শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মেজরের বাঁশির ফুঁ’তেই মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল

মানববন্ধনে ডা. জাফরুল্লাহ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৯৭১ সালে মেজরের বাঁশির ফুঁতেই বাংলার মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনি একটা ভুল কথা বলেছেন যে, কোনও মেজরের বাঁশির ফুঁ’তে দেশ স্বাধীন হয়নি। সেসময় (মুক্তিযুদ্ধকালীন) সেই বাঁশির ফুঁ’টাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ যেমন সবাইকে আকর্ষিত করেছিল তেমনই সেই সময়ে দেশবাসী কোনও মেজরের বাঁশির ফুঁ’র জন্যই অপেক্ষা করছিল। সেই বাঁশির ফুঁ’তেই বাংলার মানুষ সেদিন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৭ মার্চ ও ২৭ মার্চের ঘোষণার মধ্যে খুব বেশি ফারাক নেই।

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শনিবার জধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলে দেয়া হয়েছিল মন্তব্য করে বলেন, ‘এমনভাবে বিকৃত ইতিহাস তৈরি করা হলো যে, কোনও এক মেজর এক বাঁশির ফুঁ দিল আর অমনি যুদ্ধ হয়ে গেল আর দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। অথচ সে নিজেই চাকরি করত সরকারের অধীনে এবং চারশ টাকা বেতন পেত। তাকেই বানানোর চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ৭ মার্চ নিঃসন্দেহে স্বাধীনতার সূচনা হয়েছিল। তবে মনে রাখতে হবে, ৭ মার্চের ভাষণ এক ব্যক্তির নয়- সেই ভাষণ তৈরি করেছিলেন কামাল হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, নজরুল ইসলাম, এরা সবাই মিলে। সবচেয়ে বড় অবদান ছিল সিরাজুল আলম খানের। যিনি ওই ভাষণে যোগ করেছিলেন- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ কথা। সেই কথাটা শেখ মুজিবের মুখ দিয়ে বের হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ আজ সিরাজুল আলম খানের কথা বলে না।

ভারতে হত্যাযজ্ঞ চলছে মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ভারতে আজ সব জায়গায় হত্যাযজ্ঞ চলছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। এর মূল হোতা হচ্ছেন নরখাদক নরেন্দ্র মোদি। তাকে কোনক্রমেই বাংলাদেশে আসতে দেয়া উচিত হবে না। ভারতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। তাই নরখাদক মোদি বাংলাদেশে আসলে তার সাথে করোনা ভাইরাস আসতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা দরকার। বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ১১ তারিখ আপনাদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। তার সাথে সাথে বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদি আসার বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলুন। তাহলে দেখবেন জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সবাইকে সম্মান করতে শিখুন। জিয়াউর রহমানকে ছোট করে শেখ মুজিব বড় হবে না। দিনের আলো দেখতে চেষ্টা করুন। ভারতকে চিনতে শিখুন। মোদির বাংলাদেশে আসাকে বাতিল করুন। তা না হলে দেখবেন ১৭ মার্চ দেশবাসী মোদির আগমন ঠেকাতে মানুষ প্রতিবাদে নামবে। আপনার পুলিশকে সংযত হয়ে থাকতে বলুন। তা না হলে দেশে রক্তক্ষয়ী মারামারি হবে, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রকামী মানুষ গণতন্ত্র চাই এবং ভারতের আধিপত্য চাই না।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার ও কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন