯০ ভাগ তৌহিদী জনতা মোদির সফরের বিরোধী

ইসলামী ঐক্যজোটের কাউন্সিলে ড. মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের ৯০ভাগ তৌহিদী জনতা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধীতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি মোদির বাংলাদেশ সফর পুনর্বিবেচনা করার আহŸান জানিয়ে বলেন, ভারতের প্র্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসবেন-আমরা ওয়েলকাম করি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যাবে- এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক। কিন্তু কখন আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী? যখন ভারতের হিন্দুদের দ্বারা মুসলমানদেরকে হত্যা করা হচ্ছে, মসজিদকে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে, যখন বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী ঐক্যজোটের জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, এতো বিরোধিতার পরেও যদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসেন, এই সরকার যেমন জনগণকে কোনো ভ্রচক্ষপ করলো না সেটা প্রমাণিত হবে। আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীরও চিন্তা করা উচিত বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমান যে দেশের অধিবাসী, সেই তৌহিদী জনতা আমার বাংলাদেশ সফরকে সমর্থন করছে না, বিরোধিতা করছে সেখানে আমি কেনো যাই? সেই বিবেচনা তো ভারতের প্রধানমন্ত্রীরও করা উচিত।

গত মঙ্গলবার সকালে কারাগারে পাঠানো পিরোজপুরের সরকার দলীয় এক এমপি ও তার স্ত্রীকে বিচারক বদলের পর বিকালেই জামিনের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, সরকারের হস্তক্ষেপে আদালতগুলো ‘ফরমায়েসী রায়’ দিচ্ছে। আজকে সরকারের যে ফরমায়েস, সেই ফরমায়েসী রায় দিচ্ছে আদালতগুলো। সর্বশেষ ঘটনা ঘটেছে পিরোজপুর আদালতে। আওয়ামী লীগের সাবেক একজন এমপি তিনি আবার জেলার সভাপতি তার বিরুদ্ধে এই সরকারের দুর্নীতি দমন কমিশন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মামলা করেছে। তিনি হাইকোর্ট থেকে অগ্রীম জামিন নিয়েছিলেন কিন্তু তাকে গিয়ে জজ কোর্টে হাজির হতে হবে। আমাদের বিএনপি, জামায়াত বা যেকোনো কারো বিরুদ্ধে এই ধরনের মামলা থাকলে সঙ্গে সঙ্গে জেলে।একই নিয়মে জজ জামিন বাতিল করে জেলে পাঠিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, চিন্তা করেন কীভাবে যোগাযোগ হয়েছিলো ঢাকার সাথে, আইন মন্ত্রণালয়ের সাথে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বদলি করে দিয়ে ওই জেলা জজ পরে যে এডিশনাল জেলা জজ তাকে দিয়ে ওই দুইকে জামিন দেয়া হয়েছে। আজকে বিচার বিভাগ শেষ আশ্রয় স্থলে কাছে গিয়েও এই দেশের মানুষের বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কোনো আশা-ভরসা নেই।নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। তারা (সরকার) শুধু নিজের স্বার্থে যা ইচ্ছা তাই করবে, দেশের মানুষ মুখ বুঝে সহ্য করবে-এটা বেশি দিন চলতে পারে না।”

দেশের ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে সব দিকে আমরা একটা পোস্টের কাছে জিম্মি। কে জামায়াতে ইসলাম করে, কে চরমোনাই করে, কে শফি সাহেবের হেফাজত করে, কে ইসলামী ঐক্যজোট করে। আমার বিশ্বাস এদেশের মুসলমানদের ঈমান-আকিদা এবং আমাদের অধিকারকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। এই লক্ষ্যে ইসলামী ঐক্যজোট বহুদিন যাবত আমাদের সাথে কাজ করছে, আমি তাদের কাজের প্রশংসা করি। তাদের এই কাজকে আরো শক্তিশালী করে এই দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধার, মানুষের ঈমান-আকিদা রক্ষার জন্য আপনারা সকলে একসঙ্গে কাজ করবেন। তার সাথে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল আপনাদের সাথে আমরা থাকবো।

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ইসলামী ঐক্যজোটের এই জাতীয় কাউন্সিল-২০২০ হয়। সম্মেলনে মাওলানা আবদুর রকিবকে চেয়ারম্যান ও মাওলানা আবদুল করিম খানকে মহাসচিব পদে পুনঃনির্বাচিত করে ৬১ সদস্যের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রকিব অ্যাডভোকেটের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান মাওলানা আজহারুল ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল করিম খান, কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আলম চৌধুরী, সৈয়দ মুহা. আহসান, শওকত আমিন, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক উবায়দুর রহমান খান নদভী, মো. ইলিয়াস আতাহারী, আনোয়ার হোসাইন আনসারী, আনম রহিম উল্লাহ প্রমুখ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন