সিরিয়ার সীমান্তবতী শহর ইদলিবে রাশিয়া সমর্থিত বাশার আল আসাদের বাহিনী ও তুরস্কের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে সম্মত হয়েছে তুরস্ক ও রাশিয়া। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তুরস্কের রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। আর ইতিমধ্যে অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। তারপর ইদলিব এখন অনেকটাই শান্ত।
চার ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর ইদলিবে সামরিক অস্ত্রবিরতির কথা ঘোষণা করলেন রশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুটিন এবং তুরষ্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। ইদলিবই হলো সিরিয়ার একমাত্র এলাকা যা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। আর রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট সিরীয় প্রশাসন তা বিদ্রোহীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। তুরষ্ক আবার বিদ্রোহী কয়েকটি গোষ্ঠীকে সাহায্য করছে এবং সেখানে প্রচুর সেনা পাঠিয়েছে।
এরদোয়ান জানিয়েছেন ''মধ্যরাত থেকে অস্ত্রবিরতি চালু হবে।'' বাস্তবে তা হয়েছেও। তাই মধ্যরাতের পর থেকে ইদলিব অনেকটাই শান্ত। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংস্থা অবসারভেটারি অফ হিউমান রাইটস জানিয়েছে, মাঝরাতের পর ইদলিব শান্ত। রাশিয়া ও সিরিয়া বিমানহানা থেকে বিরত থেকেছে।
বৈঠকের পর পুটিন জানিয়েছেন, ''আমরা একটা মতৈক্যে পৌঁছেছি। এর ফলে ইদলিবে সংঘর্ষ শেষ হবে বলে আশা করছি।'' পুটিন ও এর্দোয়ানের দাবি, সাধারণ লোকের কষ্ট কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই জন্যই অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই পক্ষ। কারণ, এই সংঘর্ষের ফলে হাজার হাজার মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েছেন। আর এই উদ্বাস্তুদের নিয়ে ইউরোপের দেশগুলিতে, বিশেষ করে গ্রিসে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ইইউর দেশগুলিও উদ্বাস্তুদের নিজেদের দেশে আসতে দিতে চায় না।
বৈঠকের পর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এক চুক্তিপত্র পাঠ করে জানান, যুদ্ধবিরতি বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।
সেই সাথে রাশিয়া ও তুরস্ক কৌশলগত এম৪ মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার উত্তর থেকে ৬ কিলোমিটার দক্ষিণ পর্যন্ত একটি নিরাপত্তা করিডর তৈরি করতে একমত হয়েছে। এ মাহসড়কটি সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলেপ্পোকে উত্তর-পশ্চিমের লাতাকিয়ার সাথে যুক্ত করেছে।
নিরাপত্তা করিডরটি সক্রিয় করার জন্য রাশিয়া ও তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিক করবেন।
ইদলিব যুদ্ধ বিরতিতে দুদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের মধ্যে যে চুক্তিগুলো হয়েছেÑ
১. রাশিয়া ও তুরস্ক আগামী ১৫ মার্চ থেকে এম৪ মহাসড়কে যৌথ টহল দেয়া শুরু করবে।
২. রাশিয়া ও তুরস্ক উভয়ে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য ও আঞ্চলিক অখন্ডতা বজায় রাখার জন্য নিজেদের বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করেছে।
৩. তুরস্ক-রাশিয় উভয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ স্বীকৃত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে ধ্বংস করে দিতে এবং সন্ত্রাসের বিকাশের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে তাদের অঙ্গীকার নিশ্চিত করেছে। সিনহুয়া/ইউএনবি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন