শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

উত্থান-পতনে অস্থিরতায় পুঁজিবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় ধসের পর বড় উত্থান, আবার বড় পতন এমনভাবেই চলছে শেয়ারবাজার। বাজারের এ অবস্থাকে অস্বাভাবিক বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আবারও বড় ধরনের পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় প্রায় আড়াই শতাংশ এবং সিএসইর সার্বিক মূল্য সূচক প্রায় দুই শতাংশ পড়ে গেছে।

অথচ এমন বড় পতনের আগে গত মঙ্গলবার ও বুধবার শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়। মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে ১৫টির। আর ১৮টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। আর বুধবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বাড়ে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বাড়ে। বিপরীতে দাম কমে ৪০টির এবং ৪৪টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।

অবশ্য তার আগে গত সোমবার শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস দেখা যায়। ওইদিন ডিএসইতে মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমে ৩৫২টির। আর ১টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৭৯ পয়েন্ট কমে যায়।

বাজারের এ চিত্র সম্পর্কে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, এখন শেয়ারবাজারে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে তা অস্বাভাবিক। বাজারের এ চিত্র কারও কাম্য নয়। শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে হঠাৎ বড় ধস, এরপর আবার বড় উত্থান, আবার বড় ধস এটা কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না। বাজারের এ অবস্থা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিচ্ছে। আস্থায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী প্রফেসর ড. মো. বখতিয়ার হাসান বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সবার মধ্যেই এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। তেলের দামেও ব্যাপক পতন হয়েছে। এতে বিশ্ব শেয়ারবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে গত সোমবার করোনা আতঙ্কে আমাদের শেয়ারবাজারে বড় ধস নামে। বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে বিশ্লেষণ করলে এ পতন ছিল স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, এরপর বিশ্ব শেয়ারবাজার ঘুরে না দাঁড়ালেও মঙ্গলবার ও বুধবার আমাদের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হয়েছে। গতকাল আবার বড় পতন হলো। বাজারের এ অবস্থা কিন্তু স্বাভাবিকতার ইঙ্গিত বহন করে না। বাজারের এ চিত্র অবশ্যই অস্বাভাবিক। এভাবে বাজার ফেলতে এবং ওঠাতে কোনো চক্র জড়িত কি না তা নিয়ন্ত্রক সংস্থার ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেনের শুরুতে বড় পতনের মুখে পড়ে শেয়ারবাজার। প্রথম ১৫ মিনিটের লেনদেন ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৫ পয়েন্ট কমে যায়। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০১ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ১২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮১ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে ৯৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্য সূচকের এই পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৩টির। আর ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪০৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪২২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৯ লাখ টাকা।

অপর শেয়ারবাজর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ২২৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৬৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৫টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন