বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে সরকার

বানীতে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে তার সরকার। তিনি বলেন, গত ১১ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি খাতে কাঙ্খিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। ইতিমধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। বাঙালির জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে ৭ মার্চ এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসমুদ্রে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২৬ মার্চ ২০২১ সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি। তিনি যে সোনার বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, বাঙালি জাতির জন্য যে উন্নত জীবনের কথা ভেবেছিলেন, তার সেই স্বপ্নকে আজ আমরা বাস্তবে রূপ দিচ্ছি। শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিজাতি তত্তে¡র ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ অঞ্চলের জনগণের ওপর নেমে আসে বৈষম্য আর নির্যাতনের যাঁতাকল। অর্থনৈতিক বৈষম্য ছাড়াও সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির মাতৃভাষাকে উপেক্ষা করে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠী। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের পটভ‚মি বর্ণনা করে তিনি বলেন, শুরু হয় বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। ১৯৪৮-৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬-দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০’র সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ের পথ ধরে বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম যৌক্তিক পরিণতির দিকে ধাবিত হয়। আর এসব আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অবশেষে চলে আসে ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণ। রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি প্রদান করলেন স্বাধীনতার পথ-নকশা। যুদ্ধ অনিবার্য জেনে তিনি শত্রুর মোকাবিলায় বাঙালি জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। জাতির পিতার এই সম্মোহনী আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গণহত্যা শুরু করে। জাতির পিতা ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হন। ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রমহারা হন। রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ আর বহু ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে ছিনিয়ে আনি মহান স্বাধীনতা, বাঙালি জাতি পায় মুক্তির কাঙ্খিত সাধ। প্রতিষ্ঠা পায় স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ। লেখক ও ইতিহাসবিদ জ্যাকব এফ ফিল্ড এর বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা ‘উই স্যাল ফাইট অন দ্যা বিচেস : দ্যা স্পিচেস দ্যাট ইনস্পয়ার্ড হিস্টোরি’ গ্রন্থে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে। অসংখ্য ভাষায় অনুদিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ
তিনি বলেন, জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক ২০১৭ সালে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ইউনেস্কোর ইন্টার ন্যাশনাল মেমোরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সমগ্র দেশ ও জাতি গর্বিত। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অসা¤প্রদায়িক চেতনা ও গণতান্ত্রিক ম‚ল্যবোধকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির বীরত্বপ‚র্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই ভাষণের দিক-নির্দেশনাই ছিল সে সময় বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের ম‚লমন্ত্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে অমিত শক্তির উৎস ছিল এ ঐতিহাসিক ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ আমাদের ইতিহাস এবং জাতীয় জীবনের এক অপরিহার্য ও অনস্বীকার্য অধ্যায়, যার আবেদন চির অম্লান। কালজয়ী এই ভাষণ বিশ্বের শোষিত, বঞ্চিত ও মুক্তিকামী মানুষকে সবসময় প্রেরণা যুগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় আরো উচ্চাসনে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পে আবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, এ দেশকে আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ-শান্তিপূর্ণ আবাসভ‚মিতে পরিণত করব। ঐতিহাসিক ৭ মার্চে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Kowaj Ali khan ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:৫২ এএম says : 0
কি যে বলে আর কি যে কয়? জাতির ফিতা কয় কি?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন