মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিজেপি’র সংখ্যালঘু সেলের নেতার বাড়িও রেহাই পায়নি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

উত্তর-পূর্ব দিল্লির ভাগিরহাটি বিহার নালা সড়কে পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি। পরনে তার রাজনীতিকদের মতো পোশাক। তিনি বর্ণনা করছিলেন কী ঘটেছিল এখানে। তিনি বলেন, ‘তারা ধর্মীয় শ্লোগান দিচ্ছিলো। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা আমাদের দিকে পাথর ছুড়তে লাগলো। আমি তখন পুলিশের সাহায্য চেয়ে ফোন করলাম। কিন্তু পুলিশ বললো, আমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে। আমার বাড়ি পুড়িয়ে সব ধ্বংস করে দেয়ার আগে আমরা কোনো মতে পালাতে পেরেছিলাম।’ এই ব্যক্তির নাম আখতার রাজা। তিনি দিল্লির উত্তর-পূর্ব জেলা বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হলেও মুসলিম হওয়ায় তার বাড়িও রক্ষা পায়নি সাম্প্রতিক দাঙ্গায়। ভারতীয় টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই ঘটনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দাঙ্গার আগুন আর ধোঁয়ায় কালো হয়ে গেছে রাজার ঘর। নিজের পরিবার ও চাচাতো ভাই জুলফিকারকে নিয়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। রাজা বলেন, ‘এই লেনে মোট ১৯টি মুসলিম বাড়ি। এগুলো চিহ্নিত করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। দাঙ্গাবাজরা বহিরাগত। কিছু স্থানীয় বাসিন্দা মুসলিমদের বাড়ি তাদেরকে চিনিয়ে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ৬টি মোটর সাইকেল আর বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কয়েক মিটার দ‚রে আখতার রাজার দুই চাচার ঘরও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ৫ বছর ধরে আখতার বিজেপির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি বলেন, ‘দাঙ্গার পর বিজেপি থেকে কেউই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। একটি ফোনকলও করা হয়নি। কোনো ত্রাণ, বা কিছুই আসেনি।’ রাজা কয়েকজন দলীয় নেতাকে ফোনও করেছিলেন, যারা একটু ‘ইতিবাচক।’ কিন্তু এরপরও দল থেকে সরছেন না তিনি। তার ভাষ্য, ‘আমি বিজেপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। হয়তো আমি চালিয়ে যাবো।’ রাজার বাড়ির সামনে আছে একটি লেন। সেখান থেকে বেশ কয়েকটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভগিরথি বিহার ও পাশের মুস্তাফাবাদে রোববার অবধি উত্তেজনা ছিল। কিছু গ্রুপ এসে ত্রাণ বিতরণ করছিল। অটোরিকশাচালক নাবিল আহমেদ বলেন, সোমবার সহিংসতা শুরু হওয়ার পর এই রোববারেই প্রথম নিজের গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন তিনি। বলেন, ‘আমি আতঙ্কিত। আমি মধ্যরাত পর্যন্ত গাড়ি চালাতাম। এখন আমি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরবো। যা দেখেছি তা কখনও ভুলবো না।’ মুস্তাফাবাদের বাসিন্দা আহমেদ বলেন, এই এলাকায় ৫০টি মন্দির। একটিতে আঁচড়ও পড়েনি। কিন্তু ৪টি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, গত ৩০ বছর এই কলোনি এখানে আছে। এমন কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত এর আগে কখনও দেখেননি তারা। উত্তর-পূর্ব দিল্লির সাম্প্রতিক এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ৪০ জনেরও বেশি মারা গেছেন। রোববার এক নালা থেকে ৪টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট নয় তারা দাঙ্গায় মারা গেছেন কিনা। শনিবার সরকার মৃতের সংখ্যা ৪২ বলে জানায়। টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন