বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

মাহমুদউল্লাহর বিশ্বাস ফেরানোর মিশন

‘ফেভারিট তত্তে¡’ বাংলাদেশই এগিয়ে

মো. জাহিদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের শক্তির পার্থক্যের আন্দাজ করতে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের ফলাফলই যথেষ্ঠ। তবুও এবার ফরম্যাট ভিন্ন। চলুন জেনে নেই, কি বলছে পরিসংখ্যান? বাংলাদেশ ৭, জিম্বাবুয়ে ৪- টি-টোয়েন্টিতে দু’দেশের মধ্যে মুখোমুখি জয়ের হিসেব এটা। সংখ্যার বিচারে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। তবে জিম্বাবুয়ের সুবিধা হলো জয়ী এই ৪ ম্যাচের তিনটিতেই জিতেছে তারা বাংলাদেশের মাটিতে। তাই বাংলাদেশের ক্রিকেট কন্ডিশন তাদের জন্য নতুন কোনো কিছু নয়। অবশ্য এই হিসেব-নিকেশের আলোচনায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে সা¤প্রতিক ফর্মের কৃতিত্বে। জিম্বাবুয়ে চলতি সফরে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সবকটি ম্যাচে হেরেছে। টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হার। তিন ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ। আর তাই আজ সন্ধ্যায় দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ ‘ফেভারিট তত্তে¡র’ সূত্রেও এগিয়ে আছে যোজন যোজন।

তবে সিরিজ শুরুর আগে এই এগিয়ে থাকার সুখে নাক ডোবাতে রাজি নন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার যেমন বলছিলেন, ‘চ্যালেঞ্জ তো থাকবে অবশ্যই। সেটা আপনি যার সঙ্গেই খেলেন না কেন। টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ আমাদের খুব ভাল কেটেছে। তবে মনে রাখতে হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে বেশ শক্তিশালী দল। তাদের বোলিং এবং ব্যাটিং অর্ডার বেশ ভাল। সিরিজে অবশ্যই আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। সবকিছু আগাম যদি সহজ ভাবে নিয়ে ফেলি তবে আমাদের জন্য সেটা বিপদের কারণ হতে পারে।’

পাকিস্তানের মাটিতে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ কার্যত কোন প্রতিদ্ব›িদ্বতাই গড়তে পারেনি। সেখানে দুই ম্যাচে এলোমেলো ব্যাটিং অর্ডারে বদল দেখে মনে হচ্ছিল দল হিসেবে বাংলাদেশ ভীষণ নার্ভাস হয়ে পড়েছে। সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসাতে এই সিরিজেই পাখির চোখ করেছেন অধিনায়ক, ‘কোচের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে আমি কি চাচ্ছি সেটা আমি কোচকে জানিয়েছি। নিজের কোন কৌশলে আমি দলকে নিয়ে সামনে বাড়তে চাই, খেলতে চাই। সেই ব্যাখা তাকে দিয়েছি। সাইফুদ্দিনকে দলে পেয়েছি আমরা। তার অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতভাবে দলে আরও ভারসাম্য নিয়ে আসবে। একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার দলে থাকলে ছোট ফরম্যাটে কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।’

চলতি বছরই অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ। এই বিশ্বকাপেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে অধিনায়ক হিসেবে রেখেই পরিকল্পনা কষছে বিসিবিও। অধিনায়ক হিসেবে দলের কাছে তার চাওয়া প্রসঙ্গে এই ডানহাতি এক প্রশ্নের জবাবে জানান, ‘আমি খেলোয়াড়দের কাছ থেকে যা পেতে চাই তার নাম বিশ্বাস। তারা যেন অধিনায়ক হিসেবে আমার ওপর আস্থা রাখে। তারা যেন আমার স্বচ্ছতা এবং সক্ষমতায় বিশ্বাস রাখতে পারে। সেই সঙ্গে দলের সব খেলোয়াড়দের ওপরও যে আমার আস্থা আছে সেই বিশ্বাসটা আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে চাই। টি-টোয়েন্টিতে একটা দুটো ম্যাচ কারো খারাপ যেতেই পারে। কিন্তু সেই খারাপ সময়ে কেউ যেন ভেবে না বসে যে তার ওপর আমার বা দলের কোন আস্থা নেই। পারস্পরিক এই বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি করাই আমার বড় দায়িত্ব। এটা করতে পারলে খেলোয়াড়রা অনেক নির্ভার হয়ে ম্যাচে খেলতে পারবে। এবং ফলও ভালো হবে।’

টেস্ট এবং ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা প্রায়ই সেঞ্চুরির দেখা পাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত খেলা ৯৪টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেঞ্চুরি মাত্র একটি। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুর্বল ওমানের বিপক্ষে। অধিনায়ক আশাবাদী দলের সা¤প্রতিক ব্যাটিং ফর্ম এবার টি-টোয়েন্টিতেও সেঞ্চুরির আনন্দ ছড়াবে, ‘তামিম ও লিটন ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে দারুণ ফর্ম দেখিয়েছে। তিন ম্যাচে দুজনেই দুটি করে সেঞ্চুরি করেছে। সেই ফর্ম ঠিক রাখতে পারলে টি-টোয়েন্টিতে তাদের কাছ থেকে হয়তো আমরা সেঞ্চুরি দেখতে পারবো।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বের দীর্ঘ পথচলা। সতীর্থদের কাছে মাশরাফি ছিলেন যেন সব সমস্যার সমাধান। সেটা ক্রিকেটীয় হোক কিংবা ব্যক্তিগত। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে তুলে নিয়েছেন কিংবদন্তির উচ্চতায়। ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিককে মিস করবেন জানিয়ে মাহমুদউল্লাহ জানালেন তার কোন দিকটি তাকে ছুঁয়ে গেছে সবচেয়ে বেশি, ‘মাশরাফি ভাইয়ের সবচেয়ে ভালো গুণ যেটা ছিল, উনার মধ্যে একটা ক্যারিশমাটিক পাওয়ার ছিল। কারণ যখনই আমরা একটু নার্ভাস থাকতাম, একটু চিন্তা করতাম বেশি, তখন উনি আমাদের ঠাÐা করে বুঝাতেন বা বলতে কীভাবে কি করলে এগোনো যায়, বা কোন জিনিসটা করলে নির্দিষ্ট কারও জন্য ভালো হবে। ওই গুণ ছিল মাশরাফি ভাইয়ের। আশা করি আমিও চেষ্টা করব আমার চিন্তাধারা দিয়ে কীভাবে দলকে সাহায্য করা যায় এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।’

টেস্ট-ওয়ানডে এই দুই সংস্করণে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দেওয়া মাহমুদউল্লাহরা টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে প্রাপ্তির খাতাটা পরিপূর্ণ করতে চান। তাই এবার ২০ ওভারের ম্যাচে মনোযোগ বাংলাদেশের। সেটি করতে হলে দলগত পারফরমেন্সের বিকল্প নেই।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন