বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

অর্থ লেনদেন পরিষেবায় নগদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশে ইসলামপুরের রকমারী কাপড়ের দোকানগুলোর দিকে সহজেই চোখ চলে যায়। তবে যে দোকানটি এখন সবচেয়ে বড় পাইকারি কাপড়ের বাজার ইসলামপুরে ক্রেতাদের সর্বাধিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে, সেটি বাকি দোকানগুলো থেকে একেবারেই আলাদা। দোকানের সামনে মোবাইল ফোন হাতে আল্পবয়সীদের একটি দীর্ঘ সারি। তারা ধৈর্য নিয়ে অপেক্ষা করে দোকানীর মাধ্যমে বিবর্ণ টাকাগুলি তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা করার জন্য।

প্রায় এক দশক আগে বাংলাদেশে শুরু হওয়া মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেনের পরিষেবা শিল্পে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে ’বিকাশ’। এটি এত ভাল করেছে যে সংস্থাটির নামই পরিষেবাটির নামে পরিণত হয়েছে, মন্তব্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ বীরুপক্ষ পলের। তিনি বলেন, ”পাঠানোর পরিবর্তে বাচ্চারা বলে, আমি আপনাকে কিছু টাকা বিকাশ করব। ” পল যখন প্রথম শুনলেন যে, নগদ নামে আরও একটি নতুন সংস্থা এই ব্যবসায় প্রবেশ করছে, তখন তিনি সন্তুষ্ট হন এই ভেবে যে, শেষ পর্যন্ত একটি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। কিন্তু নগদের সাফল্য একেবারে বিপরীত চিত্র নিয়ে এসেছে।
মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেণ বাংলাদেশে একটি বড় ব্যবসা। তিন-চতুর্থাংশ বাংলাদেশিদের প্রত্যেকের একটি করে মোবাইল ফোন রয়েছে। তবে অর্ধেকেরও কম অংশের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে পাড়ি জমানোরা গ্রামে টাকা পাঠাতে আগ্রহী হলেও অনেক জায়গাতেই ব্যাংকের অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিডবিøউসি-র পরামর্শদাতা মামুন রশিদ। তিনি বলেন, এমনকি রাজধানী ঢাকার যানজটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা পাঠানোই বরং বেশি অর্থবহ।

২০১৯ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৫হাজার ১শ’ কোটির টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে যা ২০১৬ সালে ছিল ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা। এর ৬০ শতাংশই ব্র্যাক ব্যাংকের মালিকানাধীন বিকাশের মাধ্যমে হয়েছে যা কিছু আমেরিকান দাতব্য সংস্থা, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং চীনের বিশাল ই-বাণিজ্য সংস্থা আলিবাবার অনুমোদনে চলে। এর ৩ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে।

তবে নগদ এই খাতে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একবছর আগে এর উদ্বোধনের পর থেকে এর লভ্যাংশের পরিমাণ বেড়ে একদিনে ১ শ’ কোটি টাকায় দাড়িয়েছে, যা বিকাশের মোট লভ্যাংশের ৭ ভাগের এক ভাগ। কাগুজে হিসাব অনুযায়ী এটি বিকাশের চেয়ে অনেক বেশি গ্রাহক অর্জন করেছে যা প্রায় ৬ কোটি। তাদের মধ্যে অনেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সদস্য হয়ে গেছেন হয়ে গেছেন, মোবাইল ফোন পরিষেবা সংস্থা রবির সাথে নগদের একটি চুক্তির কল্যানে।

নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মিশুক সংস্থাটির সাফল্যের ৩টি কারণ উল্লেখ করেছেন। প্রথমত, এটি জটিল এবং ব্যয়বহুল কাগজ-ভিত্তিক নিবন্ধীকরণ এবং মোবাইল ফোনে অর্থ লেনদেন পরিষেবা সংক্রান্ত অন্যান্য সংস্থাগুলির দ্বারা ব্যবহৃত অর্থ পাচার রোধকারী চেকগুলি সহজতর করেছে। দ্বিতীয়ত, প্রতি ১শ’ টাকায় বিকাশ যেখানে ১ টাকা ৮৫ পয়সা নেয়, নগদ সেখানে ১ টাকা ৪৫ পয়সা নেয়। তৃতীয়ত, ’নগদ’ মিশুকের সংস্থা থার্ড ওয়েভ টেকনোলজি লিমিটেড-টিডব্লিউটিটেল এবং ডাক বিভাগের একটি যৌথ উদ্যোগ। এই উদ্যোগটি উভয় সংস্থার জন্যই লাভজনক বলে যুক্তি দেখান তিনি । নগদকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, পোস্ট অফিসের জমা-খরচের তথ্য এখন স্বাস্থ্যকর দেখাচ্ছে। টিডব্লিউটিটেল এখন পোস্ট অফিসের বিশাল নেটওয়ার্কের জন্য এবং বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদে এর শাখা বিস্তারের জন্য মূলধন তৈরি করতে পারে। সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md.Mijanur Rahman ৭ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
I am satisfied for NOGOD money transfer service.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন