শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্রথম স্ত্রীর প্র‌রোচনায় দ্বিতীয় স্ত্রী‌কে হত্যাঃ ১৫দিন পর ঘাতক স্বামী গ্রেপ্তার

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ৭:৩৬ পিএম

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নববধূ চম্পা বেগমকে (৩২) খুনের ঘটনায় ১৫দিন পর ঘাতক স্বামী বাবুল হাওলাদারকে পটুয়াখালী পুলিশ শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার মাঝগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে।
আজ শ‌নিবার পটুয়াখালী জেলা পু‌লিশ সুপার কার্যালয়ের কনফা‌রেন্স রু‌মে প্রেস‌ব্রি‌ফিং‌য়ে পু‌লিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান এ তথ্য জানান। ‌তি‌নি জানান, ধৃত বাবুলের দেয়া তথ্যমতে তার বাড়ির পাশের একটি মরা খাল থেকে গৃহবধূ চম্পার ব্যবহৃত ওড়না, ভ্যানিটি ব্যাগ, স্কার্ফ, চাদর ও বোরকার অংশবিশেষ এবং একটি কোদাল শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বাবুলের কাছ থেকে চম্পা হত্যা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে। তি‌নি জানান, কলাপাড়ার গামুরিবুনিয়া গ্রামের বাবুল হাওলাদার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও বরগুনার তালতলীর কলারং গ্রামের চম্পা বেগমকে বিয়ে করে। ১২ জানুয়ারি নববধূকে বাবুল তার বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর থেকে চম্পা বেগম নিখোঁজ ছিল। চম্পার বাবা চানমিয়া মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় ১৪ জানুয়ারি বরগুনার তালতলী থানায় একটি জিডি করেন। প‌রে ২২ জানুয়ারি কলাপাড়া থানা পুলিশ পূর্ব-চাকামইয়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বাড়ির পেছনের ফসলী জমির মাটির নিচে চাপা দেয়া চম্পার মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওইদিন কলাপাড়া থানায় ১১জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন চম্পার বাবা। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় স্বামী বাবুল হাওলাদারকে।
কলাপাড়া থানার ও‌সি ম‌নির হো‌সেন জানান, এ ঘটনার পর থেকেই পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনায় পটুয়াখালী জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন এবং আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় উক্ত দলটি শুক্রবার সন্ধ্যার পর পাবনা জেলার আটঘরিয়া থানার এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ভিকটিম চম্পার স্বামী বাবুলকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানায় প্রায় ১০ বছর আগে সে কোহিনুর বেগম নামে একটি মেয়ে কে বিয়ে করে। তাদের ঘরে ০৭ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কয়েক মাস আগে কোহিনুর বেগম বাবুলকে রেখে বাবার বাড়ি চলে যায়। চেষ্টা করার পরও প্রথম স্ত্রী ফিরে না আসায় দ্বিতীয় বিয়ে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ০১ জানুয়ারী ২০২০ তারিখ ভিকটিম চম্পা বেগমকে বিবাহ করে। কিন্তু বিবাহের পরের দিনেই প্রথম স্ত্রী আবার ফিরে আসার আকুতি জানায়। এক পর্যায়ে বাবুল অপরাপর অপরাধীদের যোগসাজশে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
যারই ধারাবাহিকতায় গত ১২জানুয়ারি বাবুল তার প্রথম স্ত্রীর কথামতো দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যাবার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ীর নিকটবর্তী এলাকায় পৌঁছে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপরাপর আসামিদের নিয়ে প্রথম স্ত্রীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মাটির গর্তে চাপা দিয়ে রাখে ।
বাবুলের স্বীকারোক্তিতে এবং দেখিয়ে দেওয়া মতে খালের মধ্যে কচুরিপানার নিচ থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত ভ্যানিটি ব্যাগ, ওড়না, বোরখা উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও বাবুলের বাড়ি থেকে মাটি খোঁড়ার কাজে ব্যবহৃত কোদালটিও উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন