সম্প্রতি পুরান পল্টনস্থ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীল পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে আন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুসলিম লীগের মহাসচিব এডভোকেট কাজী আবুল খায়ের, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবুবকর সিদ্দিক। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মুফতি মনির আহমদ কাসেমী, মুফতি জাকির হোসেন কাসেমী, মাওলানা আবদুল গাফফার ছয়ঘরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সাংগঠনিক সম্পাদ মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা মোহাম্মদ ফয়সল, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল, মুসলিম লীগের সহসভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, এন এইচ খান আসাদ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, সম্প্রতি ভারতের দিল্লীতে মুসলিম বিদ্বেষী নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-সিএএ বিরোধী সমাবেশে বিজেপি সরকারের ইঙ্গিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। সেখানে বেছে বেছে নির্যাতন চালিয়ে অর্ধশতাধিক মুসলমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মুসলমানদের ইবাদতের পবিত্র স্থান মুসজিদগুলোকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। মুসলামনদের ঘর-বাড়ী ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। এখনো বহু মসিলমান নিখোঁজ রয়েছে। নরেন্দ্র মোদির নিয়ন্ত্রনাধীন দিল্লীর পুলিশ বাহিনী এই উগ্রবাদী হামলাকারীদের প্রতিহত বা বাঁধা না দিয়ে বরং সহযোগিতা করেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রে পুলিশবাহিনীর সদস্যরা মুসলমানদের উপর হামলায় অংশগ্রহন করে। ভারতের বর্তমান চরম সম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের ইঙ্গিত ও উস্কানীতে দিল্লীর মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর এ ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ২০০২ সালে সম্প্রদায়িক দাঙ্গার নামে গুজরাটের হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যা করে। ভারতের মুসলমানদের জান-মাল রক্ষায় জাতিসংঘ, ওআইসসহ বিশ্বসম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আজকে দিল্লীতে মুসলমানদের উপর যে পৈচাশিক হত্যাকান্ড চালানো হলো তার জন্য প্রধান দায়ী ব্যক্তি হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত। এ রকম একজন উগ্রসাম্প্রদায়িক নেতাকে বাংলাদেশের মানুষ কোনভাবেই ঢাকায় দেখতে চায় না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচী সফল হোক তা সকলেরই কাম্য। কিন্তু ১৭ মার্চ দেশী- বিদেশী মেহমানদের উপস্থিতিতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে যে আয়োজন ছিলো সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও আমন্ত্রন জানানো হয়েছিলো। কিন্তু দিল্লীর মুসলিম গণহত্যার পরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ-বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির সে সফর কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য ছিলো না। বাংলাদেশের জনগণ নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানানোর জন্য কোনভাবেই প্রস্থুত ছিলো না। কিন্তু সরকার নরেন্দ্র মোদির সফর অটুট রাখতে শক্ত মনোভাব দেখায়। তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সমমনার ইসলামী দলসমূহের পক্ষ থেকে সারাদেশে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। কয়েকটি কর্মসূচী শান্তিপূর্ণ ভাবে সফল হয়েছে। সমানেও মানববন্ধনসহ কঠিন কর্মসূচী ছিলো।
কিন্তু সরকারর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভবের কারণ দেখিয়ে মুজিববর্ষের কর্মসূচী পুনর্বিন্যাস করে ১৭ মার্চের বিদেশী মেহমানদের নিয়ে অনুষ্ঠিতব্য কর্মসূচী স্থগিতের ঘোষনা দেয়। এ অবস্থায় ১৭ মার্চ নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর স্থগিত হয়ে গেছে। আমরা মনে করি ঢাকায় নরেন্দ্র মোদির সফর স্থগিত হওয়ায় এদেশের বিক্ষুব্ধ জনতার দাবী পূরণ হয়েছে। তাই আমরা সমমনা দলসমূহের পক্ষ থেকে ঘোষিত ১২ মার্চের দেশব্যাপী মানবন্ধন কর্মসূচী স্থগিত ঘোষণা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন