বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

তবুও ট্রানজিট-করিডোর

চট্টগ্রাম-মংলা বন্দরে তোড়জোড় : বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৭ এএম, ৯ মার্চ, ২০২০

দেশের অর্থনীতির হৃৎপিন্ড দুই প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম ও মংলায় সমস্যা-সঙ্কট, ঘাটতি-সীমাবদ্ধতা। রাজনৈতিক বিতর্ক আপতত ধামাচাপা পড়লেও আর্থ-সামাজিক, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এবং নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক, সচেতন নাগরিক মহলে দীর্ঘদিনের নানামুখী বিতর্ক, আপত্তি, শঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবুও ভারত পাচ্ছে ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধা।

ভারতের মালামাল ভারতেই যাবে। টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া। যাবে বাংলাদেশের দুই বন্দর দিয়ে। ভারী ট্রাক-লরিযোগে তা পরিবহন করা হবে দেশের সড়ক মহাসড়ক এমনকি জরাজীর্ণ রাস্তাঘাটের ওপর দিয়েই। বিনিময়ে বাংলাদেশের কী লাভ? অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ হতাশার সুরেই বলছেন- ‘নাকের বদলে নরুণ পেলাম তাক ধুমা ধুম ধুম’! বলা বাহুল্য ট্রান্সশিপমেন্ট কিংবা কানেকটিভিটির নামে এই ট্রানজিট ও করিডোরের একতরফা সুবিধায় ভারতের লাভের ঝুড়ি ভর্তি হবে। যার বাস্তবায়ন হতে চলেছে কাকতালীয়ভাবে ঐতিহাসিক মুজিবশতবর্ষে। ট্রান্সশিপমেন্টের উপযোগী বিশেষ অবকাঠামো, যান্ত্রিক ও পরিবহন সুবিধা দিতে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে চলছে প্রস্তুতির তোড়জোড়। এ মাসেই কলকাতা বন্দরের সাথে ট্রায়াল রান অর্থাৎ পরীক্ষামূলক ট্রান্সশিপমেন্ট শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর আরও কয়েকদফা ট্রায়াল রান পরিচালনা করা হবে ভারতের কলকাতা-হলদিয়া বন্দরের মালামাল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে খালাস ও পরিবহনের মাধ্যমে। ট্রায়াল রানে সমস্যা ও ভুলত্রুটিগুলো পরবর্তী সময়ে সংশোধন করে পুরোদমে ট্রানজিট-করিডোর চালু করা হবে। তবে এর আগে গত জানুয়ারির শেষ ভাগ ও ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ট্রায়াল রানের টার্গেট থাকলেও তা করা যায়নি।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকগণ বলছেন, বন্ধুত্বের খাতিরে ভারতকে ট্রানাজিট-করিডোর বিলিয়ে দিতে গিয়ে দেশের আর্থস্বার্থ নিরাপত্তার তাৎপর্যপূর্ণ দিকগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। যা দূরদর্শিতার পারিচয় বহন করে না। কেননা দক্ষিণ এশিয়ায় বঙ্গোপসাগরের ফানেলের (চোঙা) মতো কোলে কিনারে বাংলাদেশের ভৌগোলিক কৌশলগত অবস্থানটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতের কূট-কৌশলী বিরোধিতার কারণেই কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় চীন ও জাপানের সহায়তায় গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের চূড়ান্ত মহাপরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। তাছাড়া প্রতিবেশী ভারত অসহযোগিতা এবং দাদাগিরি ফলানোর জন্যই আজও আটকে আছে ভূমিবেষ্টিত দেশ নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট বাণিজ্যের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। মাত্র ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চিকেন নেক’ করিডোর ব্যবহার করে ওই সড়কপথ দিয়ে মালামাল পরিবহনে বাধা-প্রতিবন্ধকতার অবসান হয়নি। বাংলাদেশের শিল্প-কারখানায় উৎপাদিত শতাধিক ধরনের পণ্যসামগ্রী, সেবাপণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ‘দি সেভেন সিস্টার’ হিসেবে পরিচিত উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি প্রদেশ আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মনিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলের জনসাধারণের মাঝে। অথচ শুল্ক ও অশুল্ক বাধার কারণে সেসব অঞ্চলেও বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশে হরেক বাধা। অধিকন্তু মুজিববর্ষে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন সফরকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে ট্রানজিট জ্বালানি পণ্য পরিবহনের নতুন আরেক এজেন্ডা উঠতে পারে ঢাকায় আলোচনার টেবিলে। এমনটি খবর প্রকাশিত হয়েছে অতিস¤প্রতি ভারতীয় পত্র-পত্রিকায়।

এদিকে ট্রান্সশিপমেন্ট বা ট্রানজিটের ট্রায়াল রান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চলতি মার্চ মাসের মাঝামাঝি অথবা তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে একটি বাল্ক (খোলা পণ্য বহনকারী) কার্গোর জাহাজ আসার কথা রয়েছে। ট্রায়াল রানের প্রথম এই জাহাজে ১২ থেকে ১৪ টি কন্টেইনারে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্টের পণ্য বোঝাই থাকতে পারে। আগামী ১১ মার্চ বুধবার ঢাকায় একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় রিভার ডিউজ, পোর্ট চার্জ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়মমাফিক আদায়যোগ্য চার্জসমূহ তুলে ধরবে। তাছাড়া সড়কপথে ভারতের অভিমুখে মালামাল পরিবহন বাবদ সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের চার্জসমূহ নিয়েও আলোচনায় তুলবে। নৌ পরিবহন, পররাষ্ট্র, সড়ক ও সেতুসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যকার এ বৈঠক হচ্ছে বলে জানান চবক সচিব। ভারতের আবদার অনুযায়ী ট্রান্সশিপমেন্টের মালামাল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরে বিশেষ কোনো জেটি-বার্থ ও ইয়ার্ড নির্দিষ্ট রেখেই খালাস বা হ্যান্ডলিং করার বিষয়ও চ‚ড়ান্ত হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

ট্রানজিট-করিডোরের ট্রায়াল রান প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজিসি অধ্যাপক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম গতকাল ইনকিলাবের কাছে অভিমত ব্যক্ত করেন, এটা সহযোগিতার ইতিবাচক ধারা। এর মাধ্যমে দ্য সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত ভারতের ৭টি রাজ্যে পণ্য পরিবহনে বাধা অপসারিত হলো। আমাদের মংলা বন্দরের সক্ষমতারও সদ্ব্যবহার হবে। চট্টগ্রাম বন্দরেও জটের সম্ভাবনা নেই। এতে দুই দেশই লাভবান হবে। বাংলাদেশের কোনো ‘অপকার’ হবে না। বরং উত্তর-পূর্ব ভারতের গ্যাস, চুনাপাথর, বনজসম্পদ বাংলাদেশের কাজে লাগবে।

ট্রানজিট নিয়ে মানসিক ভুল বোঝাবুঝি দূর হওয়া উচিৎ। তবে প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশসহ মিলে আঞ্চলিক সহযোগিতা কাজে লাগানোর জন্য চীনকে নিয়ে ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ ছিল এক বিরাট সম্ভাবনাময় পদক্ষেপ। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর সেটি থেমে গেছে। মোদির সরকার চীনকে নিয়ে ‘কুনমিং ইনিশিয়েটিভ’ চাইছে না। তবে এর বাস্তবায়ন হওয়া উচিৎ। তাছাড়া চীনের সহায়তায় বাংলাদেশে গভীর সমুদ্র বন্দরটি (সোনাদিয়া) ভারতের বাধার কারণে হয়নি। চীন যদি গভীর সমুদ্র বন্দরটি নির্মাণ করতে এগিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ এ ধরনের একটি প্রথম ডিপ সি পোর্ট পেয়ে যাবে। এরফলে অর্থনীতি, শিল্পায়ন, বিনিয়োগ সবক্ষেত্রে দেশ লাভবান হবে। বাড়বে আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিধি।

ভারতের মালামাল পরিবহনে ট্রানজিট-করিডোরের ক্ষেত্রে আর্থ-স্বার্থ ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভারতের মালামাল ট্রানজিট বা ট্রানশিপমেন্টের আড়ালে এবং বন্ধুত্বের উসিলায় নামকাওয়াস্তে ট্যারিফ চার্জ ধার্য করেছে চার্জ ট্যারিফ কমিটি। তাও মেনে নিয়েছে রাজনৈতিক সরকার। যা ভারতীয় স্বার্থেরই অনুক‚লে। আমাদের অর্থনেতিক স্বার্থ সেখানে উপেক্ষিত। ভারতের পণ্য ভারতের বন্দরগুলো থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে পরিবহনের জন্য আমাদের সড়ক রাস্তাঘাট অবকাঠামো খুবই অপ্রতুল, ভঙ্গুর ও সঙ্কীর্ণ। সড়কগুলোর ট্রাফিক ঘনত্বও বেশি। তিনি জানান, বাংলাদেশের সড়কগুলোর উপর দিয়ে নিজেদের পণ্যসামগ্রী পরিবহনের কাজে যানবাহন চলাচলের জন্য আমাদের পাহারাদার দরকার হয় না। কিন্তু যদি কখনও বৈরী কোনো অবস্থায় পড়তে হয় সে ক্ষেত্রে ভারতের মালামাল ট্রান্সপোর্টের পেছনে কে পাহারা বসাবে? এরজন্য ভারতের পাহারাদাররা এসে যাবে কিনা? জাতীয় আর্থ-স্বার্থ ও নিরাপত্তার তাগিদে এসব বিষয়ে দেশের চিন্তাশীল ব্যক্তিদের গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন।

এদিকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ট্রানজিট ব্যবস্থায় আনীত ভারতের মালামাল পরিবাহিত হবে করিডোর সুবিধায় দেশের সড়ক-মহাসড়ক, নৌপথ, রেলপথে। ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধায় মালামাল আনা-নেওয়া করা হবে আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। ট্রানজিটে আনীত ভারতীয় মালামালবাহী কন্টেইনার বন্দরে ই-লক থাকবে। তবে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর এবং উভয় কাস্টম হাউসে স্ক্যানার মেশিনসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা চেকিং ব্যবস্থা, দক্ষতা ও জনবল ঘাটতি প্রকট। তাছাড়া এ মুহূর্তে প্রধান চট্টগ্রাম বন্দর বার্ষিক ৩১ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে নিজ দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সামাল দিতে গিয়েই হিমশিম অবস্থায় পড়েছে। বন্দর স¤প্রসারণে বে-টার্মিনালসহ অনেকগুলো অবকাঠামো প্রকল্প ঝুলে আছে। ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জাম অপ্রতুল। বছরের অর্ধেক সময় বন্দরজুড়ে জট লেগেই থাকে।

তাছাড়া দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক জোন মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, মহেশখালী মাতারবাড়ী শিল্প-অর্থনীতি-জ্বালানি স্থাপনা, আনোয়ারা চায়না ইকোনমিক জোন, কোরিয়ান ইপিজেড, প্রস্তাবিত শংখ নদীর পাড়ে শিল্পজোন ইত্যাদি মেগাপ্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে ২০২১ থেকে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনের উপযোগী অবকাঠোমো সুবিধা ও সক্ষমতা চট্টগ্রাম বন্দরের এখনও নেই। এ অবস্থায় ভারতকে ট্রানজিট দিতে গিয়ে দুই বন্দরের অপারেশনাল অবস্থা কতটা নাজুক হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
আসছে ১১ মার্চের বৈঠকে মাশুল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার কথা বলা হলেও নমনীয় নীতির আভাস মিলছে। গতবছর ২০১৯ সালে অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়ে ভারতের পণ্য পরিবহনে ট্রান্সশিপমেন্ট বিষয়ে দুই দেশের চুক্তি এবং এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষরিত হয়।

এদিকে ‘ঢাকায় মোদীর ‘সফল’ সফর চাইছে নয়াদিল্লি’ শিরোনামে গত ৭ মার্চ শনিবার ভারতীয় শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে জানা যায়: ‘বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, আসন্ন সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হতে চলেছে দু’দেশের মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগের নতুন দিক খোঁজা। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে নদীপথে যাতায়াত বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু প্রকল্প ঘোষণা হতে পারে। বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এলপিজি গ্যাস পাঠানোর নতুন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হবে মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বৈঠকে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দরকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে’।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন ঢাকা সফরে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে চলেছে শীর্ষ পর্যায়ে। এবারের সফরে আগের মতো মাপের কোনো চুক্তি হবে না ঠিকই; বরং সিএএ-এনআরসি এবং সা¤প্রতিক দিল্লি হিংসার জেরে সম্পর্কে যথেষ্ট মেঘ জমে রয়েছে। কিন্তু সেই মেঘ কাটিয়ে মোদির বাংলাদেশ সফরকে সফল হিসেবে তুলে ধরতে সক্রিয় সাউথ বøক। এরজন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘোষণাও করতে পারেন মোদি। তিস্তাকে বাদ রেখে অন্য কয়েকটি নদীর জলের ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা হতে পারে বলে স¤প্রতি ঢাকা সফরে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Md Azizul Haque ৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৪ এএম says : 0
ধন্যবাদ ইনকিলাবকে দেশের স্বার্থে একটা ভালো প্রতিবেদন প্রকাশ করায়।
Total Reply(0)
সত্য বলবো ৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৫ এএম says : 0
কেবল ক্ষণমতায় থাকার জন্য মানুষ দেশের স্বাার্থ জলাঞ্জলী দিয়ে এভাবে একটা দেশকে এক তকরফা মুবিধা দিতে পারে এটা কেবল বাংলাদেশেই দেকা যায়।
Total Reply(0)
মরিয়ম বিবি ৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৬ এএম says : 0
ট্রানজিট করিডর থেকে ভারত একতরফাভাবে সুবিধা নিচ্ছে- এটা কেমন বন্ধু দেশ।
Total Reply(0)
হৃদয়ের ভালোবাসা ৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৬ এএম says : 0
ভারতকে সুবিধা দিতে দিতে দেশের সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম চঞ্চল ৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৭ এএম says : 0
েএকতরফা ট্রানজিট ও করিডর বাতিল করা হোউক।
Total Reply(0)
নূরুল্লাহ ৯ মার্চ, ২০২০, ৭:৫৭ পিএম says : 0
বাংলাদেশ সরকারকে সঙ্কটগুলোর উত্তরণ ঘটাতে হবে যেভাবে বাংলাদেশের জন্য ভারত প্রয়োজন নাকি ভারতের জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজন- এ প্রশ্নটি বেশ কয়েকবার আমার মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে। আসলে তিনদিক বেষ্টনকারী বিরাট একটি প্রতেবেশি দেশের সাথে আমাদের অনেক বিষয়িই জড়িত থাকতে পারে অসম্ভব নয় কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কাকে প্রয়োজন কার জন্য বেশি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে যতটুকু পড়াশোনা আমার ছিল, সে বিচারে আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রয়োজন ভারতকে যত না বেশি তার চেয়ে ভারতের বাংলাদেশকে কাছে পাওয়ার প্রয়োজন অনেক অনেক বেশি। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, আজ বাংলাদেশ তার সেই মূল্য ঘোষণা দিতে পারছে না। বাংলাদেশের ঐ ইমেজটা নষ্ট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আর্থিক বিষয় যেমন আছে রাজনৈতিক দুর্বলতা ও অসচেতনতার দায় তারচে বেশি। আজ ভেবে অবাক হই, কয়েক দশক আগেই আমাদের এক সচেতন লেখক বিষয়টার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তার আশঙ্কা ও আতঙ্কের কথা বলেছিলেন কিন্তু মনে হয় আমরা তার কথা গুরুত্ব দিয়ে কেউ বিবেচনা করতে পারিনি। সেই পরলোকগত লেখকের কথার কিছু উদ্ধৃতি আমি নিচে পেশ করবো। তার পূর্বে বলবো, প্রধানমন্ত্রী, এখনও সময় আছে, দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন। দেশের রাজনৈতিক স্থিতি ও পরস্পর মানুষের ভ্রাতৃত্বকে সংহত করুন। সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতিকে উৎসাহিত করুন। অগভীর উগ্র দুর্বল চিত্ত ও দুর্বল চরিত্রকে বর্জন করে ভারসাম্যপূর্ণ গভীর জ্ঞানী দীনদার মানুষদের কথাকে গ্রাহ্য করুন। এতে দেশের স্বাধীনতা, সমৃদ্ধি টিকবে, আপনার কীর্তি ও সুনামও অক্ষুণ্ন থাকবে। জনগণ-নির্ভর রাজনীতি করুন তাহলে ভিনদেশি শকুনরা এমনিতেই স্যারেন্ডার করবে। সময় কারও জন্য এক থাকে না, রাজত্বও কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়- এটা আল্লাহর বিধান। দেশের জনগণকে আস্থায় না আনতে পারলে ক্ষমতা ধরে রেখে লাভ নেই, এতে দেশের মঙ্গল হয় না, জাতির ভবিষ্যত অন্ধকার। তাই এমন কাজ করা জরুরি, এমন মানুষদের সঙ্গে রাখা জরুরি যার বিনিময়ে দেশবাসী আস্থাশীল হয়। তাতে দেশের স্বার্থ ও নিজেদের ইজ্জত রক্ষা পাবে। অন্যথায় ইতিহাসের জানালা খুলে দেখতে হবে। একটি জাতি ও দেশের পতনের পূর্বে কী অবস্থা বিরাজ করে, আমাদের মধ্যে সেসব উপস্থিত হলো কিনা। অতি অবশ্যই মনে করতে হবে পলাশীর পরবর্তী রাজনীতি ও সার্বিক অবস্থা। তারপরের অন্ধকার দিনগুলোর কথা।.. এবার আমি ঐ জ্ঞানী লেখকের বক্তব্য তুলে দিচ্ছি। বন্ধুরা, আশা করি আপনাদের প্রতিক্রিয়া জানাবেন: “ভারতবর্ষের ক্রমাগ্রসরমান পুঁজির যে অভিযাত্রা বাংলাদেশ তার একটি প্রধান প্রয়োগ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। .. বাংলাদেশে ভারতের পুঁজি বিনিয়োগ হচ্ছে বিরাট হয়ে। ভারতীয় পুঁজি বৃদ্ধি পেলে আমাদের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অর্থহীন শব্দে পর্যবসিত হবে। [আজ তার কতটুকু বাকি আছে?] আমরা ভারতীয় পুঁজিপতিদের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ঢুকে পড়বো। নিজেদের জাতিগত উত্থানের কোন সুযোগ থাকবে না। অথচ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জনগোষ্ঠী ভারতের গণতন্ত্রের যে সুযোগ সুবিধা ও অধিকার ভোগ করছে আমরা সেগুলো ভোগ করতে পারবো না। [আহমদ ছফা, নির্বাচিত প্রবন্ধ ৩৯৮] পুঁজির সঙ্গে অবশ্যই বাধ্যবাধকতার প্রশ্নটা জড়িত। ভারতের পুঁজি বিকাশমান অবস্থায় আছে। একারণে তার চরিত্রটাও নিষ্ঠুর। সেই তুলনায় পশ্চিমা পুঁজি এখানে ব্যবহৃত হলে ভারতের প্রতিস্পর্ধী একটি অর্থনীতি এখানে গড়ে উঠবে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের কাজের জন্য বিদেশ ঘুরতে হবে না।... এই বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন, একটি দেশে উৎপদনের সুষ্ঠু পরিবেশ থাকা, হরতাল, কর্মবিরতি, শ্রমিক সহিংসতা ইত্যাদি না থাকা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না থাকা, ভারতের মতো দেশের শত্রুতা- এই সমস্যাগুলো বাংলাদেশে পশ্চিমা বিশ্বের পুঁজি আসার জন্য বিশেষ বাঁধাস্বরূপ। ভারত বিশ্ব্যবাপী কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে বলে থাকে, কোন সভ্য সমাজ বাংলাদেশে তৈরি হয়নি। এখানে ভদ্রলোকের জান, মাল, সম্পদ কিছুই নিরাপদ নয়। [ঐ ৩৯৯] বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো পেটমোটা কর্মচারীদের বিহারক্ষেত্র, আমলাদের অনেকেই দেশপ্রেমহীন, রাজনীতিবিদেরা নাবালক এবং হ্রদদৃষ্টিসম্পন্ন। [৪০০] আগে বাংলাদেশ ছিল কলকাতার শিল্পকারখানার কাঁচামালে যোগানদার এবং অর্থনীতির পশ্চাদভূমি। নির্বিচারে ভারতীয় পুঁজি বাংলাদেশে এলে বাংলাদেশের আবার ভারতীয় অর্থনীতির পশ্চাদভূমির ভুমিকায় ফেরত যেতে হবে। [৪০১] বাংলাদেশের একটি পছন্দবোধ, একটি রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা এবং অর্থৗনৈতিক উন্নয়নের কর্মসূচী না থাকলে অনুগত অর্থনৈতিক এলাকার ভাগ্যকে বরণ করতে হবে।... ধনতন্ত্র কায়েম হয়ে বসলে চক্রবৃদ্ধি হারে শোষেণের ঝুরি প্রসারিত করে।...” আল্লাহপাক আমাদের বুঝবার তাওফিক দান করুন। আমরা যেন অপরাধীদের মধ্যে গণ্য না হই মহান আল্লাহ হেফাজত করুন।
Total Reply(0)
Md. Emdadul Haque Badsha Badsha ৯ মার্চ, ২০২০, ৯:৪০ পিএম says : 0
ভারতকে ট্রানজিট+করিডোর দিতে হবে--তবে বাংলাদেশের সার্থকেঅক্ষুন্ন রেখেই করা যায়--বেশী দিলে আরো বেশি চাবে এটা্ই সাভাবিক --তবে ভার রক্ত আমাদের পরীক্ষিত বিপদের বন্ধু হয়েও তাদের দেশের সার্থ রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং খুব দেশ প্রেমিক--তাদের দেখেও আমরা শিখিনা এটাই আমাদের ্বভাব । আমরা দেশ প্রেমিক হব?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন