শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

কুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

স্থানীয়ভাবে জাত উন্নয়ন করে উৎপাদিত কুল চাষে অধিক লাভের জন্য নাটোরে কুল চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এতে করে নাটোরের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বারও উন্মোচিত হচ্ছে। সেজন্য আপেল কুল বা বাউকুলের পরিবর্তে নাটোরের ৭টি উপজেলায় বেড়ে যাচ্ছে কাশ্মিরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের চাষ। দেশিয় কুল আকারে ছোট, কম রসালো, খেতে টক ও ফলনে কম হয়। আর কাশ্মিরী বা বল সুন্দরী কুল আকারে বড়, অধিক রসালো, সুমিষ্ট, ফলনেও বেশি। তাই নাটোরের ফল চাষিরা এই কুল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছেও বেশি।
বাগাতিপাড়ার ফল চাষি মো. আব্দুল বারি বাকি উপজেলার পাকা ইউনিয়নে ২০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ২ হাজার ৫শ’ কাশ্মিরী কুল গাছের চাষ করেন। প্রতিটি কাশ্মিরী কুল গাছ থেকে ২.৫ মণ করে কুল পান এবং প্রতি মণ ২ হাজার ৮শ’ টাকা করে বিক্রি করেন। ২০ লাখ টাকা খরচ বাদে এ বাগান থেকে তিনি ১ কোটি টাকার উপরে লাভ হবে বলে আশা করেন। এই জমিতে তিনি আগে পেয়ারার চাষ করতেন। এ বছর তিনি কুলের চাষ শুরু করেন। তিনি বলেন, পেয়ারার চাষে একবারই ভালো ফলন হয় কিন্তু কাশ্মিরী কুল চাষে কযেকবার ভালো ফলন পাওয়া যায়। আবার এতে বিষ প্রয়োগ কম করা লাগে। পোকার উপদ্রব কম হয়। ফলন বেশি, খেতে সুস্বাদু। তাছাড়া পরিচর্যাও সহজ।
কুল বাগানে কর্মরত বিপ্লব আলী বলেন এ রকম বাগানে কাজ করে তিনি বেশ খুশি। বেতনও ভালো পান। বিপদের সময় অতিরিক্ত অর্থের চাহিদা থাকলে তিনি তা পান।
পাইকারী ফল বিক্রেতা মাসুদুল ইসলাম শিপন বলেন কাশ্মিরী কুল স্বাদে মিষ্টি, আকারে বড় ও দেখতে সুন্দর হওয়ায় ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য বাজারে এর চাহিদা বেশি হওয়ায় অন্যান্য কুলের চেয়ে এর বিক্রি বেশি। লাভও বেশি।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, হর্টিকালচারের সাথে সংযুক্ত করে নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফল চাষিদের কুল চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করে থাকে। তাছাড়াও ফল চাষে আগ্রহী করার জন্যে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মটিভেশনাল ট্যুরের ব্যবস্থা করা হয়। কিছুদিন আগে বাগাতিপাড়া ও লালপুরের ৩০ জন ফল চাষিদের নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া ও ঈশ্বরদীতে এরকম মটিভেশনাল ট্যুর দেয়া হয়েছে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে জানা যায় এ বছর জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে নাটোর সদরে ২৩ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৮ হেক্টর, সিংড়ায় ৩৫ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৪৫ হেক্টর, বড়াইগ্রামে ২০ হেক্টর, লালপুরে ৭০ হেক্টর ও বাগাতিপাড়ায় ৪ হেক্টর মোট ২০৫ হেক্টর জমিতে কাশ্মিরী ও বল সুন্দরী কুল চাষ হয়েছে যার আর্থিকমূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন